Friday , 29 March 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
কিছু লোকের মুনাফেকি সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের-প্রধানমন্ত্রী
--ফাইল ছবি

কিছু লোকের মুনাফেকি সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের-প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক:

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যারা স্বাধীনতা চায়নি, যারা বিজয় চায়নি, তারাই নির্মমভাবে তাঁকে হত্যা করে। কিছু লোক তো বেইমানিও করে, মুনাফেকিও করে। এটাই হচ্ছে আমাদের জন্য সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের।’ তিনি গতকাল মঙ্গলবার ‘শোক থেকে শক্তি, শোক থেকে জাগরণ’ শীর্ষক এক আলোচনাসভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি এই আলোচনাসভার আয়োজন করে। গতকাল সন্ধ্যায় বিটিভি অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করে।

আলোচনাসভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বক্তব্য দেন। আলোচনাসভা সঞ্চালনা করেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ যারা সারাটা জীবন শোষণ-বঞ্চনার শিকার, যারা নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার, তাদের মুক্তির জন্যই জাতির পিতা তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছেন। পরাধীনতার নাগপাশ থেকে মুক্তি দিয়ে একটা উন্নত জীবন যেন তারা পায় সেটাই জাতির পিতার একমাত্র লক্ষ্য ছিল। তিনি চেয়েছিলেন এ দেশের ক্ষুধা-দারিদ্র্যপীড়িত নারী, যাদের পরনে ছিন্ন কাপড়, যারা চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত, যারা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত, তাদের জীবনটাকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে।’

তিনি বলেন, ‘তিনি নিজের জীবনে কিছু চাননি। নিজের জীবন তিনি উৎসর্গ করেছিলেন মানুষের মুক্তির সংগ্রামে। এই সংগ্রাম করতে গিয়ে বছরের পর বছর তাঁকে কারাগারে থাকতে হয়। জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো তিনি কাটিয়েছিলেন কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্ঠে। বারবার তাঁকে হত্যার চেষ্টা করা হয়।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ তিনি গড়ে তুলছিলেন। মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় তিনি হাতে পেয়েছেন। এত স্বল্প সময়ের মধ্যে একটা বিধ্বস্ত দেশকে যেমন গড়ে তোলা, পাশাপাশি অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য কাজ করা—তিনি সেটা সফলভাবে করেছিলেন। বাংলাদেশকে তিনি স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত করেছিলেন। অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়ে তিনি যে কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন, সেটা যদি তিনি বাস্তবায়ন করে যেতে পারতেন, তাহলে বাংলার মানুষ অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে পারত। ক্ষুধা-দারিদ্র্য থেকে উন্নত জীবন পেতে পারত। কিন্তু ঘাতকের দল সেটা হতে দেয়নি।’

বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করাটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য ছিল। দীর্ঘ ২১ বছর পর সরকার গঠনের সুযোগ পেলাম। তার পর থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নে আমি জাতির পিতার আদর্শই অনুসরণ করেছি। বাংলাদেশকে জাতির পিতা স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে রেখে গিয়েছিলেন। আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আজকে সারা বিশ্বের কাছে উন্নয়নের বিস্ময়। জাতির পিতার আত্মত্যাগ বৃথা যেতে পারে না। তিনি এ দেশের মানুষের জন্য রক্ত দিয়ে গেছেন। আমাদের রক্তঋণে আবদ্ধ করে গেছেন। আমাদের একটাই লক্ষ্য—তাঁর এই রক্তের ঋণ আমাদের শোধ করতে হবে। বাংলাদেশকে জাতির পিতার ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। সেই প্রতিজ্ঞা নিয়ে, আদর্শ নিয়েই আমি পথ চলছি।’

তিনি বলেন, ‘আমি সব হারিয়েছি। হারানোর বেদনা খুব কষ্টকর। সেই কষ্ট সহ্য করে একটা লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি। সেই শোককে শক্তিতে পরিণত করে এ দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করাই আমাদের লক্ষ্য।’

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply