Thursday , 18 April 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
কুষ্টিয়ায় জেলা পরিষদ এর চেয়ারম্যান হাজি রবিউলের দখলে থাকা তিনটি জমি

কুষ্টিয়ায় জেলা পরিষদ এর চেয়ারম্যান হাজি রবিউলের দখলে থাকা তিনটি জমি

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ায় জেলা পরিষদ ও এর চেয়ারম্যান হাজি রবিউলের দখলে থাকা তিনটি জমি উদ্ধারে নোটিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে গড়াই তীরে জেলা প্রশাসনের ১৫ একর, হাউজিংয়ে গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ২ একর এবং লাহিনী এলাকায় সড়ক ও জনপথের প্রায় ৫ শতক জমি তিনি জবর দখল করে ভোগ করছেন। ইতিমধ্যে সড়ক ওজনপথ থেকে আগামী ১০দিনের মধ্যে দখলকৃত জমি থেকে সকল প্রকার স্থাপনা সরিয়ে নেয়া নোটিশ দেয়া হয়েছে। পাশপাশি জেলা প্রশাসন থেকে দখলকৃত জমি থেকে স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার নির্দেশনা জারি করা হচ্ছে। একই সাথে আদালতে মামলা থাকায় হাউজিং এলাকায় গৃহায়নের ২ একর জমিতে চলা উন্নয়ন কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন্ সুত্র জানায়, বড় বাজার এলাকায় গড়াই নদীর তীরে জেলা প্রশাসনের অধীনে থাকা ১৫ একর জমি জেলা পরিষদ দখল করে কোন অনুমতি না নিয়ে পার্ক নির্মাণ কাজ করছে। গত ৫ বছর ধরে চলে আসছে পার্কের কাজ। দখলকৃত নদীল জায়গায় সরকারি অর্থে পার্কের বেশ কিছূ কাজ ইতিমধ্যে শেষ করা হয়েছে। এদিকে জেলা প্রশাসন থেকে গত আগষ্ট মাসে সরেজমিন পরিদর্শন করে ভ’মি অফিসের সার্ভেয়ার প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর সহকারি কমিশনার (ভ’মি) কর্মকর্তা একটি প্রতিবেদন দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বারবার। গত কয়েকদিন আগে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুবায়ের হোসেন চৌধুরী অবৈধ দখল ও উচ্ছেদের বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে জেলা প্রশাসন বরাবর পত্র দিয়েছে। পত্রে দলকৃত জমি উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তিনি জেলা প্রশাসকে অনুরোধ করেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুবায়ের হোসেন চৌধুরী বলেন,‘ জেলা প্রশাসনের ১৫ একর জায়গার ওপর পার্কের কাজ করছে জেলা পরিষদ। তবে এ জন্য কোন অনুমোদন নেয়। এ কারনে নদীর জায়গা দখল করার জন্য তাদের নোটিশ করা হবে। এ জন্য প্রকিয়া চলমান রয়েছে।’
এদিকে শহরতলির লাহিনী এলাকায় কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে লানিহী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রচীর থেকে শুরু করে একেবারে মহাসড়েকর গা ঘেঁষে প্রায় দুই বিঘা জমিতে শক্ত প্রচীল দিয়ে রেখেছেন হাজি রবিউল ইসলাম।
জানা গেছে, তিনি এখানে মাত্র ৪ কাঠা জমি কিনে তার কয়েকজন বেশি জমি দখল করে রেখেছেন। এ জমির মদ্যে সড়ক ও জনপথের প্রায় ৫ শতক জমি রয়েছে। বাকি জমি অন্য দপ্তরের। বাজারের কিছূ জমিও রয়েছে দখলের মধ্যে।
এদিকে সড়ক ও জনপথ অফিস থেকে রোববার সকালে লাল চিহৃ দিয়ে মার্ক করে দেয়া হয়। পাশাপাশি হাজি রবিউল ইসলামকে নোটিশ করা হয়েছে। ১০ কার্যদিবসের মধ্যে নিজ উদ্যোগে স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়ে নোটিশ জারি করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে সরিয়ে না নেয়া হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। দখরকৃত জমিতে গাছ লাগানো হয়েছে। সামনের দিকে বড় একটি গেইট নির্মাণ করা হয়েছে।’
একই স্থানের ঠিক পাশেই মেডিকেল কলেজের পুর্ব অংশে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের প্রায় ২ একরের বেশি জায়গা দখল করে রেখেছে জেলা পরিষদ। গৃহায়ন কতৃপক্ষের এ জমি ভুমিন্ত্রণালয় অধিগ্রহণ করেন। এ জমি জেলা প্রশাসেকর অনুকুলে চলে যায়। জেলা প্রশাসনের দপ্তর থেকে জেলা পরিষদকে এ জমি বন্দোবাস্ত দেয়াসহ ব্যবহারের কোন প্রকার অনুমতি না দেয়া হলেও সেখানে ১০০০ বিশিষ্ট আসনের একটি অডিটরিয়ামের কাজ করছে তারা। ইতিমধ্যে একতলার ছাদের ঢালায় দেয়া হয়েছে।
গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ এখানে প্রায় ২ শতাধিক প্লট করে আগেই লটারি করে। এতে প্লট পান অংশগ্রহণকারীরা। এরপর তাদের না জানিয়ে ভূমি মন্ত্রনালয় এ জমি রিজুম করে। এরপর প্লট মালিকরা উচ্চ আদালতে রিট করেন। এরপর আদালত থেকে গ্রহাকদের পক্ষে রায় দিয়ে সকল প্রকাজ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। এরপর জেলা প্রশাসন থেকে কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়।
গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ কুষ্টিয়া কার্যালয়ের উপ প্রকৌশলী তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ওই জমিতে উচ্চ আদালতে মামলা করেছে কয়েকজন জমির মালিক। এরপরও জেলা পরিষদ তাদের কাজ অব্যহত রেখেছিল। জেলা পরিষদ তাদের নামে জমি অধিগ্রহণের আগেই জমি প্লট আকারে লটারী করা হয়েছিল। জেলা পরিষদের নামে জমি অধিগ্রহণ হয়েছে কিনা সেটা জানা নাই।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তানিমুল ইসলাম বলেন, অবৈধভাবে সড়কের জায়গা দখল করে ঘিরে রাখা হয়েছে। এপারে রোববার সকালে সেখানে লাল কালি দিয়ে মার্ক করে দেওয়া হয়েছে। হাজী রবিউল ইসলামের কাছে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে নিজ দায়িত্বে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে ফেলার জন্য। তা না হলে ম্যাজিষ্ট্রেটের উপস্থিতিতে ভেঙে ফেলা হবে।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুবায়ের হোসেন চৌধুরী বলেন, পার্কের পুরো ৪৫ বিঘা জায়গায় গড়াই নদের। জেলা প্রশাসন থেকে জেলা পরিষদ কোন রকম বন্দোবস্ত না নিয়েই অবৈধভাবে পার্ক নির্মাণ করছে। এজন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে। যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে স্থাপনা ভেঙে ফেলা হবে।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply