অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী জানিয়েছেন, শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ ডিগ্রি কলেজের নাম পরিবর্তন হচ্ছে না। সোমবার বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড একাউন্ট থেকে স্ট্যাটাস দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি। শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার এই বিষয়ে সংস্কৃতি উপদেষ্টাকে নিশ্চিত করেছেন বলে উল্লেখ করেছেন ফারুকী।
ফেসবুকে সংস্কৃতি উপদেষ্টা লিখেছেন,‘গত কয়দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাজউদ্দিন আহমদ কলেজের নাম পরিবর্তন বিষয়ে আমাকে ট্যাগ করে পোস্ট দিয়েছেন, যদিও এটা আমার মন্ত্রণালয়ের বিষয় না।
মন্ত্রণালয়ের কাজে ট্যুরে থাকায় এই বিষয়ে মনোযোগ দিতে পারি নাই। আজ শিক্ষা উপদেষ্টা আবরার ভাইয়ের সাথে এই বিষয়ে কথা বলার সুযোগ হয়। তিনি স্পষ্ট বলেছেন, তাজউদ্দিন আহমদ ডিগ্রী কলেজের নাম পরিবর্তন না করার জন্য ইতিমধ্যেই নির্দেশনা দিয়েছেন। এটা প্রক্রিয়াধীন।দেশের ৩৭ জেলার ৬৮টি সরকারি কলেজের নাম পরিবর্তন করে গত বুধবার প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। প্রজ্ঞাপনে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় অবস্থিত সরকারি শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ ডিগ্রি কলেজের নামও রয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নতুন নাম দেওয়া হয় ‘কাপাসিয়া সরকারি ডিগ্রি কলেজ’। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নাম বদলের প্রতিবাদ করেছেন তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে ও সাবেক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজসহ অনেকে।
গত বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক দীর্ঘ পোস্টে কলেজটির নাম পরিবর্তন করায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান সোহেল তাজ। তিনি লিখেন, ‘আজ ৬৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সে তালিকার ৩৬ নম্বর কলেজের নামটি ‘সরকারি শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ ডিগ্রি কলেজ’, এই নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম ঠিক করা হয়েছে, কাপাসিয়া সরকারি ডিগ্রি কলেজ।’
এরই প্রেক্ষাপটে সোমবার সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
মুক্তিযুদ্ধের নায়কদের ব্যাপারে আমাদের শ্রদ্ধাও সেইরকমই। মুক্তিযুদ্ধ এবং জুলাই কোনো বিপরীতধর্মী বিষয় না। যে গণতান্ত্রিক, জুলুমহীন, সার্বভৌম বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিলো সেটা বাস্তবায়ন হয় নাই বলেই জুলাই এসেছিলো এই বাংলাদেশে।’
মুক্তিযুদ্ধ আর জুলাইকে যারা মুখোমুখি দাঁড় করাতে চায় তাদের উদ্দেশ্য মুক্তিযুদ্ধের আড়াল নিয়ে ১৬ বছরের অপকর্ম ঢাকা বলেও মন্তব্য করেন ফারুকী। তিনি বলেন,‘কিন্তু সত্য হলো এই- মুক্তিযুদ্ধের চাদরে ঢাকা যাবে না গুমের শিকার শত শত পরিবারের আহাজারি, বিডিআর কার্নেজ, ব্যাংক লুট, ভোট গুম, আর হাজারে হাজার সরকারী খুন।’