Friday , 29 March 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
শেখ হাসিনার সততা দেশ-বিদেশে প্রশংসিত : সেতুমন্ত্রী
--ফাইল ছবি

শেখ হাসিনার সততা দেশ-বিদেশে প্রশংসিত : সেতুমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক:

বিএনপি নেতারা দুর্নীতি দমন কমিশনে গিয়ে যে মহড়া দিয়েছেন তা নিজেদের দুর্নীতি ও ব্যর্থতা আড়ালের অপচেষ্টা মাত্র বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, বিএনপির কথিত আন্দোলন আর অভ্যুত্থানের রঙিন খোয়াব ভেঙে যাওয়ায় জনগণের নজর এখন ভিন্ন দিকে নিতে চায়। কর্মী-সমর্থকদের রোষানল থেকে বাঁচতেই বিএনপি নেতারা দুর্নীতির তথ্য প্রদানের নামে নাটকীয়তার আশ্রয় নিচ্ছেন।

ওবায়দুল কাদের আজ মঙ্গলবার সকালে তার বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ করে বলেন, অনেক তথ্যই সরকারের কাছে আছে, কে কোথায় সভা করছে, কাকে টাকা দিচ্ছে, এমনকি সরকারের বিরোধিতার নামে রাষ্ট্রবিরোধী কাজে উসকানির জন্য দুর্নীতিলব্ধ অর্থ বিনিয়োগ করা হচ্ছে।

কারা কর ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা করে আবার দুর্নীতিবাজ নেতৃত্বের জন্য অবৈধ উপায়ে অর্থ প্রেরণ করছে, সব খবরও সরকারের কাছে আছে জানিয়ে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, এসব অপরাধীরা কেউই ছাড় পাবে না।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নিজ দলের অপরাধী, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আপনাদের অবস্থান কী? সাহস থাকলে তাদের তালিকা দিন। বিদেশে বিলাসী জীবনের রসদ কোথা থেকে আসছে তার হিসাব জমা দিন। সর্ষের মধ্যে ভূত রেখে ভূত তাড়ানোর এসব লোক-দেখানো অপপ্রয়াস অপরাজনীতিরই ধারাবাহিকতা মাত্র। ‘

ওবায়দুল কাদের বলেন, যে দলের চেয়ারপারসন দুর্নীতির দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি এবং দলীয় গঠনতন্ত্র থেকে যে দল দুর্নীতিবিরোধী ৭ ধারা অপসারণ করে, যারা আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ দল হিসেবে নিজেদের পরিচিত করেছে, যাদের শাসনামলে দেশকে পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার কলঙ্ক তিলক পরতে হয়েছিল, সেই আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত বিএনপি যখন দুর্নীতি নিয়ে কথা বলে তখন মানুষের হাসি পায়। আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ দলের এমন মুখরোচক কথার নৈতিক মানদণ্ড নিয়েও মানুষ পরিহাস করে।

বিএনপি নেতাদের মুখে দুর্নীতি নিয়ে মুখরোচক কথা বলা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে প্রচার হওয়ার তথ্য তুলে ধরে বলেন, তারেক রহমানের পাচারকৃত ১২ কোটি টাকা আটক করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস। আওয়ামী লীগ সরকার ২০১২ সালে সে টাকা দেশে ফেরত আনে। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে ২০১৩ সালে সিঙ্গাপুর সরকার পাচারকৃত আট কোটি টাকা ফেরত দেয়।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারেক রহমান ও তার ব্যাবসায়িক পার্টনার গিয়াসউদ্দিন আল মামুন সিটিএনএ ব্যাংকে ২১ কোটি টাকা পাচার করেন। এফবিআই এ ব্যাপারে তদন্ত করেছে এবং বাংলাদেশের আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, লন্ডনের একটি ব্যাংকে প্রায় ছয় কোটি টাকা পাওয়া যায় তার ব্যাংক হিসাবে। বেলজিয়ামে ৭৫০ মিলিয়ন ডলার, মালয়েশিয়ায় ২৫০ মিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন, দুবাইয়ের এমিরিটাস হিলসে স্প্রিং-১৪ নামের কয়েক মিলিয়ন ডলার মূল্যের বাড়ির মালিক হয়েছিল জিয়া পরিবার। ভাঙা স্যুটকেসের গল্প তত দিনে লঞ্চ, টেক্সটাইল মিল, বিদেশে বাড়ি আর ব্যাংক ব্যালান্সের নিচে চাপা পড়ে গেছে। অথচ তারাই এখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে বড় বড় কথা বলে!

দেশবাসী জানে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে অটল উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে এর প্রমাণ জনগণ ইতিমধ্যে দেখেছে। যে যত বড় নেতাই হোক, অনিয়মের অভিযোগ পেলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সরকারি দলের অনেক নেতা, এমপি এমনকি মন্ত্রী পর্যন্ত ছাড় পাননি।

দুদক স্বাধীনভাবে কাজ করছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকারি দলের বিরুদ্ধেও দুদকের কাজ করতে কোনো বাধা ছিল না এবং এখনো নেই।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যানসহ তাদের অনেক নেতার বিরুদ্ধে দুদকে যে তথ্য বা অভিযোগ আছে সে ব্যাপারেও দুদক তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে বলেও আশা করেন ওবায়দুল কাদের।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সততার বিষয়টি আজ দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হচ্ছে উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী বলেন, আজ যারা বড় বড় কথা বলছেন, লোক-দেখানো নাটক করছেন, তাদের শাসনামলে নিজ দলের এমপি, মন্ত্রী কিংবা দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের একটি প্রমাণ তারা দেখাতে পারবেন না।

বিএনপির নীতি ছিল দুর্নীতি তোষণ আর দলীয়ভাবে করা দুর্নীতিবাজদের পৃষ্ঠপোষকতা―এমন মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির শাসনামল আর দুর্নীতি সমার্থক হয়ে গিয়েছিল।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘সাহস থাকলে আপনাদের গঠনতন্ত্রে দুর্নীতিবিরোধী ৭ ধারা ফিরেয়ে আনুন, যা বাদ দিয়েছিলেন, তাহলে বোঝা যাবে আপনারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। একদিকে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে অন্যদিকে কল্পিত অভিযোগ করাকে জনগণ নৈতিকতাবিরোধী বলেই মনে করে। ‘

সূত্র: কালের কন্ঠ অনলাইন

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply