এক মাস আগেই আইপিএলের শিরোপা জিতে বীরের বেশে দেশে ফিরেছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। এবারের ঈদের আনন্দটাও বেড়ে যাওয়ার কথা ছিল বহুগুণে। কিন্তু ঈদের দিন সকালে হঠাৎ করেই অপ্রত্যাশিত এক ঘটনার কারণে বিষাদ ঘনিয়েছে মুস্তাফিজের পরিবারে। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন ‘ফিজের’ চাচাতো ভাই মোতাহার হোসেন। বেদনাদায়ক এ ঘটনার পর ঈদের খুশি মিলিয়ে গেছে মুস্তাফিজের পরিবার থেকে।
ঈদের দিন সকালে অপ্রত্যাশিত এই মৃত্যুর ফলে শুধু মুস্তাফিজই নন, তাঁর পরিবার, আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, এমনকি তেঁতুলিয়া গ্রাম ও কালীগঞ্জের তারালি ইউনিয়নের সব মানুষকেই ব্যথিত করে তুলেছে। ঈদ যেন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে মুস্তাফিজের পরিবার থেকে। তার বদলে পরিবারে নেমেছে বুকফাটা আর্তনাদ, বিষাদের কালো ছায়া।
বৃহস্পতিবার সকালে মুস্তাফিজের বাড়ির সবাই ঈদ জামাতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কেউ গোসল করছেন। কেউ নতুন কাপড় পরছেন। কেউ জায়নামাজ হাতে নিয়ে অপেক্ষা করছেন। মুস্তাফিজকে ঘিরে সবাই মেতে উঠছিলেন অনাবিল আনন্দে। হেঁসেলে চলছিল ঈদের নানা খাবার-দাবার তৈরির কাজ।
আনন্দঘন এই পরিবেশের মধ্যে হঠাৎ করেই যে মর্মান্তিক এক দুর্ঘটনা ঘটবে, তা কেউই ভাবতে পারেননি। মুস্তাফিজের নতুন দোতলা ভবনের ওপরে পানি তোলার জন্য বসানো একটি বৈদ্যুতিক মোটরে গোলমাল দেখা দেয়। চাচাতো ভাই মোতাহার হোসেন নিজেই সেটি সারাতে যান। কিন্তু কেবলে সংযোগ দিতে গিয়েই হঠাৎ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। দ্রুত তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় নলতা হাসপাতালে। কিন্তু ডাক্তারের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন এক পুত্রসন্তানের বাবা ২৮ বছরের মোতাহার হোসেন।
বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো এ ঘটনায় মুহূর্তেই পাল্টে গেছে বাড়ির চেহারা। বিষাদে ঢাকা পড়েছে মোতাহার পরিবার। কেঁদে উঠেছেন মুস্তাফিজ, তাঁর ভাই মোকলেছুর, বাবা আবুল কাসেমসহ পরিবারের সব সদস্য। মোতাহারের নিথর মরদেহ যখন বাড়িতে পৌঁছাল, ততক্ষণে ঈদ জামাতে মিলিত হওয়া মুসল্লিরাও মুস্তাফিজদের বাড়ি এসে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। ম্লান হয়ে গেছে ঈদ আনন্দ।