Friday , 19 April 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
কুষ্টিয়ায় আরও ১৭ জনের মৃ’ত্যু !! শনাক্ত-২৩২

কুষ্টিয়ায় আরও ১৭ জনের মৃ’ত্যু !! শনাক্ত-২৩২

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি !!!

 করোনা সংক্রমণের দিক থেকে দেশের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জেলার তালিকায় প্রথম কুষ্টিয়া। জুন মাসে পুরোটাই কুষ্টিয়ায় করোনা দাপট ছিল। অস্বাভাবিক হারে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ার কারণে কুষ্টিয়ায় আশঙ্কাজনক হারে করোনা সংক্রমণের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যু।  কুষ্টিয়ায় স্বাস্থ্যবিধি মানাতে টানা ২৬ দিন ধরে কঠোর বিধিনিষেধ বা লকডাউন চলমান থাকলেও করোনা পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি, বরং দিন দিন তা ভয়াবহ অবস্থার রূপ নিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ১০ জন ও উপসর্গ নিয়ে ৭ জন মারা গেছেন। মোট মৃত্যু ১৭ জন। নমুনা ৭৩৪ জন পরীক্ষায় আবারও ২৩২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) সকালে সাড়ে ১০টার দিকে  কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা.তাপস কুমার সরকার,এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গতকাল বুধবার (৭ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) সকাল ৮টা পর্যন্ত। 
জানা যায়,  গত ২৪ ঘণ্টায় কুষ্টিয়ায় ৭৩৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৩২ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ৬১ শতাংশ।গত ৭ দিনে কুষ্টিয়ায় ১ হাজার ৬১৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর এই ৭ দিনে ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে ১২৭ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়েছেন।
কুষ্টিয়ার করোনা ডেডিকেটেড ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবদুল মোমেন জানান, হাসপাতালটি ২৫০ শয্যার হলেও করোনা রোগীদের জন্য ২০০টি শয্যা ব্যবহার করা হচ্ছে। আর এই ২০০টি শয্যার বিপরীতে বর্তমানে করোনা পজিটিভ হয়ে ২০২ ও করোনার উপসর্গ নিয়ে ৮৭ জনসহ মোট ২৮৯ জন ভর্তি আছেন। অতিরিক্ত করোনা রোগীর চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন এখানকার চিকিৎসক ও সেবিকারা। তাঁরা নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও করোনা রোগীদের সর্বাত্মক সেবা দিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তাপস কুমার সরকার বলেন, করোনা ডেটিকেডেট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ছেই, ২শ’ বেডে করোনা ও এর উপসর্গ নিয়ে আইসোলেশনে আছেন ২৮৯ জন রোগী। এর মধ্যে ২০২ জন করোনা আক্রান্ত রোগী। প্রায় ৭০ শতাংশ রোগীদের অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে।
কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিনে হাসপাতালে গড়ে প্রতিদিন ৮-১০ জন করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে বর্তমান সময়ে সর্বোচ্চ শনাক্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড হচ্ছে। এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, জুনে করোনার দাপট বাড়বে, এমন একটা ধারণা পাওয়া গিয়েছিল। তবে এতটা হবে, সেটা কল্পনার বাইরে ছিল। মানুষকে সচেতন করা ছাড়া আর করোনা মোকাবিলার কোনো পথ নেই।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার  খাইরুল আলম বলেন, কঠোরভাবে লকডাউন বাস্তবায়ন করতে পুলিশ মাঠে তৎপর রয়েছে। জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের চেকপোস্টে তল্লাশি করা হচ্ছে। সবার কাছ থেকে লকডাউন কার্যকর করতে সহযোগিতা পাচ্ছি।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম জানান, এক সপ্তাহের জন্য কুষ্টিয়ায় চলমান লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ১৪ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত  বিধি নিষেধ বা লকডাউন চলবে। এ সময় ওষুধ, নিত্য প্রয়োজনীয় মুদি দোকান, কাঁচাবাজার ছাড়া বাকি সব ধরনের দোকান, শপিংমল বন্ধ থাকবে। একইসঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply