যশোর প্রতিনিধি: যশোর-বেনাপোল সড়কের সংস্কার কাজের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে। টেন্ডারের ঘোষণা অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সংস্কার কাজ শেষ না হওয়ায় সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষ চলতি বছরের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সময় বাড়িয়েছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের সাথে যোগাযোগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটির সংস্কার কাজের ধীরগতির কারণে প্রতিনিয়ত যানজট আর পণ্য পরিবহন ব্যাহত হওয়ায় অনেকটা বিপাকে পড়েছেন এই রুটের চলাচলকারীরা। যদিও সওজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ডিসেম্বর নয়, চলতি বছরের জুনের মধ্যেই শেষ করা হবে বহুল প্রতিক্ষিত এ সড়কের সংস্কার কাজ।
সূত্রে জানা যায়, দুটি প্যাকেজে কাজ চলছে এই সড়কের। যশোর শহরের দড়াটানা থেকে বেনাপোল বন্দরের বাংলাদেশ অংশের নোম্যান্স ল্যান্ড পর্যন্ত ৩৮ কিলোমিটারের মহাসড়কটি নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২৮ কোটি টাকা। দুই লেনের এ মহাসড়কের প্রশস্ত হবে সর্বোচ্চ ৩৪ ফুট। গাছ থাকার কারণে কোথাও কোথাও তা কম হবে বলে সিদ্ধান্ত রয়েছে।
২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে শুরু হয় যশোর-বেনাপোল সড়কের সংস্কার কাজ। কিন্তু এতোদিন শেষ করতে পারেনি সড়কটির সংস্কার ও উন্নয়নের কাজ। অথচ বিদায়ী বছরের ডিসেম্বর মাসেই সংস্কার কাজ শেষ করার কথা ছিলো কার্যাদেশের ঘোষণা অনুযায়ী।
কিন্তু সড়কের দুই পাশে শতবর্ষী গাছ কাটা নিয়ে পরিবেশবিদ ও স্থানীয়রা পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার কারণে সড়ক সংস্কার কাজ কিছুটা বিলম্বিত হয়।
তবে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কার্যাদেশ দেয়া হলেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সময়মতো কাজ শুরু করতে পারেনি বলে অভিযোগ ওঠে। তারা প্রায় একমাস দেরিতে ওই বছরের নভেম্বর মাসে কাজ শুরু করে। তারপরও সংস্কার কাজে কিছুটা ধীরগতি লক্ষ্য করা যায়।
তবে যশোরের সড়ক ও জনপথ বিভাগ নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম মুয়াজ্জেন হোসেন জানান, সংস্কার কাজের ধীরগতির কথা আসলে সঠিক নয়। বরং বলা যায় দ্রুতগতিতেই কাজ চলছে।
তিনি বলেন, সড়কটির উন্নয়নের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে অনেক আগেই উদ্যোগ নেয়া হলেও দুই পাশের শতবর্ষী গাছের ইস্যুতে টেন্ডার ঘোষণা করতে কিছুটা সময় ব্যয় হয়েছে। সড়কটি সংস্কারের জন্য দায়িত্ব পায় মোজাহার কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দুই বছরের কার্যাদেশের মেয়াদ ধরে ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কাজ শুরু করার অনুমতি দেয়া হয়। অথচ মাত্র দেড় বছরের মধ্যেই সড়কের ৭০ শতাংশ কাজ শেষ করা হয়েছে। বাকি কাজ চলমান রয়েছে।
যেহেতু বছরের শুরুতে আমরা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কাজের ওয়ার্ক ওয়ার্ডার দিতে পারেনি সে কারণে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে সেপ্টেম্বর কাজের সময় আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে। তবে নির্ধারিত সময়ের আগেই জুন-জুলাইয়ের মধ্যে সড়কের শতভাগ কাজ শেষ হবে বলে তিনি দাবি করেন।
এদিকে সংস্কার কাজের ধীরগতির কারণে সড়ক দিয়ে চলাচলকারীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা লক্ষ্য করা গেছে। পাশাপাশি প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। বিশেষ করে বাংলাদেশ ও ভারতের ব্যবসায়ীদের তাদের পণ্য আনা-নেয়া ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি বেড়েছে ভোগান্তি। এজন্য সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা নেতারা।
এ বিষয়ে বেনাপোল সিএন্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, যশোর-বেনাপোল সড়ক সংস্কারের দাবি আমাদের প্রাণের দাবি। আমাদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হলেও প্রত্যাশাপূরণ হয়নি। সড়কটি চার লেনে নির্মাণের প্রাথমিক পরিকল্পনা থাকলেও তা হচ্ছে না। তিনি বলেন, এই সড়কের সবচেয়ে বড় অন্তরায় হয়ে দেখা দিয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ গাছগুলো। এসব গাছ রেখে সড়ক নির্মাণ করায় মানুষের প্রতিনিয়ত ঝুঁকি বাড়ছে। এজন্য খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব গাছ অপসারণ করে সড়ক পুনঃনির্মাণের দাবি জানান তিনি।
Home » দৈনিক সকালবেলা » বিভাগীয় সংবাদ » দেশগ্রাম » যশোর-বেনাপোল সড়কের সংস্কার কাজের মেয়াদ বৃদ্ধি’ জনভোগান্তি