Thursday , 25 April 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন অফিসের সাবেক হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর অবৈধ সম্পদের পাহাড়- দুদুকের মামলা
--প্রেরিত ছবি

কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন অফিসের সাবেক হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর অবৈধ সম্পদের পাহাড়- দুদুকের মামলা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : 

কুষ্টিয়ার বহুল আলোচিত সিভিল সার্জন অফিসের সাবেক হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুল কুদ্দুসসহ ও তাঁর স্ত্রী’র বিরুদ্ধে দুনীতি দমন কমিশন মামলা করেছে।বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) কুষ্টিয়ায় ৫ জনের নামে দুনীতি দমন কমিশন পৃথক ৩টি মামলা করেছে। যার মধ্যে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সর্ম্পত্তি অর্জনের জন্য আব্দুল কুদ্দুস ও তার স্ত্রীর নামে ২টি মামলা হয়েছে।কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন অফিসের সাবেক হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুল কুদ্দুস ও তার স্ত্রী আছিয়া খাতুনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতি পূর্ণ সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখার অপরাধে মামলা করেছে দুদক। কুষ্টিয়া দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক নাছরুল্লাহ হোসাইন বাদী হয়ে এ মামলাটি করেন। আব্দুল কুদ্দুসের নামে মামলা নং-৪ ও তার স্ত্রীর নামে মামলা নং-৩ তাং-১৯.১১.২০২০খ্রিঃ। ধারা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬ (২), ২৭ (১) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারা।কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন অফিসের হিসাব রক্ষক আবদুল কুদ্দুসের চাকরি জীবনের শুরুটা মালি হিসেবে। ১৯৮০ সালে কুষ্টিয়া শহরের নিশান মোড়ের সিভিল সার্জন পরিচালিত ম্যালেরিয়া স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রথম যোগদান। ডিউটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বাগান ও গাছ পরিচর্যা। কয়েক বছরের মধ্যেই অফিস সহকারী হিসেবে পদোন্নতি। যোগদান করেন কুষ্টিয়া নার্সিং ইন্সটিটিউটে। ১৯৯০ সালের দিকে আরেক দফা পদোন্নতি পেয়ে কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন অফিসের হিসাবরক্ষক হন আবদুল কুদ্দুস। এর পরের গল্পটা আলাদীনের আশ্চর্য প্রদীপের দৈত্যের গল্পকেও যেন হার মানায়। মালী থেকে হিসাবরক্ষক আবদুল কুদ্দুস কয়েক বছরের ব্যবধানে বনে গেছেন অঢেল বিত্তবৈভবের মালিক।কুষ্টিয়া শহরে তার রয়েছে দুটি বহুতল ভবন ও একটি একতলা ভবন। শহরের অভিজাত এলাকায় আছে ফ্ল্যাট। মার্কেটে আছে একাধিক দোকান ও ফ্লোর। ঢাকায় রয়েছে দুটি ফ্ল্যাট। স্ত্রী-সন্তান থাকেন ঢাকার ফ্ল্যাটে। চলাফেরা করেন দামি প্রাইভেট কারে। নিজে থাকেন কুষ্টিয়ার বাড়িতে। এছাড়া একাধিক ব্যাংকে রয়েছে তার কোটি টাকা। অনুসন্ধানে জানা গেছে, কুষ্টিয়া শহরের কোর্টপাড়ার স্যার ইকবাল রোডের ২৬/১ নম্বর বাড়িটি দেড় কোটি টাকা দিয়ে কিনেছেন আবদুল কুদ্দুস। চার কাঠা জমির ওপর অবস্থিত ‘প্রবাসী কেয়া’ নামে আলিশান বাড়িটি তার স্ত্রীর নামে রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। চার তলাবিশিষ্ট বাড়িটিতে রয়েছে ৮টি ফ্যাট। এগুলো থেকে প্রতি মাসে ভাড়া পান প্রায় ৫০ হাজার টাকা। কুষ্টিয়া শহরের কোর্টপাড়া এলাকায় পাঁচ কাঠা জমির ওপর আবদুল কুদ্দুস নিজেই নির্মাণ করেছেন পাঁচ তলাবিশিষ্ট আলিশান বাড়ি। ২/২ শহীদ আবদুল হামিদ রোডের ‘শাওলী ভিলা’ নামে বাড়িটি নির্মাণ করেন তিনি। বর্তমানে বাড়ির সব তলাতেই ছাত্রী হোস্টেল। প্রতিটি রুমে তিন থেকে চারটি বেড বসিয়ে কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছে ভাড়া দেয়া হয়েছে।শহরের চৌড়হাস এলাকায় আবদুল কুদ্দুস এক তলাবিশিষ্ট আরও একটি বাড়ি নির্মাণ করেছেন। উপজেলা পরিষদের সামনে ওসিম-কাসিম সড়কের ওই বাড়িটি চার কাঠা জমির ওপর নির্মিত। বাড়িতে রয়েছেন তিনজন ভাড়াটিয়া। বাড়ি দেখভালের জন্য আলমগীর হোসেন নামে স্থানীয় এক যুবক নিয়োজিত আছেন। শহরের সবচেয়ে অভিজাত মার্কেট হিসেবে পরিচিত পরিমল টাওয়ারের প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় ৩টি দোকান ও চার তলার অর্ধেক ফ্লোর কিনেছেন আবদুল কুদ্দুস।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পরিমল টাওয়ারের এক কর্মকর্তা জানান, ফ্লোর ও দোকানগুলো স্ত্রী ও তার নিজের নামে কেনা হয়েছে। ওই টাওয়ারের ব্যবসায়ীরা জানান, প্রথম তলার একটি দোকান ৫০ লাখ ও দোতলার দোকান ৩০ লাখ টাকায় কেনা হয়েছে।এছাড়াও শহরের অভিজাত এলাকায় ফ্ল্যাটসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় জমি রয়েছে তার। কুষ্টিয়ার একাধিক ব্যাংকে রয়েছে তার কোটি টাকা।রাজধানী ঢাকায়ও আবদুল কুদ্দুসের সম্পদ রয়েছে। ঢাকার মিরপুর-১০ ও শ্যামলীতে দুটি ফ্যাট আছে তার। মিরপুরের ফ্ল্যাটে থাকেন স্ত্রী ও সন্তানরা। ঢাকায় স্ত্রী ও সন্তানদের চলাচলের জন্য কিনে দিয়েছেন প্রাইভেট কার।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply