গাজীপুর প্রতিনিধি:
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, ‘আমাদের নতুন প্রজন্মকে সৃজনশীলতা এবং ধর্মনিরপেক্ষতার অপার শক্তিতে ভরে উঠতে হবে। তারাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। ডিজিটাল এবং স্মার্ট বাংলাদেশের যে প্রত্যয় আমরা গ্রহণ করেছি, সেটিকে সফল করে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে। আমাদের প্রজন্ম বিজ্ঞান চেতনায়, সংস্কৃতি চর্চায়, জ্ঞানে, সৃজনে, সৃষ্টিতে- সবকিছুতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াক। এর মধ্য দিয়ে আমাদের আগামী প্রজন্ম বিশ্বের যেখানেই থাকুক সে মাথা উঁচু করে বলবে আমি বঙ্গবন্ধুর দেশের এক উজ্জ্বল গর্বিত নাগরিক।’
গতকাল (১০ আগস্ট) দুপুরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে জগন্নাথ ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির আয়োজনে জাতীয় বক্তৃতা প্রতিযোগিতা ২০২৩ ও শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশের প্রথিতযশা এই সমাজবিজ্ঞানী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শোষিতের গণতন্ত্রের জন্য লড়েছেন। গোটা বিশ্ব যখন দু’ভাগে বিভক্ত। একদিকে শোষিত আরেক দিকে শাসক। তখন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমি শোষিতের পক্ষে। বঙ্গবন্ধু বিশ্বময় শোষিতের পক্ষে ছিলেন। তিনি প্রচলিত পুঁজিবাদী সমাজ ভেঙে মিশ্র অর্থনেতিক ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলেন।’
দেশমাতৃকাকে ভালোবেসে সবাই শ্রম দিয়ে যাচ্ছি উল্লেখ করে ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘আমরা বিন্দু বিন্দু করে অর্থনেতিক উন্নয়নের দিকে যাচ্ছি। সেটা আমাদের সকলের সম্মিলিত শ্রমে। যখন চরম দুঃসময় আসে, পার্শ্ববর্তী কোনো দেশে অর্থনেতিক বিপর্যয় ঘটে তখন ভাবি বাংলাদেশ শ্রীলংকা হতে যাচ্ছে কিনা? প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার যখন লাখ লাখ মানুষকে নির্যাতন-নিপীড়ন করে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছে তখন আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি। এখন মনে হয় এই বঙ্গ দেশে, এই অঞ্চলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আসলে এক অনন্য যাত্রা সুনিশ্চিত করেছেন।’
দেশের প্রথিতযশা এই সমাজচিন্তক বলেন, ‘সাড়ে সাত কোটি মানুষকে বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চের ভাষণে এক করেছিলেন। সেই থেকে আমাদের যেকোনো বিপর্যয়ে সেটা হোক প্রাকৃতিক কিংবা শ্রীলংকার মতো অর্থনৈতিক বিপর্যয়, বাঙালি এক হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তার মোকাবেলা করেছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সামরিক শাসনের যে বীজ অঙ্কুরিত হয়েছিল তার অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্র মুক্তির সোপান হয়েছে।’
উপাচার্য ড. মশিউর রহমান আরও বলেন, ১৯৭১ সালে আমাদের মা বোনেরা গেরিলা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। ৩০ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়ে দেশ মাতৃকার সুরক্ষায় বন্ধন বেঁধেছে, আমাদের নির্যাতিত মা-বোনদের মানচিত্রে গড়ে উঠছে এ স্বদেশ, কিন্তু আমাদের পিতা যখন বাংলাদেশের হাল ধরতে গেলেন দেখলেন পদে পদে অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা ও দুর্নীতি গ্রাস করছে। বার বার তার মনে হয়েছে পাকিস্তানি প্রেতাত্মারা বুঝি যায়নি। তিনি বলেন, প্রচলিত এই সমাজ ব্যবস্থা আমি ভেঙে নতুন সমাজ গড়বো।