আরিফুর সাদনানঃ ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা কমে আসলেও কমেনি আতংক। তাই মশার কয়েলের চাহিদা আগের থেকে অনেক বেড়েছে। আর এমন সুযোগ কাজে লাগিয়ে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী জমজমাট ব্যবসা করে যাচ্ছে। র্যাব-৪ এর ভেজালবিরোধী নিয়মিত অভিযানে রাজধানি ঢাকার সাভার থানাধীন দক্ষিণ রাজাসন এলাকার এক নকল মশার কয়েল তৈরীর ফ্যাক্টরী থেকে এমন চিত্রই উঠে এসেছে। দেখা গেছে, বিভিন্ন নামের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মশার কয়েল অথচ শুধুমাত্র মোড়কীকরণেই পার্থক্য, ভিতরে বাকি সব কয়েলেই এক। আর কার্যকারিতার কথা বলাই বাহুল্য।
র্যাব-৪ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সাজেদুল ইসলাম সজল এর নেতৃত্বে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিজাম উদ্দিন আহম্মেদ ও বিএসটিআই প্রতিনিধিদের নিয়ে ‘রোকসানা ক্যামিকেল ওয়ার্কস’ নামক নকল মশার কয়েল তৈরীর ফ্যাক্টরীতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেখানে দেখা যায় লাইসেন্সবিহীন ফ্যাক্টরী পরিচালনা করা হচ্ছে এবং ভেজাল মশার কয়েল তৈরী ও ত্রিশটি নামে যেমন- তুলসী পাতা এক্সট্রা জাম্মু মশাল কয়েল, ডলফিন ম্যাক্স জাম্মু মশার কয়েল, আরএকে মসফ্লাই মশার কয়েল, বিগ ওয়ান ডাবল একশন মশাল কয়েল, ইগলু ম্যাক্স হিট জম্মু মশাল কয়েল, সুপার জাম্মু সুগন্ধীযুক্ত মশার কয়েল, অয়ন সুপার ডুপার মশার কয়েল, ডাংগাল নাইট কিলার মশার কয়েল, বিগ ওয়ান চাইনা ব্লাক মশার কয়েল, এসটিটিস এন্ট্রি ডেংগু হিট জাম্মু মশার কয়েল, রেট সিগনাল মশার কয়েল, রেম্বু ম্যাক্স মশার কয়েল, টাফ সুপার মশার কয়েল, লিজন হাই কোয়ালিটি ব্লাক মশার কয়েল, থ্রী স্টার মশার কয়েল, নিম পাতা মশার কয়েল, পাইলট মশার কয়েল, বিডি বস মশার কয়েল, কিরন মালা নিম এক্সট্রা পাওয়ার মশার কয়েল, বউ মা মশার কয়েল, পরিমা হাই কোয়ালিটি ব্লাক মশার কয়েল, এক্সট্রা স্বর্ণলতা কিং এক্সট্রা পাওয়ার জাম্মু মশার কয়েল, টাইগার মহা জাম্মু মশার কয়েল, একশন মশার কয়েল, সুইট নাইট মশার কয়েল, এক্সট্রা জনতা মশার কয়েল, লয়েল কিং মশার কয়েল, ক্যাপ্টেন জম মশার কয়েল, জেবরা কিং ভায়ুলেট মশার কয়েল এবং মক্কা সুপার কিং মেগা মশার কয়েল উৎপাদন ও বাজারজাত করা হচ্ছে। এ অপরাধে প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম (৩৩), জেলা-গাইবান্ধা, কারিগর মোঃ রুবেল খান (২৮), জেলা-গোপালগঞ্জ, ডিস্ট্রিবিউটর মিজানুর রহমান (৪৪), জেলা-ঝালকাঠি, ও শেখ ফরিদ (২৫), জেলা-ফেনী, এ চারজনের প্রত্যেককে একমাসের কারাদন্ড প্রদান করা হয় এবং প্রতিষ্ঠানটির মালিক পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এ সময় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনাকালে প্রতিষ্ঠান থেকে দুই লক্ষ পিস ভেজাল মশার কয়েল, দুই হাজার কেজি মশার কয়েল তৈরীর বিভিন্ন কাঁচামাল ও প্রায় চল্লিশ হাজার পিস বিভিন্ন ব্রান্ডের খালি প্যাকেট জব্দ ও ধ্বংস করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি লাইসেন্স ও নিবন্ধন ছাড়াই দীর্ঘ দিন যাবৎ বিপজ্জনক ভেজাল মশার কয়েল উৎপাদন, সরবরাহ ও বিপণন করে আসছে। এমনকি তাদের নিকট মাননিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বা ল্যাব নেই।
উপরোক্ত বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।