প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণে আইন ও বিধি-বিধান সংস্কারে পাঁচ দফা সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)। সুপারিশে বলা হয়েছে, পলিথিনের ব্যবহার সীমিত করতে হলে পলিথিন ফ্রি দেওয়া বন্ধ করতে হবে। পণ্যের সঙ্গে পলিথিন চাইলে ক্রেতার কাছ থেকে বিনিময়ে মূল্য নিতে হবে। পলিথিনের ওপর কর আরোপ করতে হবে।
গতকাল শনিবার বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটে ‘পলিথিন প্লাস্টিকে বিপন্ন পরিবেশ : সংকট সমাধানে করণীয়’ শীর্ষক এক জাতীয় কর্মশালা শেষে এসব সুপারিশ করা হয়। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি ৩৫টি সংগঠনের সহযোগিতায় দিনব্যাপী কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বাপা সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদার। কর্মশালার বিশেষ প্রবন্ধ পাঠ করেন অধ্যাপক ড. এম ফিরোজ আহমেদ, অধ্যাপক ড. এম শহীদুল ইসলাম, প্রকৌশলী তানভীর হোসেন ও ড. মো. তারিক হোসেন। বাপার পলিথিন প্লাস্টিক ও বিপজ্জনক রাসায়নিক দূষণসংক্রান্ত কমিটির সদস্যসচিব হাসান ইউসুফ খানের সঞ্চালনায় কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য দেন বাপা সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর কবির।
সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাপা সহসভাপতি খুশী কবির।
কর্মশালার সুপারিশে বলা হয়, বাংলাদেশের পলিথিন নিষিদ্ধের ব্যাপারে যথেষ্ট আইন-কানুন আছে কিন্তু সেগুলো নির্দিষ্টকরণ করা হয়নি। ফলে প্যাকেজিং কম্পানিগুলো কোনো স্ট্যান্ডার্ড ফলো করছে না। প্যাকেজিং পরিবেশসম্মত হচ্ছে না।
পৃথিবীর অনেক দেশেই পলিথিনের ব্যাপারে কঠোর আইন আছে কিংবা বিশ্বের অনেক দেশেই পলিথিন নিয়ে যাওয়া যায় না। বাংলাদেশেও এমন অনেক আইন থাকলেও তা বাস্তবায়ন নেই, এটা বাস্তবায়ন জরুরি। পলিথিনের বিকল্প পণ্য বাজারে আনতে প্রচারণা বৃদ্ধি এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে পলিথিনের ক্ষতিকর প্রভাব ব্যাখ্যা করার পাশাপাশি এই কাজে তাদের সহযোগিতা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।
নিরাপদ বিকল্প পণ্যের বিষয়ে সুপারিশে বলা হয়, কাপড়ের ব্যাগ, পাটের ব্যাগ, কাগজের ব্যাগ, কলাগাছের সুতাসহ অন্যান্য পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। এসব পণ্য উত্পাদনে পর্যাপ্ত কাঁচামালের সরবরাহ থাকতে হবে।
এ ছাড়া প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন বিষয়ে বায়োব্যাসেড উদ্ভাবন, বাড়িতে বসেই কম্পোস্ট করে সার তৈরি এবং কিউআর কোড ব্যবহার করে প্রডাক্ট তৈরির সুপারিশ করা হয়।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, প্লাস্টিকদূষণ একটি বড় সমস্যা। ২০০২ সাল থেকে প্লাস্টিকদূষণ প্রতিরোধে আইন প্রণয়ন করা হলেও তা কার্যকর হয়নি। ফলে স্বাস্থ্যের পাশাপাশি অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে প্লাস্টিক। এ জন্য ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রীয়ভাবে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।