নারীদের ঋণের ক্ষেত্রে অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, ‘নারীদের সাংবিধানিক যে অধিকার রয়েছে, বাস্তবে তারা সেই অধিকার পাচ্ছেন না। নারীদের কিভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়, সে বিষয়ে আমাদের চেষ্টা করতে হবে।’
বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাজধানীর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ ব্যাংক আয়োজিত ব্যাংকার এসএমই নারী উদ্যোক্তার সমাবেশ, পণ্য প্রদর্শনী ও মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বর্তমানে ব্যাংক খাতে মোট ঋণের মাত্র ৬ শতাংশ নারীরা পাচ্ছেন জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘এটি মোটেও বাস্তবসম্মত নয়। তাদের জন্য কিভাবে ঋণ বৃদ্ধি করা যায়, সে বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে। একই সঙ্গে তাদের আর্থিক সচেতনতা বাড়াতে হবে।’
আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘আমরা নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ দেব, তবে তা শুধু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তহবিল বাড়িয়ে নয়।
কারণ, সেখান থেকে দিলে নতুন টাকা তৈরি করতে হয়। নারীদের ঋণ দিতে হবে ব্যাংকগুলোর নিজস্ব তহবিল থেকে, তাদের অধিকার বিবেচনায় রেখেই।’
এ সময় আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ‘দেশের মূল্যস্ফীতি কমছে। সরকারের চেষ্টা ও নীতির ধারাবাহিকতা থাকলে মূল্যস্ফীতি ৪ থেকে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা অসম্ভব কিছু হবে না।
দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল সাড়ে ১৪ শতাংশ। এখন তা সাড়ে ৮ শতাংশে নেমে এসেছে। খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ছিল সাড়ে ১২ শতাংশের বেশি, সেটি এখন ৯ শতাংশের একটু বেশিতে রয়েছে। আমি আশাবাদী, এটা আস্তে আস্তে আরো কমবে। আমরা যদি চেষ্টা করি, নীতির স্থিতিশীলতা থাকে, তাহলে ৪ থেকে ৫ শতাংশে মূল্যস্ফীতি নামিয়ে আনা অসম্ভব কিছু না এবং সেটিই হবে সবার জন্য গ্রহণযোগ্য সমাধান।
তিনি বলেন, ‘আমরা যদি একদিকে টাকা ছাপাই আর অন্যদিকে বলি মূল্যস্ফীতি কমে না কেন, তাহলে তো হবে না। আমাদের এ বিষয়ে কঠোর অবস্থানে থাকতে হবে। সেই জায়গা থেকে আমরা কাজ করছি। মূল্যস্ফীতি কমতে একটু সময় লাগছে। তবে আস্তে আস্তে সেটি কমে আসবে।’নারী উদ্যোক্তাদের অধিক অংশগ্রহণ ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ পণ্য প্রদর্শনী মেলা আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চার দিনব্যাপী এই মেলা চলবে ১১ মে পর্যন্ত। মেলায় বিভিন্ন জেলা থেকে ৬৮ জন নারী উদ্যোক্তা মেলায় পণ্য নিয়ে এসেছেন। এবারের মেলায় শেষ দিনে ছয়জন নারী উদ্যোক্তাকে সম্মাননা দেওয়া হবে।
এর আগে ২০১৪ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এ মেলা আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর করোনাসহ বিভিন্ন কারণে গত চার বছর এ আয়োজন বন্ধ ছিল।