Tuesday , 16 April 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
ইসি গঠন আইনে কাউকে ইনডেমনিটি দেওয়া হয়নি : আইনমন্ত্রী

ইসি গঠন আইনে কাউকে ইনডেমনিটি দেওয়া হয়নি : আইনমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক:

সংসদে পাস হওয়া ইসি গঠন আইনে কাউকে ইনডেমনিটি দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ইনডেমনিটির পথে হাঁটে না। ইনডেমনিটি কথা শুনলেই আওয়ামী লীগের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। বিএনপি ইনডেমনিটি দিয়ে আমাদের রক্ত ক্ষরণ করিয়েছে।

এই আইনে লিগ্যাল কাভারেজ দেওয়া হয়েছে। এই আইনের মধ্যে কেউ অন্যায় করে থাকলে তাকে প্রকেটশন দেওয়া হয়নি। জাতির পিতাকে হত্যার কথা স্বীকার ও খুনিদের পুনর্বাসিত করার মেনে জনগণের কাছে মাফ চাইলে আওয়ামী লীগ বিএনপির সাথে ঐক্যমতে আসবে বলে জানান তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার সংসদে ‘ইসি গঠন আইন’ বিল পাস নিয়ে বিরোধী দলের বক্তব্যের জবাবে আইনমন্ত্রী একথা বলেন।

এর আগে বিলের ওপর আনীত জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধীদল জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সংসদ সদস্যরা বিলে ইমডেমনিটির বিধান রাখার অভিযোগ করেন। এ ছাড়া খসড়া আইনটি ‘তড়িঘড়ি করে’ আনা হয়েছে বলেও দাবি করেন।

এ প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, আমি বলেছি এটা তড়িঘড়ি করে করার আইন নয়, এটা সত্য। বর্তমান কমিশনের মেয়াদের মধ্যে আইন করা সম্ভব নয়, এটাও বলেছি। কারণ আমি বলেছিলাম করোনাকালে সীমিত সময়ের জন্য সংসদ বসে, এর মধ্যে এই আইন পাস করা কঠিন হবে। সংসদকে শ্রদ্ধা জানিয়েই এটা বলেছিলাম।

তিনি বলেন, সুজনের একটি প্রতিনিধি দল আমার কাছে গিয়ে আইনের একটি খসড়া দিয়ে পাসের প্রস্তাব করেন। আমি আইনটি পাস করার জন্য সময় লাগবে বলে তাদের জানাই। তারা অর্ডিনেন্স করে এটা করার প্রস্তাব দেন। আমি বললাম সংসদকে পাস কাটিয়ে এই আইন করব না। সংসদে নেওয়া ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ এই আইন আমরা করব না।

আইনমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রপতির সাথে যেসব দল সংলাপ করেছে গিয়েছে এবং যারা যাননিনি তারা সকলে নতুন আইনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন। গত ১৭ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপ করে। রাষ্ট্রপতি আইনের বিষয়ে তার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। এরপর বিলটি আনা হয়েছে।

তিনি বলেন, এ আইনের কথা অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে। ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যখন রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ হয়, তখনই এই আইনের বিষয়ে কথা হয়েছিল। তখন প্রধানমন্ত্রী এই আইনটি করার জন্য বলেছিলেন। তিনি আরো বলেন, এই আইন করার প্রক্রিয়া শুরুর পর যারা বাইরে কথা বলেন, তাদের আন্দোলন সৃষ্টির চেষ্টার যে টুলস বা মসল্লা সেটা আর থাকেনি। সেজন্যই তারা উঠে পড়ে লেগেছেন, এটা তড়িঘড়ি করে কেন করছেন। তারা বলছেন, এটা ইসি করার আইন হয়নি। সার্চ কমিটি গঠন করার আইন হয়েছে।

আইনে সার্চ কমিটি গঠনের প্রস্তাবনা প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, ইসি গঠনে সার্চ কমিটি গঠনের বিষয়ে ২০১২ সালে  রাজনৈতিক দলগুলো সম্মত হয়েছিল। তখন থেকেই এই সার্চ কমিটির ধারণা এসেছে। এটা কল্পনা থেকেও আসেনি আকাশ থেকেও পড়েনি। এটা তো নতুন আবিষ্কার নয়। সার্চ কমিটির মাধ্যমে গঠিত দুই কমিশন হয়েছে। যার কারণে এটা গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। ফলে জনমত যাচাই তো দশ বছর ধরে হয়ে গেছে। বিষয়টি হলো তালগাছটি না পেলে অনেক কমপ্লেইন থাকে।

তিনি বলেন, দুইজন বিশিষ্ট নাগরিক কারা হবে, সেটা নিয়ে কথা হচ্ছে। আমরা তো আইনে কোথাও বলিনি, সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে তাদের নিযোগ দেওয়া যাবে না। বিশিষ্ট নাগরিকের ক্রাইটেরিয়া তো বলে দেওয়া হয়নি। আমরা কেবল রাষ্ট্রপতিকে এই সুযোগটি দিয়েছি।

বিএনপির এমপিদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির জবাবে মন্ত্রী বলেন, উনারা তো তালগাছ চান। উনারা কিছুই মানেন না যতক্ষণ তালগাছটা উনাদের না হয়। এই সংসদই বলেছিলো তত্ত্ববধায়ক সরকার হবে তিন টার্মের জন্য। তত্ত্ববধায়ক সরকার নিয়ে মামলা হলে কোর্ট দুটি বিধানকেই অবৈধ ঘোষণা করে। তারপরও উনারা এটার কথা বলবেন। উনারা আদালতের রায়ও মানেন না। উনাদের কথা হলো যেটা কায়দে আজম মোহাম্মদ আলী করেছেন সেটা ভালো। কিন্তু যুদ্ধ করে জাতির পিতা যেটা করে দিয়েছেন সেটা ভালো না।

বিএনপির এমপিদের ঐক্যমতের দাবির প্রসঙ্গে আনিসুল হক বলেন, ঐক্যমত করতে হলে উনাদের সত্যকে স্বীকার করতে হবে। আর সত্যটি হচ্ছে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সত্য হচ্ছে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট উনারা মানে বিএনপি বঙ্গবন্ধুকে খুন করেছেন। সত্য হলো- উনারা ইনডেমনিটি অর্ডিনেন্সের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করতে দেননি। খুনিদের পুনর্বাসিত করেছেন। এসব সত্য মেনে জনগণের কাছে মাফ চাইলে আমরা ঐক্যমতে আসব। এই প্রস্তাব গ্রহণ করলে আমরা ঐক্যমতে আসব।

সার্চ কমিটির মাধ্যমে গঠিত আগের দুই কমিশনকে হেফাজত প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ইনডেমনিটি আর লিগ্যাল কাভারেজ এক কথা নয়। ইনডেমনিটি হচ্ছে অন্যায় করার পরে তাকে প্রকেটশন দেওয়ার জন্য আইন করা। লিগ্যাল কাভারেজ হচ্ছে যেকোনো বৈধ কাজ যেটার লিগ্যাল কাভারেজ ছিল না সেটা তার আওতায় আনা। ইনডেমনিটি কথা শুনলেই হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়।

ইনডেমনিটি আওয়ামী লীগ দেয় না, এটা বিএনপি দেয়। তারা ইনডেমনিটি দিয়ে আমাদের রক্ত ক্ষরণ করিয়েছে। দীর্ঘ ২১ বছর আমাদের অপেক্ষা করিয়েছে জাতির পিতার হত্যার বিচার করতে। ইনডেমনিটির কথা আর আমাদের কাছে শুনাতে আইসেন না। এই আইনে লিগ্যাল কাভারেজ দেওয়া হয়েছে। ২০১২ সালে যে কাজটা করা হয়েছে সেটা থেকে শুরু করে সেটার লিগ্যাল কাভারেজ। এই আইনের মধ্যে কেউ অন্যায় করে থাকলে তাকে প্রকেটশন দেওয়া হয়নি। সেই কারণে তাদের সেসব প্রস্তাব গ্রহণ করা যায় না। তাদের এই প্রস্তাব প্রত্যাহার করতে অনুরোধ করব।

সূত্র: কালের কন্ঠ অনলাইন

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply