বিশ্ববাজারে চালের দাম গত এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ। ফলে চালের বিকল্প খাদ্য হিসেবে গম আমদানি বাড়িয়েছে সরকার। একই সঙ্গে গত বছরের তুলনায় বেসরকারিভাবে গম আমদানি বেড়েছে প্রায় ২১ শতাংশ। সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচিতে চালের পরিবর্তে গম বিতরণের পরিকল্পনাও নিয়েছে সরকার।
খাদ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) বদরুল হাসান বলেন, বিশ্ববাজারে এখন চালের দাম অনেক বেশি। আর গমের দাম সে তুলনায় অনেক কম। এ জন্য শুধু সরকারিভাবে গম আমদানি বাড়ানোর উদ্যোগ নিলে হবে না। বরং বেসরকারি খাতকে বেশি উৎসাহিত ও তদারকি করতে হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে টেন্ডারের মাধমে গম কেনা দরকার। একাধিক সোর্স থেকে গম কিনলে তুলনামূলক কম দামে কেনা যাবে। দেশে উৎপাদন বাড়াতে পারলে আরো বেশি ভালো হবে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, দেশে অল্প কয়েকটি প্রতিষ্ঠান গম আমদানি করে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহযোগিতা করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সব ব্যাংকে নির্দেশনা দেওয়া আছে। তারা আরো সহযোগিতা চাইলে করা হবে।
সচিব বলেন, ‘সরকারিভাবে এবার একটু বেশি আমদানি করা হচ্ছে, তার উদ্দেশ্য এই নয় যে বাজারে ব্যাপক চাহিদা। বরং চালের মূল্য বিশ্ববাজারে অনেক বেশি, গমের দাম কম। এ কারণে আমরা এবার দুই-তিন লাখ টন গম বেশি আমদানি করছি।’
এসিআই মোটরস লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এফ এইচ আনসারী বলেন, ‘বাজারে চাহিদা তৈরি হলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো গম আনতে পারবে। কারণ, দেশে বড় কম্পানিগুলো গম আমদানি করে।’
চালের পরিবর্তে গম বিতরণের পরিকল্পনা
সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচিতে চালের পরিবর্তে গম বিতরণের পরিকল্পনাও নিয়েছে সরকার। গতকাল এফপিএমসি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এখন ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী অর্থবছর থেকে গম আমদানি করবে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘বিশ্ববাজারে পরিবহন খরচ ছাড়া প্রতি কেজি চালের দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা। তাই সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচিতে চালের পরিবর্তে গম বা আটা দেওয়া যায় কি না সে বিষয়ে এফপিএমসির সভায় আলোচনা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো সিদ্ধান্ত নিলে খাদ্য মন্ত্রণালয় আগামী অর্থবছর থেকে ব্যবস্থা নেবে।’