Friday , 29 March 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
শূন্য আসনে দ্রুত নির্বাচন, এলাকায় নির্বাচনী আমেজ

শূন্য আসনে দ্রুত নির্বাচন, এলাকায় নির্বাচনী আমেজ

অনলাইন ডেস্ক:

বিএনপির সংসদ সদস্যদের পদত্যাগ করায় শূন্য হওয়া আসনগুলোতে উপনির্বাচনের তফসিল দ্রুত ঘোষণা করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী বৃহস্পতিবার এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত হতে পারে। দ্রুত নির্বাচনের পক্ষে ইসির যুক্তি হচ্ছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় আছে এক বছরের মতো, সে কারণে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই উপনির্বাচন শেষ করতে হবে। গতকাল সোমবার  আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর সাংবাদিকদের এই সম্ভাবনার কথা জানান।

সংসদ সচিবালয় ঘোষিত শূন্য আসনগুলো হলো বগুড়া-৪ ও ৬, ঠাকুরগাঁও-৩, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ এবং নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন-৫০। সংরক্ষিত আসনের নির্বাচন কখন হবে, সেই সিদ্ধান্ত ইসির বৃহস্পতিবারের বৈঠকেই হতে পারে। এ ছাড়া ওই সংরক্ষিত আসন কোন দলের প্রাপ্য হবে, সেটাও নির্ধারণ করতে হবে। ইসি সচিবালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, সাধারণ আসনগুলোর উপনির্বাচন অনুষ্ঠানের পর দলগুলোর আসনসংখ্যার যে পরিবর্তন হবে, সে অনুপাতেই সংরক্ষিত আসনটি বরাদ্দ করা হবে।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ গতকাল বলেন, ‘আমরা বিষয়টি কমিশনে উপস্থাপনের জন্য ফাইল প্রস্তুত করেছি। কমিশনই সিদ্ধান্ত নেবে। ’

গত রবিবার বিএনপির সাত সংসদ সদস্যের মধ্যে ছয়জনের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। এরপর এসব আসন শূন্য ঘোষণা করা হয়।

নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর গতকাল  বলেন, ‘বিএনপির সংসদ সদস্যদের পদত্যাগ করা আসন শূন্য ঘোষণার গেজেট নির্বাচন কমিশন সচিবালয় পেয়েছে। পরবর্তী প্রসিডিউর হচ্ছে আমরা সভায় বসব। বৈঠকে বসে আমরা সিদ্ধান্ত নেব যে কবে নির্বাচন হবে, তার শিডিউল ঘোষণা করা হবে। ’ তিনি বলেন, ‘সর্বোচ্চ ৯০ দিন সময় আছে। কিন্তু অত সময় নেব না। নির্বাচনী তফসিল আমরা খুব তাড়াতাড়িই দেব। ’ তিনি আরো বলেন, ‘বৃহস্পতিবার আমরা হয়তো অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করব। সেখানে সিদ্ধান্ত হতে পারে। নথির মাধ্যমেও ফাইল পুটআপ হতে পারে। তাহলে আর বৈঠকের প্রয়োজন হবে না। ’

এলাকায় নির্বাচনী আমেজ

এদিকে শূন্য আসনের এলাকাগুলোতে নির্বাচনী আমেজ শুরু হয়েছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন পেতে তৎপরতা শুরু করেছেন। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নেতারাই এগিয়ে আছেন।

১৯৭৩ সালের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় কেউ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হননি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার গতকাল বলেন, ‘একাধিকবার জাতীয় পার্টির এমপি ওই আসন থেকে পাস করার পর সেখানে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। কিন্তু সর্বশেষ নির্বাচনে তাদের প্রার্থী জামানত হারান। এলাকায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী পাস না করায় সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলা একেবারেই উন্নয়নবঞ্চিত। এসব কারণে আমরা চাই এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জিতুক। ’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. হারুনুর রশিদের পদত্যাগপত্র এখনো সংসদ সচিবালয় গ্রহণ না করলেও তা শুধু সময়ের অপেক্ষা বলেই স্থানীয় লোকজনের ধারণা। জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জিয়াউর রহমান বলেন, সংসদ নির্বাচনে স্থানীয়ভাবে কিছু করার সুযোগ নেই। দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পার্লামেন্টারি বোর্ড যাঁকে মনোনয়ন দেবে তিনিই নির্বাচন করবেন।

ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে তৎপর হয়ে উঠেছেন আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও ওয়ার্কার্স পার্টির মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতারা। আলোচনায় আছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি অধ্যাপক ইয়াসিন আলী, জাতীয় পার্টির সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য হাফিজউদ্দীন আহমেদ, সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সেলিনা জাহান লিটা, পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ইমদাদুল হক এবং পীরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আখতারুল ইসলাম।

বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনে কি এবার আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কপাল খুলবে, নাকি বিগত সংসদ নির্বাচনের মতোই তা জোট-মহাজোটের মধ্যে ভাগাভাগি হবে, সেই আলোচনা এখন ভোটার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে।

সদর আসনে ২০১৯ সালের উপনির্বাচনে অংশ নেওয়া আওয়ামী লীগ প্রার্থী টি জামান নিকেতা দলীয় প্রার্থী হতে পারেন বলে আলোচনা চলছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিকের নামও শোনা যাচ্ছে। জাতীয় পার্টির জেলা সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য নূরুল ইসলাম ওমর উপনির্বাচনে অংশ নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

বগুড়া-৪ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে সাবেক সংসদ সদস্য ও জাসদের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি রেজাউল করিম তানসেন, নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন রানা, নন্দীগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল আশরাফ জিন্নাহ, কাহালু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন কবিরাজ এবং জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন মোস্তফা কামাল ফারুক ওরফে ফারুক আহমেদের নাম আলোচনায় আছে।

সূত্র: কালের কন্ঠ অনলাইন

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply