নোয়াখালী প্রতিনিধি:
২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল নতুন ভবন দ্রুত নির্মাণ, রোগিদের দুর্ভোগ ও অব্যবস্থাপনা নিরসনের দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে জেলা শহর মাইজদীর টাউন হল মোড়ে নাগরিক অধিকার আন্দোলন নোয়াখালী মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করে।
সমাবেশে বক্তাগণ বলেন, ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল জেলার প্রায় ৪০ লাখ মানুষের চিকিৎসাসেবার অন্যতম আশ্রয়স্থল। স্বচ্ছল পরিবারগুলো বেসরকারি হাসপাতালসমূহে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করলেও হত দরিদ্র মানুষের পক্ষে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নেয়া সম্ভব হয় না। কিন্তু সদর হাসপাতালে ওষুধ সংকট, পরিক্ষা-নীরিক্ষার যন্ত্রপাতি বিকল থাকা, ডাক্তার নার্সদের সেবা প্রদানে অনিহা, গত তিন বছর ধরে টিনশেডের খুপড়ি কক্ষে ও ফ্লোরেই গাদাগাদি করে সেবা নিতে হচ্ছে রোগিদের। লোকবল সংকটের কারণে হাসপাতালের অভ্যন্তর ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।বক্তারা বলেন, নামে ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল হলেও এখানে লোকবল রয়েছে দেড়শ শয্যার। যারা কর্মরত রয়েছেন তারাও আন্তরিকতার সঙ্গে সেবা দিচ্ছে না। রোগী ও স্বজনদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করছেন চিকিৎসক, নার্স ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারিরা। রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত ওষধ নেই, স্থান সংকুলান না হওয়ায় রোগীদেরকে ফ্লোরে থাকতে হচ্ছে, পুরো হাসপাতাল ময়লা-আবর্জনার বাগাড়ে পরিণত হয়েছে। জেলার প্রায় ৪০ লাখ মানুষের চিকিৎসাসেবার অন্যতম এ আশ্রয়স্থল এভাবে অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার মধ্যে যাচ্ছে। অথচ জনপ্রতিনিধি, জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য প্রশাসন দেখেও না দেখার মতো রয়েছে। আর সব দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। রোগীরা রোগিবন্ধব সেবা নিশ্চিত করতে সিন্ডিকেট ভাঙ্গার আহবান জানান ।
আমরা নাগরিক সমাজ মনে করি জেলা প্রশাসন, গণপূর্ত বিভাগ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রুত ভবন নির্মাণ কাজ শেষ করতে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করবে। একই সঙ্গে হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা নিরসন করে সুন্দর, পরিচ্ছন্ন পরিবেশে এবং আন্তরিকতার সঙ্গে সাধারণ মানুষকে সেবা দেবেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সংগঠনের আহবায়ক অ্যাডভোকেট কাউসার নিয়াজীর সভাপতিত্বে সদস্য সচিব জামাল হোসেন বিষাদের সঞ্চালনায় সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ তারকেশ্বর নান্টু, অ্যাডভোকেট আজিজুল হক বকশী, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মাসুদ কাইয়ুম, কবি ও গবেষক ম. পানাউল্যাহ, খুরশিদ আলম রাব্বানী প্রমূখ। এসসময় সংহতি জানিয়ে মানববন্ধন ও সমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, বিভিন্ন পেশাজীবী, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাইবার ওয়ারিয়র্স, প্রথম আলো বন্ধুসভা, নিরাপদ নোয়াখালী চাই, স্বেচ্ছাসেবী নোয়াখালী প্রতিনিধিরা অংশ নেন। এ বিষয়ে নোয়াখালী জেলা প্রশাসক, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ও ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে স্মারকলিপি দেয়া হবে বলে জানান আয়োজকরা।