অনলাইন ডেস্ক:
অবিলম্বে ঢাকা শহরকে ধুলাবালি মুক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়রকে চিঠি দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আরিফুল হক রোকন। চিঠিতে ঢাকার রাস্তার দুই ধারে, ফুটপাথের দুইপাশে, রাস্তার মধ্যবর্তী অংশে ডিভাইডারে ফলজ/বনজ/ঔষধী/বেশি পরিমাণ অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারে এবং শিকড় মাটির গভীরে গিয়ে মাটিকে শক্ত করে আটকে ধরে রাখতে পারে এমন গাছ লাগাতে বলা হয়েছে।
ঢাকার দুই মেয়রকে এই দুটি কাজ করার জন্য আজ বৃহস্পতিবার ই-মেইলে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, আপনি জেনে থাকবেন যে, ধুলাবালি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সবার ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক সমস্যা না করলেও দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা করতে পারে। সাধারণত যেসব ধুলা খালি চোখে দেখা যায় না, সেগুলো সাধারণত বেশি ক্ষতিকর। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন যে, ধুলা সহজেই ফুসফুসে ঢুকতে পারে ও ক্ষতি করে। এ থেকে বাঁচার উপায় মেনে চললে ফুসফুসের ক্ষতির আশঙ্কা থাকে না। ধুলার ধরণ, আকার-আয়তন, ঘনত্বের মাত্রা ও কত দিন ধুলায় বসবাসের ওপর নির্ভর করে ক্ষতির মাত্রা। সামান্য পরিমাণ ধুলাও তাৎক্ষণিক সমস্যা করতে পারে যেমন চোখ জ্বালাপোড়া, কাশি, হাঁচি, অ্যালার্জিক রাইনাইটিস, হাঁপানি ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। আবার যাদের আগে থেকেই ফুসফুসের সমস্যা আছে, তাদের অল্পতেই সমস্যা জটিল করে তুলতে পারে।
চিঠিতে বলা হয়, ‘করোনাভাইরাস রোগ অর্থাৎ কভিড-১৯’কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) মহামারী বলে ঘোষণা করেছে। তারা বলেছে, যারা এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হন, তারা সামান্য থেকে শুরু করে মাঝারি পরিমাণে বেশ কিছু শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত অসুখের মুখোমুখি হন। শ্বাসযন্ত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরণের জলকণা (ড্রপলেট) দ্বারা এই রোগ একজন সংক্রামিত ব্যক্তি থেকে অপর ব্যক্তিতে ছড়ায়, এটা কাশি বা হাঁচি বা লালা যে কোনো কিছুর মাধ্যমেই ঘটতে পারে।
চিঠিতে আরো বলা হয়, ঢাকা শহরে বর্তমানে করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, দিন দিন তার সাথে মৃত্যুর হারটাও উর্ধ্বমূখী। এতো ঘনবসতিপূর্ণ একটা শহরে ধুলাবালির কারণে স্বস্থিতে হাঁটা যায় না। করোনা রোগ নিয়ে এ শহরের মানুষ গুলো এই ধূলাবালিতেই থুতু, ক্বফ ফেলছে আরো ফেলছে ব্যবহার্য মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস। এসব জিনিষ ধূলাবালির সাথে মিশে করোনা সংক্রমণের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে। মানুষ এখন এসব কারণে ঘরে বসে থেকেও আক্রান্ত হচ্ছে।
চিঠিতে বলা হয়, ঢাকা শহরে যে পরিমান ইট কাঠের দালান হচ্ছে সেই সাথে কিন্তু গাছপালার পরিমাণ বাড়ছে না। আপাতদৃষ্টিতে কেউই বৃক্ষরোপণ বা বৃক্ষ না কেটে সংরক্ষণের উদ্যোগ নিচ্ছে না।ফলে রাস্তার ধুলাবালি আটকাচ্ছে না। গাছের শিকড় মাটিকে শক্ত করে আটকে রাখে। মাটির ক্ষয়রোধ ও উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি করে। ঢাকার অধিকাংশ রাস্তার দুইপাশে, ফুটপাতের পাশে ও রাস্তার মধ্যবর্তী অংশে পর্যাপ্ত পরিমান গাছপালা নেই। প্রতিটি ফুটপাতের পাশ ঘেঁষে যদি গাছ লাগানোর পদক্ষেপ সিটি কর্পোরেশনের তরফ থেকে নেয়া হতো, তবে বায়ু দূষণ থেকে নগরবাসী কিছুটা রক্ষা পেত’।
চিঠিতে বলা হয়, এ দুটি মহৎ কাজের কার্যকরী উদ্যোগের জন্য ঢাকাবাসী আপনাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকবে।