ভারতে পালানোর সময় ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য ইসহাক আলী খান পান্নার মৃত্যুর খবর নিয়ে বেশ কয়েক দিন চলছিল নানা রহস্য। কিভাবে তাঁর মৃত্যু হয়েছে, এ নিয়ে চলছিল নানা আলোচনা। তবে এবার ইসহাক আলী খান পান্নার লাশ উদ্ধারের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেছে ভারতের মেঘালয় পুলিশ।
গত বৃহস্পতিবার মেঘালয় পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৬ আগস্ট পূর্ব জৈন্তিয়া পাহাড়ের দোনা ভোই গ্রামের একটি সুপারিবাগান থেকে পান্নার অর্ধগলিত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
ওই এলাকাটি বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে।
পুলিশের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানায়, মৃতদেহের সঙ্গে পাওয়া পাসপোর্ট থেকে পান্নার পরিচয় শনাক্ত করা হয়। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে তাঁর মৃত্যুর কারণ হিসেবে শ্বাসরোধের কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁর শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্নও রয়েছে।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে তাঁর কপাল ছুলে যাওয়ায় ক্ষতচিহ্নের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। পান্নার মৃতদেহ ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
ইউনাইটেড নিউজ অব ইন্ডিয়া (ইউএনআই) জানায়, পান্নার কাছে প্রায় দুই কোটি ডলার ছিল বলে তাঁর স্বজনরা দাবি করেছে। তবে মৃতদেহ উদ্ধারের সময় কোনো মুদ্রা পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পূর্ব জৈন্তিয়া পাহাড় জেলা পুলিশ।
তারা বলছে, অর্থকড়ির বিষয়ে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। তারা যখন লাশ উদ্ধার করে, তখন বাংলাদেশি পাসপোর্ট ও স্মার্টওয়াচ ছাড়া আর কিছু পাওয়া যায়নি। বর্তমানে পান্নার মৃতদেহ খেইহরিয়াত সিভিল হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
লাশ আনতে এখনো কেউ যোগাযোগ করেনি জানিয়ে পুলিশ জানায়, ‘মৃতদেহ পেতে হলে পান্নার পরিবারের সদস্যদের মেঘালয় সরকারের কাছে আবেদন করতে হবে। তখন কূটনৈতিক চ্যানেলে লাশ হস্তান্তর করা যাবে।
পান্নার পরিবারের একজন সদস্য ইউএনআইকে জানান, মৃতদেহ বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে এরই মধ্যে তাঁরা ভারতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
মেঘালয় পুলিশ পান্নার লাশ ২৬ আগস্ট উদ্ধারের কথা জানালেও তাঁর ভাগ্নে লাইকুজ্জামান তালুকদার মিন্টু ২৪ আগস্ট দাবি করেছিলেন—তাঁর মামার সঙ্গে থাকা অন্যরা জানিয়েছেন, ওই দিন সকালে শিলংয়ে একটি পাহাড় থেকে পা পিছলে পড়ে মারা গেছেন তাঁর মামা।
পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার বাসিন্দা ইসহাক আলী খান পান্না ১৯৯৪ সালে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১২ সালে আওয়ামী লীগের সম্মেলনের পর তিনি দলের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহসম্পাদক হন। পান্নার স্ত্রী আইরীন পারভীন বাঁধন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০১৬ সালে মারা যান। আইরিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শামসুন্নাহার হলের ভিপি ছিলেন। এই দম্পতির ইফতেশাম আফতারি আরিয়ান নামের একটি ছেলে রয়েছে।