সকালবেলা অনলাইনঃ ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান এবং নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের বক্তব্য প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভয় পেলে এ অভিযানে আমি নামতাম না। আমি যখন নেমেছি, তখন সে কি করে, কোন দলের সেটি আমার কাছে বিবেচ্য বিষয় নয়। মঙ্গলবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সম্প্রতি আজারবাইজান সফর নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
বিএনপিকে দুর্নীতির খনি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে দুর্নীতির দুয়ার খুলে দিয়েছিল জিয়াউর রহমান। তার হাতে গড় দল, সেখানে আপনারা দেখেন প্রত্যেকের বিরুদ্ধে মামলা তো আছেই। হত্যা, খুন, দুর্নীতি এমন ধরনের কোন কাজ নেই, যা তারা করেনি। সেই দলের নেতা যিনি চেয়ারপারসন দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামি কারাগারে। আরেকজন যাকে ভারপ্রাপ্ত করা হলো, সে দুর্নীতিগ্রস্ত এবং মামলায় দেশান্তর। তাদের মুখে এতো কথা কোথা থেকে আসে, কোন সাহসে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের এক নেতা (রাশেদ খান মেনন) হয়তো কিছু কথা বলেছেন। কারণ, তার মনে তো একটা দুঃখ হতেই পারে। তিনি জেনে হোক, না জেনে হোক এক ক্লাবের চেয়ারম্যান করা হয়েছে এলাকার এমপি হিসেবে। স্বাভাবিকভাবেই কিছু তথ্য এসেছে। যখন কিছু তথ্য এসেছে, তিনি কিছু কথা বলেছেন। তিনি ভুলে গেছেন তিনিও নির্বাচন করে জয়ী হয়ে এসেছেন। নির্বাচনের প্রশ্ন তুললে তার নির্বাচিত হওয়াটাও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যায়। কাজেই সেটা তিনি তখন বুঝে বলেছেন, নাকি না বুঝে বলেছেন সেটা আমি জানি না।
‘জনগণ যদি আমাদের ভোটই না দিত, আর জনসমর্থন যদি আমাদের পক্ষে না থাকতো, তাহলে তো যেভাবে ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ সালে খালেদা জিয়া ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছিল, যার বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করেছি, দেশবাসী আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল। দেশবাসী খালেদা জিয়াকে পদত্যাগে বাধ্য করেছিল। তারা সে ধরনের আন্দোলন গড়ে তুলতে পারল না কেন? এদেশের সব ব্যবসায়ী সম্প্রদায়, সব শ্রেণি-পেশার মানুষ, এমনকি সব সরকারি প্রতিষ্ঠান প্রত্যেকে যেভাবে আমাদের সমর্থন দিয়েছে, এটা বাংলাদেশের জন্য একটা অভূতপূর্ণ ঘটনা’- বলেন প্রধানমন্ত্রী।
‘বাংলাদেশে সব থেকে বেশি সংবাদপত্র। কয়েকশ সংবাদপত্র। একসময় বাংলাদেশে একটাই চ্যানেল ছিল। আমি তো সবকিছু ওপেন করে দিলাম। ৩২টির মতো চ্যানেল চালু। কোনো একটি চ্যানেল থেকে এ বিষয়ে কোনো একটি নিউজ দিতে পারলেন না। এর জবাব কি আপনারা জাতির কাছে দিতে পারবেন। পারবেন না’- বলেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, মানুষ যখন কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়ায়, সে মনে করে- আর কেউ জানবে না। কিন্তু ধরা কোনো না কোনোভাবে পড়ে যেতেই হয়। এটা হলো বাস্তবতা। আমরা চাচ্ছি, দেশটা শান্তিপূর্ণভাবে চলুক। দেশের উন্নতি হোক। দিন-রাত পরিশ্রম করি দেশের মানুষের শান্তি, জীবনমান যেন উন্নত হয়।
দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত এমন ১০০ জনের নাম আপনি দিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনকে। এ রকম আর কতজনের তালিকা আপনার হাতে আছে- এমন এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কতজনের তালিকা আছে, সেটা কেন আমি এখন বলব। তবে এতটুকু বলতে পারি, কোনো এক পত্রিকার সম্পাদক, কোনো এক ব্যাংকের চেয়ারম্যানকে ফোন করে বলেছেন- কিছু একটা টাকা চায়, সেটা যদি না দেয়া হয় তাহলে এমন লেখা লিখবে যে, তার জীবনটাই ধ্বংস হয়ে যাবে। সেটা বের হোক তারপর জানবেন। ব্যাংকের এমডি ফোন করে বলে দিয়েছেন কত দিতে হবে। না দিলে নিউজ হয়ে যাবে। এটা রেকর্ড আছে।