Friday , 19 April 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ দিতে চ্যালেঞ্জ প্রধানমন্ত্রীর
--ফাইল ছবি

সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ দিতে চ্যালেঞ্জ প্রধানমন্ত্রীর

অনলাইন ডেস্ক:

বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের বিরুদ্ধে তোলা দুর্নীতির অভিযোগের তথ্য-প্রমাণ হাজির করার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে কুইক রেন্টালসহ বিভিন্ন দুর্নীতির বিষয়ে গণফোরামের সদস্য মোকাব্বির খানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনার (স্পিকার) মাধ্যমে আমি আমার প্রশ্নকর্তাকে চ্যালেঞ্জ করছি কোথায়, কখন, কতটুকু দুর্নীতি হয়েছে সেই কথাটা তাঁকে এখানে (সংসদে) স্পষ্ট বলতে হবে। তার জবাব আমি এখানে দেব।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এর আগে কোনো সরকারি বড় প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করতে পারেনি কেউ। এটা আওয়ামী লীগ সরকারই করতে পেরেছে। একটি কথা আমি এখানে স্পষ্ট বলতে চাই, ওয়ার্ল্ড ব্যাংকও পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ করেছিল। সেখানে কি কোনো দুর্নীতি হয়েছিল? তারা প্রমাণ করতে পারেনি। এটা শুধু আমার কথা নয়। কানাডার ফেডারেল কোর্টে যে মামলা হয় সেই মামলার রায়ে বলা হয়েছে, সব অভিযোগ মিথ্যা। সবই ভুয়া।’

বিএনপি-জামায়াতের আমলে বিদ্যুতের উৎপাদন হ্রাস করা হয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষ বিদ্যুৎ পেত না। দিনের পর দিন বিদ্যুতের জন্য হাহাকার ছিল। ইন্ডাস্ট্রিগুলো চলতে পারত না। গ্যাসের জন্য হাহাকার ছিল। আমরা এসে এসব সমস্যার সমাধান করি। সে অনুযায়ী আমরা ২৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছি, এরপর যাঁরা বেশি বলবেন তাঁদের বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া হবে।’

আওয়ামী লীগ সরকারকে উত্খাতের মতো কোনো শক্তি এখনো বাংলাদেশে তৈরি হয়নি বলেও অধিবেশনে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী মিলিটারি ডিক্টেটরের পকেট থেকে আওয়ামী লীগের জন্ম হয়নি। আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছে এ দেশের মাটি ও মানুষের কাছ থেকে। কাজেই আওয়ামী লীগের শিকড় অনেক দূর পর্যন্ত আছে। আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া, জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়াসহ অনেকেই চেষ্টা করছেন আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে, কিন্তু পারেননি। পারবেনও না। আওয়ামী লীগ টিকে আছে, থাকবে।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, একাত্তর সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেভাবে এ দেশের মানুষের ওপর অত্যাচার করেছিল, ঠিক সেইভাবে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত অত্যাচার-নির্যাতন চলেছে। বিএনপি-জামায়াত জোট ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, ব্রিটিশ হাইকমিশনারের ওপর হামলাসহ দেশব্যাপী নাশকতা চালিয়েছে। এরপর এক কোটি ২০ লাখ ভুয়া ভোটার তৈরির মাধ্যমে তারা আবারও ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিলে। জনগণ তা প্রতিহত করেছিল। তিনি বলেন, বিএনপির চরম দুঃশাসনের কারণে এক-এগারো এসেছিল।

সরকারি দলের সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আরো কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘যারা মজুদদারি, কালোবাজারি এবং যারা এলসি খোলা নিয়ে দুইনম্বরি করবে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং নেব। প্রয়োজনে আমরা আরো কঠোর ব্যবস্থা নেব।’

একই প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম থেকে জানতে পারছি যে বিশ্বব্যাপী খাদ্যের দারুণ অভাব দেখা দেবে; এ জন্য আমরা শুরু থেকেই সবাইকে আহ্বান করছি এক ইঞ্চি অনাবাদি জমি যেন না থাকে। ফসল, ফলমূল তরিতরকারি, শাক-সবজি যে যা পারুক উৎপাদন করেন। গরু, ছাগল, ভেড়া, হাঁস, মুরগি, কবুতর, কোয়েল—যে যা পারেন লালন-পালন করেন। আমাদের খাদ্যের চাহিদা যেন আমরা নিজেরা নিজেদের আওতায় রাখতে পারি, সে ব্যবস্থাটা নিয়েছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘এই আহ্বান করার পরে কিন্তু এখন আসলে সমগ্র দেশেই একটা উৎসব দেখা দিচ্ছে। আমাদের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান এবং দেশের সব মানুষই কিন্তু কিছু কিছু উৎপাদন করেছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটা খুব দুর্ভাগ্যের বিষয় যে রমজান মাসে কিংবা বিভিন্ন চাহিদার মাসে যেকোনোভাবেই হোক জিনিসের দাম বাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। পৃথিবীর অন্য দেশে উৎসব পার্বণে সব সময় তারা দাম কমায়। আর আমাদের দেশে দেখি উল্টো। শুধু তা-ই নয়, অনেক সময় তারা পণ্য আমদানি করতে একটু ঢিলেমি করে, জিনিসের দাম বাড়িয়ে চাহিদা বাড়িয়ে তারপর তারা ব্যবসা করতে চায়। এটা আসলে অমানবিক।’

ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে জাতীয় পার্টির সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারীর সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে মানুষ যখন চাষ করে তখন অর্থকরী ফসলের দিকে দৃষ্টি দেয়। এ কথা ঠিক যে আমাদের অনেক জমি অনাবাদি পড়ে আছে। যেটা চাষ হচ্ছে, সেটা বন্ধ করার থেকে যেটা অনাবাদি পড়ে আছে সেটা আবাদের চেষ্টা করতে হবে।’

আওয়ামী লীগের আহসানুল ইসলাম টিটোর প্রশ্নের লিখিত উত্তরে প্রধানমন্ত্রী জানান, সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগে মূল্যস্ফীতির প্রভাব হ্রাস পাওয়ায় জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। বর্তমানে ডিজেল বিক্রিতে বিপিসির দৈনিক প্রায় তিন কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে, যা সরকারকে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস পেলে তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে লোকসান পূরণ করে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সূত্র: কালের কন্ঠ অনলাইন

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply