Tuesday , 10 December 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
চাকরি দেওয়ার নামে কোটি টাকা হাতিয়ে নেন তারা
--সংগৃহীত ছবি

চাকরি দেওয়ার নামে কোটি টাকা হাতিয়ে নেন তারা

অনলাইন ডেস্কঃ

চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে প্রায় এক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে প্রতারকচক্রের চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গত দুই দিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দিয়েছেন র‌্যাব-১০-এর পরিচালক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দীন।

গ্রেপ্তার করা চারজন হলেন চক্রের মূলহোতা ও হোমিওপ্যাথি ওষুধ বিক্রেতা এম এ হক আলম ফরহাদী, মেহেরাব হোসেন, মো. রাসেল হোসাইন  ও শাহাদাত হোসেন।

অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দীন জানান, রাজধানীর ভাটারায় ‘সুসিং টাওয়ার’ ভবনে অল নিপ্পন এয়ারওয়েজ কম্পানি লিমিটেড (এএনএ) নামের বিদেশি বিমান সংস্থার জাঁকজমকপূর্ণ অফিসের ঠিকানা ব্যবহার করে প্রতারণার ফাঁদ পাতেন চক্রের সদস্যরা। এঁরা পত্রিকায় এএনএ নামের বিমান সংস্থার এয়ার হোস্টেজসহ বিভিন্ন পদে লোভনীয় বেতনে চাকরির বিজ্ঞাপন দেন।

পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে অন্তত ২০০ জন চাকরিপ্রার্থী এতে আবেদন করে জানিয়ে র‌্যাব-১০-এর পরিচালক বলেন, এর মধ্যে বাছাই করে ১৭০ জনকে চাকরির ইন্টারভিউর জন্য ডাকা হয়।

প্রতারকচক্রটি মাত্র এক মাসে শুধু ইন্টারভিউর নামে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে জানিয়ে ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দীন বলেন, চক্রের টার্গেট ছিল আগামী ছয় মাস চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে ইন্টারভিউ ও প্রশিক্ষণের নামে অন্তত ৩০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া। পাশাপাশি ভাটারায় ড্রাগমা ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে স্বাস্থ্য পরীক্ষার কথা বলে টাকা আদায়ের চুক্তি করে তারা।

এভাবে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল চক্রটি।

র‌্যাব-১০-এর পরিচালক বলেন, প্রতারকচক্রের মূলহোতা আলম ফরহাদী সামান্য পড়াশোনা করে ফেনীতে নিজ এলাকায় হোমিওপেথি ওষুধ বিক্রি করতেন। পরবর্তী সময়ে ঢাকায় এসে অল্প সময়ে বেশি টাকা আয় করতে বিভিন্ন প্রতারণার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। প্রতারণা করতে গিয়ে নিজেকে বিসিএস শিক্ষা কর্মকর্তা অথবা দুদক কর্মকর্তা পরিচয় দিতেন।

ভুক্তভোগী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে বিভ্রান্ত করতে তাঁর তিন সন্তান সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলে পরিচয় দিতেন।

অতিরিক্ত ডিআইজি ফরিদ উদ্দীন বলেন, গ্রেপ্তার আলম ফরহাদী র‌্যাবের কাছেও ১৮-১৯ বছর ধরে দুদকের কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন বলে পরিচয় দেন। যদিও যাচাই-বাছাইয়ে দেখা যায় তিনি সরকারি কোনো পদেই নেই। ফরহাদীর বিরুদ্ধে রাজধানীর গুলশান থানায় প্রতারণা ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে দুটি মামলা রয়েছে।

গ্রেপ্তার মেহেরাব হোসেন সম্পর্কে এই র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। চাকরির খোঁজ করতে ফরহাদীর সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে মোটা অঙ্কের বেতনের প্রলোভনে এই চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। প্রতিষ্ঠানটির কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন মেহেরাব।

গ্রেপ্তার শাহাদাত হোসেন পড়ালেখা শেষ করে বেকার ছিলেন। এর আগে কয়েক মাস একটি এয়ার টিকিটিং কম্পানিতে চাকরি করেছেন। সহকর্মীর মাধ্যমে ফরহাদীর সঙ্গে পরিচয় হলে চক্রে যোগ দিয়ে রিজার্ভেশন অফিসার হিসেবে কাজ শুরু করেন।

গ্রেপ্তার রাসেল হোসাইন পড়াশোনা শেষে চাকরি খুঁজতে গিয়ে ফরহাদীর সঙ্গে পরিচয়। পরবর্তী সময় ফরহাদীর নতুন অফিসের অফিস সহায়ক হিসেবে কাজ শুরু করেন।

র‌্যাব সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply