Tuesday , 10 December 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মগোপনে, অবশেষে ধরা

কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মগোপনে, অবশেষে ধরা

অনলাইন ডেস্ক:

কুষ্টিয়ায় মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কম্পানি খুলে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে তিন মাদরাসা শিক্ষকসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গত শুক্রবার রাতে কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ এবং ঢাকার মিরপুর থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল শনিবার সকাল ১১টার দিকে র‌্যাব-১২ কুষ্টিয়া ইউনিটের কম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মো. ইলিয়াস খান সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান।

গ্রেপ্তার আটজন হলেন এমএলএম কম্পানি সানরাইজ বিজনেস সার্ভিস লিমিটেডের (এসবিএসএল) চেয়ারম্যান ঝিনাইদহের শৈলকুপা থানার চর আউশিয়া গ্রামের মনিরুল ইসলামের ছেলে মো. সাজ্জাদ হোসেন (২৯), কম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ঝিনাইদহের মহেশপুর পদ্মপুকুর গ্রামের আব্দুল গফুরের ছেলে মহসিন আলী (৩১), পরিচালক (অর্থ) কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার গোবরা গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে মো. ইমরান হোসেন (২৮), কম্পানির কর্মী কুমারখালীর বেতবাড়িয়া গ্রামের জলিল বিশ্বাসের ছেলে মো. হাসান আলী (২৮), মহেন্দ্রপুর গ্রামের মৃত আমজাদ হোসেনের ছেলে মো. আব্দুল হান্নান (৪৩), ওয়াশি গ্রামের মৃত লিয়াকত আলীর ছেলে মো. মোস্তফা রাশেদ পান্না (৪৭), বাঁশগ্রামের আলাউদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে মো. আইয়ুব আলী (২৮) এবং বহলবাড়িয়া এলাকার আলতাফ শেখের ছেলে মো. হাফিজুর রহমান (২৮)।

বাড়ি থেকে তুলে নেওয়া পাঁচজন

গ্রেপ্তার আটজনের মধ্যে গত বুধবার রাতে কুমারখালী থেকে তিন মাদরাসা শিক্ষকসহ নিখোঁজ পাঁচজনও রয়েছেন। তাঁরা হলেন হাসান আলী, আব্দুল হান্নান, রাশেদ পান্না, আইয়ুব আলী ও হাফিজুর রহমান। শেষোক্ত তিনজন মাদরাসার শিক্ষক। বুধবার রাতে কুমারখালী থেকে এই পাঁচজনকে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিচয়ে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের খোঁজ না পেয়ে বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী দুটি পরিবার কুমারখালী থানায় এ ব্যাপারে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে।

র‌্যাব জানায়, প্রতারকচক্রটি কুষ্টিয়ায় এসবিএসএল নামের একটি এমএলএম কম্পানি খোলে। এরপর দীর্ঘদিন ধরে গ্রাহকদের বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যায়। কম্পানিটির ফাঁদে পড়ে প্রায় ৩০০ পরিবার সর্বস্বান্ত হয়েছে। কম্পানিটি কুষ্টিয়া ছাড়াও ঝিনাইদহ, মাগুরা, যশোর, খুলনা, চুয়াডাঙ্গা, পাবনা ও রাজশাহী জেলা পর্যন্ত তাদের প্রতারণার ‘জাল’ ফেলে।

যেভাবে প্রতারণা

সানরাইজ বিজনেস সার্ভিস লিমিটেড বা এসবিএসএল নিজস্ব ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করে গ্রাহকদের বিভিন্নভাবে প্রলুব্ধ করে এক হাজার ২০০ টাকা দিয়ে কম্পানির আইডি খুলতে বলত। প্রতি আইডি থেকে প্রতিদিন ১০ টাকা এবং আইডি বাবদ দেওয়া এক হাজার ২০০ টাকার সমমূল্যের পণ্য দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হতো। শুরুর দিকে কিছু গ্রাহক টাকা ও পণ্য পাওয়ার কারণে অনেকেই আইডি খুলতে উৎসাহিত হয়েছিল। একসময় গ্রাহকদের লভ্যাংশের টাকা না দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মগোপনে চলে যায় চক্রটি।

এ বিষয়ে একজন ভুক্তভোগী গত শুক্রবার কম্পানিটির চেয়ারম্যানসহ একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে কুমারখালী থানায় মামলা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় সিপিসি-১, কুষ্টিয়া ক্যাম্প র‌্যাব-১২-এর একটি দল র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার সহায়তায় শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে কম্পানিটির পাঁচজন সদস্য এবং পরে তাঁদের দেওয়া তথ্যে আরো তিনজনকে ঝিনাইদহ এবং ঢাকার মিরপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাব আরো জানায়, গ্রেপ্তার আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। এসবিএসএল কম্পানির বিরুদ্ধে কুষ্টিয়ার মিরপুর ও কুমারখালী থানায় দুটি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া কম্পানিটির চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেনের বিরুদ্ধে দুটি চেক জালিয়াতির মামলা, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহসিন আলীর বিরুদ্ধে একটি চেক জালিয়াতি ও পাঁচটি স্ট্যাম্প জালিয়াতির মামলা এবং পরিচালক (অর্থ) ইমরান হোসেনের বিরুদ্ধে দুটি চেক জালিয়াতির মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

সূত্র: কালের কন্ঠ অনলাইন

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply