Wednesday , 24 April 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
করোনার সংক্রমণ রোধে এখনই  লকডাউনের কথা ভাবছে না সরকার

করোনার সংক্রমণ রোধে এখনই লকডাউনের কথা ভাবছে না সরকার

অনলাইন ডেস্কঃ

দেশের অর্থনীতি সচল রেখে করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলার প্রস্তুতি নিতে যাচ্ছে সরকার। এজন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে কর্মপরিকল্পনা চুড়ান্ত করার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। করোনার সংক্রমণ রোধে লকডাউনের কথা ভাবছে না সরকার।

শীতকালে করোনার দ্বিতীয় সংক্রমণের আশঙ্কা নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এসব তথ্য জানান। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে বিকাল ৪টায় মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে শুরু হওয়া বৈঠক সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলে।

বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগের সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, তথ্য সচিব, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সচিবরা অংশ নেন। এতে সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাহফুজুর রহমান, পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনার সংক্রমণ রোধে আর লকডাউনের কথা ভাবছে না সরকার। তবে আসন্ন শীতে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় পর্যায় (সেকেন্ড ওয়েভ) শুরুর আশঙ্কা সামনে রেখে কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হচ্ছে। মূলত অর্থনীতি সচল রেখে দ্বিতীয় ধাক্কা সামলানোর পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, করোনার দ্বিতীয় পর্যায় মোকাবেলার প্রস্তুতি নেয়া হবে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা স্বাস্থ্যগত দিকটি দেখবেন এবং করোনা চিকিৎসার প্রস্তুতি নেবেন। শীতের সময় অ্যাজমা, নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা বেশি থাকে, তাই এসব ব্যাপারে সবাইকে সচেতন করা এবং চিকিৎসার প্রস্তুতি নেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, সবাই যাতে মাস্ক পরে, দূরত্বটা বজায় রাখে এবং স্বাস্থ্য নির্দেশিকা মেনে চলে সে ব্যাপারে ব্যাপক প্রচারাভিযান চালানো হবে। মাঠ প্রশাসন, স্থানীয় সরকার, পুলিশ, সেনাবাহিনী কীভাবে কাজ করবে সেই প্রস্তুতি নেয়া হবে।

বাইরে থেকে অনেক লোক আসছে আবার অনেকে বাইরে যাচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব আনোয়ারুল বলেন, বাইরে থেকে যাতে আর কেউ ভাইরাস না নিয়ে আসে এ ব্যাপারে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিমানবন্দরে সশস্ত্র বাহিনীর বড় টিম আছে, তারা দেখাশোনা করছেন। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা কর্মপরিকল্পনা করে সবাইকে জানিয়ে দেব। সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, পিআইডি, তথ্য মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহায়তায় মসজিদের মাধ্যমে মানুষকে আরও সচেতন করা হবে। স্বাস্থ্য বিভাগের ইউনিয়ন পর্যায়ের কর্মচারী এ বিষয়ে কাজ করবেন। গণমাধ্যমেরও একটা বড় ভূমিকা আছে। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে অভিযান বাড়ানো হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরিস্থিতির ওপর সবকিছু নির্ভর করবে। আমাদের মূল কথা, আমরা অর্থনীতিকে সচল রাখব ইনশাআল্লাহ।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রসঙ্গে সচিব আনোয়ারুল বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। প্রতিটি মন্ত্রণালয়কেও দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। অফিস কীভাবে চালাবেন তারা সেই ব্যবস্থা নেবেন।

বিদেশ ফেরত যাত্রীদের প্রবেশের বিষয়ে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, বেসামরিক প্রশাসন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় আমরা যৌথভাবে কাজ করছি। বিমানবন্দর এবং বিভিন্ন প্রবেশপথে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের লোকজন থাকেন। বিদেশ ফেরত অনেকে কোভিড-১৯ ফ্রি সার্টিফিকেট নিয়ে আসেন। কিন্তু যারা কোভিড ফ্রি সার্টিফিকেট নিয়ে আসেন না, তারাও কতদিন সেখানে হোম কোয়ারেন্টিনে ছিলেন সেই সার্টিফিকেট নিয়ে আসেন। কিন্তু যাদের এ রকম কোনো সার্টিফিকেট থাকে না তাদের আমরা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখি। ঢাকায় দিয়াবাড়ী ও হাজী ক্যাম্পে কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা আছে।

তিনি আরও বলেন, করোনা যখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে ছিল তখন সাড়ে তিন হাজারের মতো প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের ধারণ ক্ষমতা ছিল। কিন্তু সে সময় দেড় হাজারের ওপরে ওঠেনি। এজন্য আমরা ধারণ ক্ষমতা কমিয়ে ২ হাজারের মতো রেখেছি। এতে আমাদের সাশ্রয় হচ্ছে। যদি পরিস্থিতি খারাপের দিকে যায় তাহলে আমরা কোয়ারেন্টিনের সুবিধা আবার সাড়ে ৩ হাজারে নিয়ে যাব। বিদেশ ফেরত যারা করোনামুক্ত ও ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকার সনদ নিয়ে আসবেন, তাদের কোয়ারেন্টিনে নিতে হয় না বলেও জানান মাহফুজুর রহমান।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply