Tuesday , 10 December 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
সম্পূর্ণ দৃশ্যমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু
--সংগৃহীত ছবি

সম্পূর্ণ দৃশ্যমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু

অনলাইন ডেস্কঃ

যমুনার বুকে সম্পূর্ণ দৃশ্যমান হয়েছে উত্তরাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু। ৫০টি পিলারের ওপর ৪৯টি স্প্যান বসিয়ে এ সেতুর পুরো ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার সুপার স্ট্রাকচার এখন পুরোপুরি দৃশ্যমান। চলছে অ্যাডজাস্টমেন্টের কাজ। তবে উভয়পাশের স্টেশন নির্মাণ, স্লিপারবিহীন রেলপথ স্থাপনসহ কিছু কাজ বাকি রয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্প অফিস সূত্রে জানা যায়, জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর নির্মাণ ব্যয় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা।

এ ছাড়া সেতুর উভয় প্রান্তের দুই স্টেশনে সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপনে ডব্লিউডি-৩ নামে অপর একটি প্যাকেজের কাজও চলছে।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে যমুনার বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো এ সেতুটি ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে। ঢাকার সঙ্গে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা অঞ্চলের রেল যোগাযোগে বর্তমান যে বিড়ম্বনা রয়েছে, সেটা আর থাকবে না। নির্মাণের পর সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন অন্তত ৮৮টি যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেন চলাচল করবে। কমে যাবে পরিবহন খরচও।

বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতুর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ওরিয়েন্টাল কনসালটেন্ট গ্লোবাল লিমিটেডের সাব স্ট্রাকচার ইঞ্জিনিয়ার রবিউল আলম বলেন, ‘সেতুর ৫০টি পিলারের মধ্যে সবকটি বসানো হয়েছে। প্রতি দুটি পিলারের মাঝখানে একটি করে মোট ৪৯টি স্প্যান বসানো শেষ হয়েছে। সেতুর ওপরে রেললাইন স্থাপন শেষ হয়েছে ২ দশমিক ২৫ কিলোমিটার। ডব্লিউডি-১ প্যাকেজের ৯৬ দশমিক ১৫ শতাংশ, ডব্লিউডি-২ প্যাকেজের ৯০ শতাংশ ও ডব্লিউডি-৩ প্যাকেজের প্রায় ৬৬ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে ডব্লিউডি-১ প্যাকেজে ২ হাজার ৯৭৯ ও ডব্লিউডি-টু প্যাকেজে ২ হাজার ৮৪১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত আছেন।’

প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী তানভীরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিটি স্প্যানের ওপর জাপানিদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির রেললাইন বসানো হচ্ছে। ফলে সেতুর ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করতে পারবে। সমান্তরাল ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকের এ সেতুটির নির্মাণকাজ ডিসেম্বরেই শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসুদুর রহমান বলেন, ‘সেতুর ৮৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। সুপার স্টাকচারগুলোর মেইন মেম্বারগুলো লাগানো হয়েছে। সেই সঙ্গে কার্ভ, মেটারল কর্টসহ ছোটখাট মেম্বারগুলোও লাগানো হয়েছে। এখন শুধু অ্যাডজাস্টমেন্ট বাকি রয়েছে। অ্যালাইনমেন্ট ঠিক করা হচ্ছে, লেভেল ঠিক করা হচ্ছে। বিভিন্ন ড্রেনে কাজ, কালভার্টগুলো শেষ হয়ে গেছে। দুই পাশের স্টেশন বিল্ডিংয়ের কাজ, প্লাটফর্ম স্থাপনের কাজ ও ট্র্যাকের কাজ চলছে। ছোট ছোট কিছু পেরিমিটার ফেল্ট বাকি আছে। আশা করছি, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই সব কাজ শেষ হয়ে যাবে।’

১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় কমিয়ে দেওয়া হয় ট্রেনের গতিসীমা। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হওয়ায় সময়ের অপচয়ের পাশাপাশি ঘটছে শিডিউল বিপর্যয়। বাড়ছে যাত্রী ভোগান্তি। এসব সমস্যা সমাধানে সরকার যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেলসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটি নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এর  পিলার নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের মার্চ মাসে।

২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটি নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সমান্তরাল ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকের এ রেলসেতুর পিলার নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের মার্চ মাসে।

সূত্র : বাংলানিউজ ২৪ ডট কম

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply