Sunday , 4 May 2025
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
অচলাবস্থা কাটেনি, কুয়েট খুললেও শ্রেণিকক্ষে ফেরেননি শিক্ষকরা
--ফাইল ছবি

অচলাবস্থা কাটেনি, কুয়েট খুললেও শ্রেণিকক্ষে ফেরেননি শিক্ষকরা

অনলাইন ডেস্কঃ

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী দীর্ঘ আড়াই মাস পর খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হলেও অচলাবস্থা কাটেনি। শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে না ফেরায় রবিবার (৪ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ক্লাস হয়নি। নবনিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য পরিস্থিতি নিরসনের জন্য পৃথক পৃথকভাবে শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

শিক্ষক সমিতির নেতাদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী, ভিসিসহ শিক্ষকদের লাঞ্ছনাকারীদের বিচার চেয়ে এলেও তা কার্যকর হয়নি।

তাই সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ওই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নেননি। সোমবার সমিতির সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানিয়েছে, রবিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হযরত আলী তাঁর দপ্তরে আসেন। তিনি সকাল সাড়ে ১০টায় প্রশাসনিক ভবনের সভাকক্ষে শিক্ষক সমিতির সঙ্গে বৈঠকে বসেন।

এরপর পর্যায়ক্রমে তিনি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পৃথকভাবে আলোচনা করেন। বৈঠকের পর শিক্ষক সমিতি নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, তারা সোমবার সভা করে সিদ্ধান্ত জানাবেন।কুয়েটের শিক্ষকরা জানান, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে সংঘর্ষে কুয়েটের অনেক শিক্ষার্থী আহত হন। কয়েকজন শিক্ষকও তখন আহত হন।

তারপরও ওই দিন কিছু শিক্ষার্থী বিকেল থেকে পরদিন বিকেল পর্যন্ত কুয়েটের মেডিক্যাল সেন্টারে সদ্য বিদায়ি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। তারা বিদায়ি উপাচার্যসহ কয়েকজন শিক্ষককে মারধর, লাঞ্ছিত ও গালাগাল করেন। পরবর্তী দুই মাস আন্দোলন চলাকালে কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থী শিক্ষকদের নিয়ে কটূক্তি করেন। এ নিয়ে শিক্ষকরা চরম ক্ষুব্ধ। শিক্ষার্থীরা বলেছেন, তারা ইতিমধ্যে ভুলত্রুটির জন্য শিক্ষকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।
তাই তারা শিক্ষকদের সঙ্গে বিদ্বেষমূলক কোনো আচরণে যেতে চান না। প্রয়োজনে তারা আবারও শিক্ষকদের কাছে গিয়ে ক্ষমা চাইবেন।শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বিশৃঙ্খলাকারীসহ শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকরা একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার পূর্বের সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছেন। তবে নতুন উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে শিক্ষক সমিতির। আগামীকাল (সোমবার) সাধারণ সভায় নতুন সিদ্ধান্ত আসতে পারে।’

কুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘গত ১৮ এপ্রিল শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় শিক্ষক লাঞ্ছিতকারীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকরা ক্লাসে ফিরে যাবে না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা ক্লাসে যাননি। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাস-পরীক্ষা নেবেন না।’

কুয়েটের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আনিছুর রহমান ভূঞা বলেন, ‘সংকট নিরসনে আলোচনা চলছে। দ্রুত শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার জন্য শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গেও বৈঠক হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে।’

উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বহিরাগতদের সঙ্গে কুয়েট শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের পর ক্যাম্পাস জুড়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা ৬ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করে। পরে শিক্ষার্থীরা উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাছুদের অপসারনের এক দফা দাবিতে অনশন কর্মসূচি শুরু করে।

পরবর্তীতে উপাচার্য ও উপ উপাচার্যকে অপসারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। সর্বশেষ সংকট নিরসনে দুই দিন আগে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ হযরত আলীকে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply