ক্ষমতার পালাবদলের পরও রাষ্ট্রীয় এয়ারলাইনস বিমানের সেবার মানে উন্নতি হয়নি। বরং অপেশাদারির কারণে যাত্রী ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। সাম্প্রতিক সময়েও বেশ কয়েকটি ঘটনা বিমানের সেবার মানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। অকারণে বিলম্বে যাত্রা, লাগেজ পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষাসহ বিনা নোটিশে যাত্রী ভোগান্তির সেই পুরনো চিত্র যেন।
আর বাংলাদেশের নাগরিক। এ জন্য বাংলাদেশ অ্যাম্বাসি আমাদের পাসপোর্টে ‘নো ভিসা রিকোয়ার্ড’ সিল মেরে দিয়েছে। এর অর্থ হলো দুবাই এবং বাংলাদেশ ভ্রমণে আমাদের কোনো ভিসা লাগবে না। আমাদের পাসপোর্টের মেয়াদ যত দিন আছে আমরা তত দিন যখন ইচ্ছা দুবাই-বাংলাদেশে ভ্রমণ করতে পারব। অথচ বিমান বাংলাদেশের কাউন্টারে এটা দেখার পরও এত দিন কেন দুবাইয়ে আছি ইত্যাদি প্রশ্ন করছিল।
ফ্লাইটটি ঢাকার হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে সাড়ে ৮টায় নামার কথা থাকলেও এসে পৌঁছায় সাড়ে ১০টায়। এরপর দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ইমিগ্রেশন করেন। অথচ অন্যান্য এয়ারলাইনসে বিজনেস ক্লাসের যাত্রীদের ইমিগ্রেশন, লাগেজ পাওয়াসহ সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয় সবার আগে।
তিনি আরো জানান, এই ফ্লাইটের যাত্রীরা সবচেয়ে বড় ধাক্কা খায় বাংলাদেশে ইমিগ্রেশন শেষ করার পর। কারণ ইমিগ্রেশন শেষ করার পর শতাধিক যাত্রীর লাগেজ উধাও হয়ে যায়। সবাই বেল্টের পাশে দাঁড়িয়ে থাকলেও কারো লাগেজ, কারো ব্যাগ, কারো কোনো কিছুই পাওয়া যাচ্ছিল না। এ নিয়ে সেখানে তুলকালাম বেধে যায়। যাত্রীদের চিল্লাচিল্লির প্রায় দুই ঘণ্টা পর লাগেজ বেল্টে তোলা হয়। তিনি নিজেও প্রায় দুই ঘণ্টা বেল্টের পাশে দাঁড়িয়ে থাকার পর লাগেজ পান বলে জানান।
এর আগে গত ২৯ অক্টোবর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের আবুধাবিগামী একটি বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে যাত্রীদের ৯ ঘণ্টা ভুগতে হয়েছিল। ওই দিন রাত ৯টা ১০ মিনিটে ঢাকা থেকে আবুধাবির উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল বিজি-১২৮ ফ্লাইটটির। এরপর রাত পৌনে ৩টায় আবার আবুধাবি থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে আসার কথা ছিল বিমানটির। তবে উড্ডয়নের আগে ডানায় ত্রুটির কারণে প্রায় ৯ ঘণ্টা পর বুধবার (৩০ অক্টোবর) আমিরাতের স্থানীয় সময় ভোর ৬টায় অন্য একটি বিমান আবুধাবি পৌঁছায়। পরে আমিরাতের শেখ জায়েদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সকাল পৌনে ১১টায় ১৪৩ জন যাত্রী নিয়ে ফ্লাইটটি চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে আসে।
গত ২১ সেপ্টেম্বর যাত্রীদের কাছ থেকে পাঁচবার সময় নিয়ে ছয় ঘণ্টা বসিয়ে রাখার পর মদিনা-ঢাকা ফ্লাইট বাতিল করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। ওই দিন বিমানের বিজি-১৩৮ ফ্লাইটটি মদিনার স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৩০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। অথচ ছয় ঘণ্টা যাত্রীদের বসিয়ে রাখার পর ভোর ৬টা ৩০ মিনিটে ফ্লাইট বাতিলের ঘোষণা দেয় বিমান বাংলাদেশ। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন ২৭১ আসনের বিমানের ২৫০ যাত্রী।
এর আগে চলতি বছরের ২৪ জুন ঢাকা থেকে আবুধাবিগামী একটি ফ্লাইট আকাশে উড়ার পর উইন্ডশিল্ডে ফাটল দেখা দেয়। ফলে পাঁচ ঘণ্টা পর যাত্রীদের অন্য ফ্লাইটে আবুধাবি পাঠানো হয়।
এসব বিষয়ে জানতে বিমান বাংলাদেশের গ্রাহকসেবা শাখার পরিচালক হায়ত উদ দৌলা খান বলেন, ‘বিজি-৩৪৮ ফ্লাইটের যাত্রীদের ভোগান্তির বিষয়ে আমার জানা নেই। এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে আমি আপনাকে বলতে পারব এমনটি কেন হয়েছে।’
সূত্রঃ কালের কন্ঠ অনলাইন