Wednesday , 24 April 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
শিশুকে ওষুধ দিন বয়স ও ওজন অনুযায়ী

শিশুকে ওষুধ দিন বয়স ও ওজন অনুযায়ী

অধ্যাপক ডা. মো. খালেদ নূর, বিভাগীয় প্রধান, শিশুরোগ বিভাগ, কেয়ার মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল

অনেকে প্রায়ই বলে থাকেন, ‘জ্বর হলে প্যারাসিটামল ওষুধ খাই, কিন্তু তেমন কাজ হয় না।’ এটা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ঘটে শিশুদের জ্বরের বেলায়, সঠিক মাত্রায় প্যারাসিটামল না প্রয়োগ করার কারণে।

জ্বর হলে প্যারাসিটামল গ্রুপের ওষুধ সেবন করতে হবে—এটা সবাই জানলেও এই ওষুধ সেবনের সঠিক মাত্রা সম্পর্কে কিন্তু অনেকেই অবগত নন। তাই ওষুধ খেলেও মাত্রা বা ডোজ কমবেশি হওয়ার কারণে জ্বর তো কমেই না, বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হয়।

ওষুধের সঠিক মাত্রা

জ্বরের জন্য ওষুধের ডোজ বা মাত্রা দিতে হবে রোগীর বয়স ও ওজন অনুযায়ী। শিশুদের ক্ষেত্রে এটা ওজন অনুযায়ী প্রযোজ্য। সিরাপ, ট্যাবলেট, সাপোজিটরি—যাই হোক না কেন, সবই পড়বে এই নিয়মের মধ্যে। যেমন :

শিশুদের ক্ষেত্রে : শিশুদের ক্ষেত্রে ৫০-৫৫ মিলিগ্রাম প্যারাসিটামলজাতীয় সিরাপ শরীরের প্রতি কেজি ওজন হিসেবে যা আসবে তাকে তিন থেকে চার ভাগে ভাগ করে খাওয়াতে হবে। ধরুন, কোনো শিশুর ওজন ১০ কেজি। তখন দিনের ২৪ ঘণ্টায় ওষুধের মাত্রা হবে ১০ী৫০=৫০০ বা ৫৫০ মিলিগ্রাম।

মনে রাখতে হবে, এক চামচ সমান ১২৫ মিলিগ্রাম। সে হিসাবে দিনে চারবার খাওয়ালে ছয় ঘণ্টা পর পর এক চামচ করে সিরাপ খাওয়াতে হবে। আর যদি দিনে তিনবার বা আট ঘণ্টা পর পর ওষুধ খাওয়াতে হয় তাহলে দেড় চামচ করে দিতে হবে। এভাবে শিশুর ওজন যত বেশি বা কম হবে, ঠিক ওষুধও সেভাবে কম বা বেশি মাত্রায় দিতে হবে।

মনে রাখার জন্য বলা যেতে পারে, জ্বরে আক্রান্ত প্রতি আট কেজি ওজনের শিশুকে এক চামচ করে প্যারাসিটামল সিরাপ খেতে দিন। অর্থাৎ শিশুর ওজন আট কেজি হলে তাকে এক চামচ করে দিনে তিন থেকে চারবার প্যারাসিটামল সিরাপ খাওয়ান। আর যদি ওজন চার কেজি হয়, তবে আধা চামচ করে দিন। এভাবে ওজন অনুযায়ী সঠিক মাত্রায় সিরাপ দিন। কমবেশি হলে তেমন কাজ হবে না।

বয়স্কদের ক্ষেত্রে : পূর্ণবয়স্করা দুটি করে ৫০০ মিলিগ্রাম প্যারাসিটামলজাতীয় ট্যাবলেট (অর্থাৎ ১ গ্রাম) দিনে তিনবার খেতে পারবে। অন্যান্য জ্বরের ক্ষেত্রে দিনে সর্বোচ্চ ৪ গ্রাম ট্যাবলেট হলেও ডেঙ্গু জ্বরের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩ গ্রাম পর্যন্ত খাওয়া যেতে পারে।

সাপোজিটরির ক্ষেত্রে

কারো জ্বরের মাত্রা খুব বেশি হলে বা তীব্র হলে, ওষুধ খেতে না পারলে তাকে পায়ুপথে প্যারাসিটামল গ্রুপের সাপোজিটরি ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়। বিশেষ করে শিশুর জ্বর ১০২ ডিগ্রি পার হয়ে ১০৩ ডিগ্রিতে গেলেই দ্রুত সাপোজিটরি দিতে হবে। রেকটাম দিয়ে শোষণ বেশি হয় বলে তখন সাপোজিটরি দিলে দ্রুত জ্বর কমে। আমাদের দেশে ৬০ মি.গ্রা., ১২৫ মি.গ্রা., ২৫০ মি.গ্রা. ও ৫০০ মি. গ্রাম সাপোজিটরি পাওয়া যায়। এই সাপোজিটরিও প্যারাসিটামলের মতো বয়স ও ওজন অনুযায়ী সঠিক মাত্রায় দিতে হবে। যেমন :

❏ ছয় মাস থেকে দুই বছর বয়সী শিশুদের ১২৫ মি.গ্রা. মাত্রার প্যারাসিটামল সাপোজিটরি পায়ুপথে দিতে হবে।

❏ দুই বছর থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত শিশুদের ২৫০ মি.গ্রা. মাত্রার সাপোজিটরি দিতে হবে।

❏ ছয় বছর থেকে বেশি বয়সীদের ২৫০-৫০০ মি.গ্রা. মাত্রার সাপোজিটরি দিতে হবে। অর্থাৎ পূর্ণবয়স্করা ৫০০ মিলিগ্রামের মতো সাপোজিটরি নিতে পারবেন।

❏ দিনে দুই থেকে তিনবার সাপোজিটরি দেওয়া যেতে পারে।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply