Thursday , 12 December 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে–প্রধানমন্ত্রী
--ফাইল ছবি

মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে–প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্কঃ
মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর বিষয়ে কী সমস্যা হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরো জানিয়েছেন, নিরাপদ সাইবার স্পেস ও সাইবার অপরাধ দমনে বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় সরকারের একটি আলাদা ‘সাইবার পুলিশ ইউনিট’ গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে।গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ সকল তথ্য জানান।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কর্মসংস্থানের জন্য যাওয়া স্বাভাবিক বিষয়। অনেকেই গিয়ে থাকেন। সরকার বৈদেশিক কর্মসংস্থানে সহযোগিতা করে থাকে।
সরকার প্রধান বলেন, মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠাতে সরকার বিশেষ ফ্লাইট চালু করেছিল।
একই প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বার বার আমি দেশবাসীকে বলেছি জমিজমা, ঘরবাড়ি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা খরচ করার দরকার নেই। যদি দরকার হয় প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারে। প্রয়োজনবোধে বিনাজামানতে ঋণ দেওয়া হয়। সেখানে তাকে সুনির্দিষ্ট করতে হবে সে যে যাচ্ছে তার চাকরিটা সুনির্দিষ্ট কিনা, এটা হলে ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারবে।
তিনি আরো বলেন, তারপরও আমাদের দেশে কিছু মানুষ আছে, কে আগে যাবে, সেই দৌড় দিতে গিয়ে হাতা-খাতা, বাড়ি-ঘর সব বিক্রি করে, তারপরে পথে বসে। অথবা সেখানে যদি চলেও যায় বিপদে পড়ে। মানুষকে বলেছি, এভাবে না যেতে। সোজাসোজি নিয়ম মানলে এ বিপদের সৃষ্টি হয় না। তবে এবার যে সমস্যা হচ্ছে তা আমরা খতিয়ে দেখছি, কেউ দায়ী থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ফরিদুন্নাহার লাইলীর লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি বিশেষ চক্র, বিশেষভাবে সাম্প্রদায়িক চক্র, যুদ্ধাপরাধী চক্র ও বিএনপি-জামায়াত ক্রমাগতভাবে গুজব ছড়াচ্ছে। এদের একটি বড় অংশ উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছে। তারা মূলত ফেসবুক, এক্স (প্রাক্তন টুইটার), ইউটিউবের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশ ও বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বিকৃত খবর প্রচার করছে।গুজব ও অপপ্রচার বন্ধে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসমূহ ব্যবহার করে সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী প্রোপাগান্ডা, সাম্প্রদায়িক উসকানি ও গুজব প্রতিরোধে ২৪/৭ সাইবার প্যাট্রলিং জোরদার করা হয়েছে। গুজব সৃষ্টিকারীদের শনাক্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সচেতনতামূলক প্রচারণা অব্যাহত রাখা হয়েছে। গুজব সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এবং সাইবার সাপোর্ট হেল্পলাইনের মাধ্যমে গুজব সংক্রান্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও তথ্য-প্রমাণ সাপেক্ষে ইন্টারপোলের সহযোগিতায় বিদেশে অবস্থানরত গুজব সৃষ্টিকারী ব্যক্তিদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।

সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরীর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফেনী থেকে বিএনপির নেতা খালেদা জিয়া বারবার নির্বাচিত হয়েছিলেন। ফেনীতে আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া প্রকল্প ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পরে বন্ধ করে দেন তিনি। সেগুলো নিজের এলাকার উন্নয়নে খালেদা জিয়া তেমন কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। বরং আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে ফেনীর যথাযথ উন্নয়ন হয়। তিনি বলেন, ফেনী যেহেতু খালেদা জিয়ার নির্বাচনি এলাকা, এখানে বৈরী পরিবেশ সবসময় ছিল। সেখানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি, বঙ্গবন্ধু অথবা তার পরিবারের নামে কোনো স্থাপনা হবে, এটা কখনো তারা চায়নি। যত্রতত্র যেখানে-সেখানে বঙ্গবন্ধু বা আমার পরিবারের নামে যাতে কোনো কিছু না হয় তা নিয়ে আমাদের বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সিদ্ধান্ত আছে। কোনো কিছু করতে গেলে ট্রাস্টের অনুমতি নিতে হয়। ফেনীতে বঙ্গবন্ধুর নামে কোন বিশ্ববিদ্যালয় বা টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় হবে কিনা তা যাচাই-বাছাই করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

উন্মুক্ত জলাশয় স্থায়ী সংরক্ষণ ও উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হাওর অঞ্চলে মৎস্য ও জলজ অভয়ারণ্য গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এসব অভয়ারণ্যে মাছ শিকার পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। হবিগঞ্জ-১ আসনের স্বতন্ত্র এমপি আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরীর লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, সব ধরনের দুর্গম এলাকায় স্বাস্থ্য পরিষেবা নিশ্চিতকরণে মানবসম্পদের স্বল্পতা বিবেচনায় নিয়ে সেবার মান বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যবস্থার বহুমুখীকরণ (সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বসহ), স্থানীয় পর্যায়ে শিশুদের এআরআই ও ডায়রিয়া প্রতিরোধ কার্যক্রম সম্প্রসারণ, এনজিও’র উন্নয়ন কার্যক্রমের সাথে সমন্বয়, খাদ্য সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির আওতায় নারী-শিশুদের পুষ্টির ঘাটতি নিরসনের কার্যক্রম গ্রহণসহ নানাবিধ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরীর লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প শেষ না করা হলে ব্যয় বৃদ্ধি পায় এবং দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিরূপ প্রভাব পড়ে। ফলে প্রকল্প অনুমোদনের পর বাস্তবায়নকালে প্রায় সব প্রকল্পই এক বা একাধিকবার ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া মেয়াদ বৃদ্ধি বা ব্যয় বৃদ্ধিসহ সংশোধন হয়ে থাকে। এতে এডিপি বাস্তবায়ন ব্যাহত হয়।

একই দলের মাইনুল হোসেন খান নিখিলের প্রশ্নের জবাবে সরকার প্রধান বলেন, সারা দেশে বর্তমানে ১৪ হাজার ২৯২টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ হাজার ২৭৫টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু রয়েছে। ৯৮টি কমিউনিটি ক্লিনিকের নির্মাণকাজ চলমান আছে।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply