Friday , 19 April 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ দু’জনকে গুলি করে হত্যা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে নাটঘর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের পুত্র ও চেয়ারম্যান সম্ভাব্য পদপ্রার্থী এরশাদুল হক দু’জন নিহত হয়েছে।
গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার নাটঘর ইউনিয়নের কুড়িঘর গ্রামের নান্দুরা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, উপজেলার নাটঘর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের ছেলে ও আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী এরশাদুল হক এরশাদ (৩৮) ও মোটরসাইকেল চালক বাদল সরকার (২৬)।
নিহত বাদল কুড়িঘর গ্রামের নান্দুরা এলাকার সন্তোষ সরকারের ছেলে। দু-জন নিহতের পর আজকে সকাল থেকে পুরো গ্রামে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
নিহতরা প্রতিপক্ষের ঘরবাড়িতে হামলাও চলাচ্ছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নাটঘর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বার্ধক্যজনিত কারণে প্রায় সময় অসুস্থ থাকেন। তাই আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আবুল কাশেমের স্থলে তার ছেলে এরশাদুল হক এরশাদ এবার চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। গতকাল শুক্রবার রাতে ইউনিয়নের কুড়িঘর গ্রামের বাজার এলাকায় ওয়াজ মাহফিল চলছিল। সেই মাহফিলে এরশাদুল ও বাদলসহ কয়েকজন মোটরসাইকেল যোগে যান। ওয়াজ মাহফিলে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে সকলের নিকট দোয়া চান ও দশ হাজার টাকা অর্থ-সহায়তা করেন এরশাদ। সেখান থেকে ফেরার পথে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন বাদল এবং তার পেছনে বসা ছিলেন এরশাদ।
পথিমধ্যে দুর্বৃত্তরা এরশাদের মোটরসাইকেল এর গতিরোধ করে গুলি ছুড়লে সামনে চালকের আসনে বসা বাদল সরকার প্রথমে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। এসময় এরশাদকে লক্ষ্য করে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। গুরুতর আহত এরশাদকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসক তাকে ঢাকায় পাঠান। তবে ঢাকায় পৌঁছানোর আগেই পথিমধ্যে এরশাদও মারা যান।
তবে গত দু-তিন বছর পূর্বে গোষ্ঠীগত দাঙ্গায় এরশাদের চাচাতো ভাই মারা যান। ওই ঘটনায় এরশাদের লোকজন প্রতিপক্ষের বাড়িঘর লুটপাট করে ও মামলা দেয়। এরশাদুল হক বাদী হয়ে ২০১৯ সালে ২রা এপ্রিল নবীনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। কুড়িঘর গ্রামের আব্দুল মালেককে প্রধান আসামী করে ২০ জনের বিরুদ্ধে এই মামলা দেয়া হয়। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর ওই মামলার আসামিরা কিছুদিন আগে এলাকায় এলে তাদের আটক করে পুলিশে দেয়া হয়। পূর্বের এই বিরোধের জেরে গত রাতের ঘটনার সূত্রপাত হতে পারে বলে দাবি করছে নিহতের পরিবার।
ছেলের এই নৃশংস হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করে নাটঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম জানান, শুক্রবার রাতে স্থানীয় কুড়িঘর বাজারের পাশে ওয়াজ মাহফিলে গিয়েছিল এরশাদ ও বাদলসহ কয়েকজন। সেখান থেকে মোটরসাইকেলে করে তারা বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে দুর্বৃত্তরা এরশাদ ও বাদলকে লক্ষ করে গুলি করে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই বাদল মারা যান। গুরুতর আহত এরশাদকে সংকটাপন্ন অবস্থায় ঢাকায় নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বাদলের পর এরশাদও ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা গেছেন। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন ও আসল খুনিদের আটক করতে চেষ্টা চলছে। এখন পর্যন্ত সোহাগ নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে গ্রেফতারকৃত সোহাগের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য দেয়া যাবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply