Saturday , 3 May 2025
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
ধর্ম অবমাননা করে এখন ক্ষমাও চায় না ‘প্রথম আলো’
--সংগৃহীত ছবি

ধর্ম অবমাননা করে এখন ক্ষমাও চায় না ‘প্রথম আলো’

অনলাইন ডেস্কঃ

১৭ সেপ্টেম্বর, ২০০৭। প্রথম আলোর সাপ্তাহিক আয়োজন ‘আলপিনে’ আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে ব্যঙ্গ করে কার্টুন আঁকা হয়। ইসলাম বিদ্বেষ এবং নাস্তিক্যবাদ প্রচারই যে পত্রিকাটির উদ্দেশ্য তারা এ ধরনের কার্টুন ছেপেছিল ধর্মানুভূতিতে আঘাত দেওয়ার জন্য, পবিত্র ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করতে। পবিত্র ইসলাম বিদ্বেষ প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের একটি মজ্জাগত চরিত্র।

আর যখনই তারা সুযোগ পায় তখনই তারা ধর্মবিদ্বেষী তৎপরতায় লিপ্ত হয়। তেমনই একটি তৎপরতার প্রকাশ্য রূপ ছিল ‘আলপিনে’ হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে কটাক্ষ করে কার্টুন। এই কার্টুন ছাপার পর সারা দেশ প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠে। প্রথম আলো নিষিদ্ধের দাবি তোলা হয়।
সব দল, মত ও পথের মানুষ প্রথম আলোর ধৃষ্টতায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে। কিন্তু সেই সময় প্রথম আলোর ষড়যন্ত্রের ফসল ‘এক-এগারো’র সরকার ক্ষমতায় ছিল। তারা প্রথম আলোকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে ওঠে। আলেম সমাজের সাথে দেন-দরবার করে অনির্বাচিত সরকার।
সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রথম আলো ঘেরাওয়ের কর্মসূচি দেয়। শুধু তা-ই নয়, এই সময় প্রথম আলো নিষিদ্ধ একটি ‘জাতীয় দাবি’তে পরিণত হয়। আর এ রকম প্রেক্ষিতে প্রথম আলোর আস্থাভাজন কুশীলবরা এই পত্রিকাটিকে বাঁচানোর জন্য শুরু করে নানামুখী তৎপরতা। বায়তুল মোকাররমের খতিবের সাথে প্রথম আলোর সম্পাদক নাস্তিক মতিউর রহমানের সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে অনির্বাচিত সরকার। সেখানে গিয়ে মতিউর রহমান করজোড়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন।
শুধু ক্ষমা প্রার্থনা করেই ক্ষান্ত হয়নি। মতিউর রহমান নিজে বাঁচার জন্য কার্টুনিস্ট আরিফকে ধরিয়ে দেয়। তাকে চাকরিচ্যুত করে। দীর্ঘদিন তাকে কারাগারে থাকতে হয়। এই হলো মতিউর রহমানের চরিত্র। নিজের স্বার্থের জন্য মতি সব কিছুই করতে পারে। ২০০৭ সালে প্রথম আলো ক্ষমা চেয়েছিল, ভয়ও পেয়েছিল। কিন্তু এখন মানুষ ধর্মানুভূতিতে আঘাত, পবিত্র ইসলামকে অবমাননা করার জন্য প্রথম আলো ক্ষমাপ্রার্থনা পর্যন্ত করে না। ভয়ও পায় না। তারা এসবকে পাত্তাই দেয় না। ধর্ম বিদ্বেষ ছড়ানোর মিশনে এখন প্রথম আলো ‘খুল্লাম খুল্লা’ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কাউকে পরোয়া করে না অপসাংবাদিকতার মুখপত্র সংবাদপত্রটি।এবার প্রথম আলো যে ঈদ সংখ্যা প্রকাশ করেছে, তাতে পবিত্র ধর্মকে আবার অবমাননা করা হয়েছে। ঈদ সংখ্যার প্রচ্ছদে কুকুরের ছবি দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে জনমনে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। সব রাজনৈতিক দল প্রথম আলোর ঘৃণ্য এই অপতৎপরতার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়েছেন। জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রথম আলোকে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু প্রথম আলো যেন এখন অনেক ক্ষমতাবান। এসবকে তারা পাত্তা দিতে রাজি নয়।

কেন প্রথম আলো ক্ষমা চাইছে না বা এখনো কেন প্রথম আলো ক্ষমা চাইতে রাজি না। প্রথম আলোর পেছনে শক্তিই-বা কী? এটি খুঁজতে গেলে দেখা যাবে বর্তমানে যে উপদেষ্টামণ্ডলী রয়েছে, তার অধিকাংশই প্রথম আলোর নিয়ন্ত্রিত এবং প্রথম আলো একান্ত অনুগত। এই উপদেষ্টামণ্ডলীতে অন্তত আট জন সদস্য আছেন, যারা প্রথম আলোর নিয়মিত লেখক, যাদের একমাত্র পরিচয় হলো প্রথম আলোতে কলাম লেখা। এখন উপদেষ্টা পরিষদে গিয়ে তারা কেউ কেউ প্রথম আলোর এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন। এসব উপদেষ্টা থাকার কারণেই প্রথম আলো এত সাহস পাচ্ছে। এদের জন্যই পত্রিকাটি ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচার এবং মিথ্যাচার অব্যাহত রেখেছে।

এই উপদেষ্টামণ্ডলীর কারণেই বর্তমান সরকার ভুল পথে পরিচালিত হচ্ছে। নির্বাচন থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। প্রথম আলোর মতো ভারতীয় এজেন্ট এবং ভারতীয় সেবাদাস একটি অপসাংবাদিকতার মুখপত্র লালন-পালন ও পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এই ঘটনায় শুধু প্রথম আলোর ওপরেই যে ক্ষুব্ধ হচ্ছেন, তা নয়, এতে সরকারের ওপরও তারা ক্ষুব্ধ হচ্ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে যে নারী সংস্কার কমিশন গঠিত হয়েছে এবং তারা যে সুপারিশ দিয়েছে, সেই সুপারিশেও পবিত্র ইসলাম ধর্মকে আঘাত করা হয়েছে। আর এই সুপারিশ প্রণয়নের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে প্রথম আলো। শনিবার এই বিতর্কিত নারী সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাতিলের দাবিতে স্মরণকালের বৃহত্তম সভা করেছে হেফাজতে ইসলাম। আশা করা যায়, হেফাজতের এই সতর্ক বার্তা সরকার গ্রহণ করবে। দ্রুত ইসলামবিরোধী নারী সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাতিল করবে। প্রথম আলো, ডেইলি স্টারের মতো নাস্তিকতা প্রচারক গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে। মনে রাখতে হবে, এক-এগারোর অসমাপ্ত মিশন বাস্তবায়নের কাজে এখন প্রথম আলো ব্যস্ত। এ জন্যই তারা রাজনৈতিক বিভাজন সৃষ্টি করছে। ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করছে এবং বিরাজনীতিকরণ বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের ফাঁদ পাতছে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মনে করেন, দ্রুত এদের বিরুদ্ধে সরকারের দৃশ্যমান ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply