Tuesday , 15 October 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
যশোর -৫ আসনের  সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্যের জনপ্রিয়তা শূন্যের  কোঠায় পৌঁছেছে – নাজমা খানম
--প্রেরিত ছবি

যশোর -৫ আসনের সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্যের জনপ্রিয়তা শূন্যের কোঠায় পৌঁছেছে – নাজমা খানম

উপজেলা (মনিরামপুর) প্রতিনিধি:

৮৯ যশোর -৫ সংসদীয় আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী অনেকেই। যশোর -৫ সংসদীয় আসন মণিরামপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত। বর্তমানে এই আসনের এমপি স্বপণ ভট্টাচার্য।

২০১৪ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জয়ী হন কলস প্রতীক নিয়ে স্বপন ভট্টাচার্য। সর্বশেষ ২০১৮ সালেও আওয়ামী লীগ থেকে স্বপন ভট্টাচার্য এমপি নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি শুধু মণিরামপুরের এমপি-ই নন  স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

মণিরামপুর উপজেলায় ১৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে যশোর-৫ নির্বাচনী এলাকা। এখানে ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ১৩ হাজার নয়শ ৯৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৫৭ হাজার তিনশ ৪৪ জন ও মহিলা ভোটার এক লাখ ৫৬ হাজার ছয়শ ৪৯ জন। নতুন ভোটার সংখ্যা ২৭ হাজার চারশ ৯৭ জন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সনাতন ধর্মালম্বী  (হিন্দু) ভোটার আনুমানিক ৯৬ হাজার, এর মধ্যে  নৌকার ভোটার ৫৪ হাজার, ২১ হাজার ভোট বিএন পি অনুসারী  অ্যাডভোকেট শহীদ  ইকবাল হোসেন ও আবু  মুসা সাহেবের ,  বাকী ৭৫ হাজার ভোটার অবস্থান করছে বর্তমান সংসদ সদস্যের বিপক্ষে। যশোরের এই আসনে সংখ্যালঘু ভোটার সবচেয়ে বেশি। আওয়ামী লীগের ভোটের একটি প্লাস পয়েন্ট তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৫ নং হরিদাসকাটি ইউনিয়নের  এক আওয়ামী লীগ  নেতা বলেন, সাংসদের ছেলে যুবরাজ খ্যাত সুপ্রিয় ভট্টাচার্য শুভর ভবদাহ কেলেঙ্কারি সহ আপন ভাগ্নে মনিরামপুর  উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চুর ৫৫৫ বস্তা চাউল চুরির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর সংখ্যা লঘু সম্প্রদায় এবং তৃণমূল আওয়ামী লীগ এর কর্মীরা স্বপন ভট্টাচার্যকে অপছন্দ করছে। শুধু তাই নয়, ছয় গ্রামের শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে হাজির হাট বাজার কেন্দ্রীয় দুর্গা মন্দিরে যে কমিটি হয় দুর্গাপূজা পালন উপলক্ষে তার বিপক্ষে মন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য অবস্থান নিয়ে জোর করে পূজা করে।

মনিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমা খানম বলেন, বর্তমান মন্ত্রী, তার ভাগ্নে উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু  ও ছেলে সুপ্রিয় ভট্টাচার্য শুভ -র হাতে মণিরামপুর উপজেলার  সাধারণ নিরীহ ও প্রকৃত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী প্রতিনিয়ত লাঞ্ছিতের  শিকার হচ্ছে,যখনই তাদের বিরুদ্ধে কোন সত্য কথা বলছে। শুধু তাই নয়, বর্তমানে যে ৫ নম্বর হরিদাস কাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর কবির লিটন মন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যের অনুসারী। কিছুদিন পূর্বে বিভিন্ন পত্রপত্রিকার মাধ্যমে তারও চালচুরি যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়। ৯ নং ঝাঁপা ইউনিয়নের রাজগঞ্জ বাজারে মন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এমপি কে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। মণিরামপুর উপজেলার সাধারণ মানুষ চায় না  স্বপন ভট্টাচার্যকে কোন জনপ্রতিনিধি  হিসেবে। ভট্টাচার্যের জনপ্রিয়তা শূন্যের কোঠায়। মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন সাধারণ মানুষ স্বপন ভট্টাচার্য সহ তার পরিবার ও অনুসারীদের থেকে নিজেদেরকে।

তবে আসনটিতে আওয়ামী লীগে কোন্দল রয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পৌরসভার মেয়র  কাজী  মাহমুদুল হাসান, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আমজাদ হোসেন বর্তমানে সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্যের সঙ্গে আছেন।

অন্য দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক ফারুক হোসেন, মণিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি, সাবেক পৌর মেয়র ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন লাভলু,মণিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানম,  মণিরামপুর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সভাপতি মিকাইল হোসেন এমপির বিপক্ষ গ্রুপ বলে পরিচিত।

নির্বাচন শুরু হতে আর কয়েক মাস বাকি। এর-ই মধ্যে অনেকেই দল বদল শুরু করেছেন। প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য গ্রুপ থেকে অনেকেই বের হয়ে আসছেন। এরই মধ্যে কয়েক জন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক স ম আলাউদ্দিন,বর্তমান  দুই উপজেলা যুবলীগের সদস্য ও পৌর কাউন্সিলর আইয়ুব পাটোয়ারী, আব্দুল  কুদ্দুস হোসেন,  পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম রবি সহ কয়েকজন নেতা রয়েছেন।তাদের দাবী তারা দূর্নীতিবাজ লোকের সাথে আর থাকবেন না। মণিরামপুরে ঝাঁপা ইউনিয়নে স্বপণ ভট্টাচার্যকে অবাঞ্ছিত বলে ঘোষণা করা হয়।

মণিরামপুর উপজেলায় ১৭টি ইউনিয়ন এর তৃণমূল আওয়ামী লীগ এর কর্মীরা স্বপণ ভট্টাচার্যের দ্বারা  নির্যাতিত বলে দাবি উপজেলা সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক ফারুক হোসেনের। উপজেলার তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা সন্দীপ ঘোষ বলেন,
দল ক্ষমতায় থাকলেও তারা সেই ক্ষমতার স্বাদ ভোগ করতে পারছেন না। দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, মাদক নিয়োগ বাণিজ্য,ভবদাহ কেলেঙ্কারি, চাউল চুরির মতন ঘটনার সাথে স্বপণ ভট্টাচার্যের সম্পৃক্ততা থাকায় তৃণমূল আওয়ামী লীগের কর্মীরা স্বপণ ভট্টাচার্যকে আগামী সংসদ নির্বাচনে তাকে আর চান না। তৃণমূল আওয়ামী লীগ এর কাছে জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন স্বপণ ভট্টাচার্য।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply