Friday , 19 April 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
আনোয়ার আলীতেই শেখ হাসিনার আস্থা

আনোয়ার আলীতেই শেখ হাসিনার আস্থা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:

মানবিক নগর পিতা আর প্রবীণ রাজনীতিবিদই নন তিনি একজন সংস্কৃতিমনা, সংগীত ও প্রকৃতি প্রেমিক। ফটোগ্রাফার, ক্রিকেটার, পুরাকীর্তি ও প্রাচীন মুদ্রা সংগ্রাহক । মাছ ধরা, বই পড়া এবং বিরল প্রজাতির গাছ সংগ্রহ করে ছাদে বাগান তৈরি করা তার নেশা। বলা বাহুল্য ১৯৭৭ সাল থেকেই নিজ বাড়ির ছাদে তিনি বাগান করেন। তিনি ব্যক্তি জীবনে জাতীয় মানের একজন সুটারও বটে। কলেজ জীবন শুরুর আগেই ১৯৬২ সালে তিনি ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। ছাত্র জীবন থেকেই তিনি সকল প্রকার অন্যায়ের প্রতিবাদে সোচ্চার ছিলেন। ১৯৬২ তে হামুদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলন কালে মিথ্যা মামলার শিকার হয়ে কারাবাসে যান। ১৯৬৪ সালে আনোয়ার আলী বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগ, ১৯৬৬ সালে সিরাজুল আলম খান, শেখ ফজলুল হক মনি প্রমুখের সহযোগে গঠিত স্বাধীন বাংলার সংগ্রাম পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। যেটাকে এখন অনেকেই নিউক্লিয়াস নামে চেনেন। এম. এ ডিগ্রি লাভের জন্য আনোয়ার আলী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন অবস্থায় অনেকের সাথে আনোয়ার আলী বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে নিজ এলাকায় ফিরে এসে দেশ স্বাধীন আন্দোলনে মন দেন বিপ্লবী এই নেতা। দেশের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নীতি এবং তার অপ্রতিদ্বন্দ্বী নেতা বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের মহা নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবরের আদর্শ বুকে ধরে মূল দলে যোগ দেন। ১৯৬৯ সালে কুষ্টিয়া শহর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। একই সালে বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর প্রধান। এই স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীই পরে মুক্তিযদ্ধা রিক্রুটের কাজ করে। একই সময় আনোয়ার আলী বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলা শ্রমিক-লীগের সভাপতি, বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮০ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ পরবর্তীতে কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব ছিলেন। বর্তমানে মূল দলের ১নং সদস্য হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০২ পর্যন্ত তিনি কুষ্টিয়া জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ ও ১৯৯৬ এ দলীয় ভাবে সমর্থনে নৌকা প্রতিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করেন। এবার আসি মহান মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গে। ১৯৭১ এ ভারতে সশস্ত্র প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশের অভ্যন্তরে নানা স্থানে সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণে মুক্তিযুদ্ধের এই অন্যতম নায়ক মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে কৃষ্ণনগর থেকে আওয়ামীলীগের দলীয়ভাবে পরিচালিত যুদ্ধ পরিচালনার জোনাল কমিটির পক্ষ থেকে বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলা ও বৃহত্তর পাবনা জেলার প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। সেই সাথে শিকারপুর ক্যাম্প হয়ে ট্রেনিং নিয়ে কীভাবে দেশে তার দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকায় ঢুকবেন, মুক্তিযোদ্ধাগন কোথায় কিভাবে যুদ্ধ করবেন তার সমন্বয়ক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা রাখার জন্য ১৯৭১ সালে আনোয়ার আলীর পরিবারের পরিবারের এগারো (১১) জনকে হত্যা ও বাড়ি-ঘর লুট করা হয়। তার মেজো ভাইকে ধরে নিয়ে গিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। দেশ-স্বাধীনের পরে মুজিব বাহিনীর কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করার জন্য প্রবাসী সরকারের পক্ষ থেকে বৃহত্তর কুষ্টিয়া ও বৃহত্তর পাবনা জেলার প্রধান পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার আলী ১৯৭৫ এ বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর একটানা দেড় বছর কারাভোগ করেন। মুক্তি পেয়ে আবারও আওয়ামীলীগকে পূর্ণ গঠন করতে মরিয়া হয়ে পড়েন। ঐ ক্লান্তি-লগ্নে যখন দল বড় বিব্রত, কোন রক্তচক্ষু তখন তাকে ভীত করে থামিয়ে রাখতে পারেনি। আদর্শে অটল, অহিংস এবং সর্বজন-গ্রাহ্য এ রাজনীতিবিদ সেই দুর্দিনেও তার স্থানীয় দলের প্রদীপটি অনির্বাণ রেখেছিলেন। রাজনীতিতে অকুতোভয় এই সেনাপতি শুধু তার দালের একজন প্রবীণ রাজনীতিবিদই নন ব্যক্তি হিসেবে তার গ্রহণযোগ্যতা স্থানীয় সব দল সব মতের নেতা কর্মীদের কাছে। এক কথায় দলের জন্য একনিষ্ঠতার চরম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ একজন জন-নন্দিত রাজনীতিবিদ। ১৯৮৯ সাল থেকে ২০২০ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কুষ্টিয়া নগর পিতা হিসাবে আনোয়ার আলীর উপরেই আস্থা রেখেছেন। এযাবতকাল কুষ্টিয়া পৌরসভার যথাক্রমে ২৫ বছর চেয়ারম্যান ও মেয়র হিসেবে অধিষ্ঠিত আছেন। চেয়ারম্যান বা মেয়রই শুধু নন পৌর প্রশাসনে নিরবচ্ছিন্ন শৃঙ্খলা বজায় রেখে পৌর এলাকার সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে, পৌর এলাকার অবকাঠামোগত উন্নয়নে তিনি সর্বদা তাঁর উদ্ভাবনী মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন। প্রায় ১৫০ বছরের পুরাতন এই পৌরসভার ২২ টা ওয়ার্ডের জনগণ সেবক হিসাবে এবারও আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আনোয়ার আলীর উপরেই আস্থা রেখেছেন সেটা বলা অন্যায় হবে না।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply