Thursday , 8 May 2025
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
কুয়েটের ঢেউ বরিশালেও, একঘরে উপাচার্য
--সংগৃহীত ছবি

কুয়েটের ঢেউ বরিশালেও, একঘরে উপাচার্য

অনলাইন ডেস্কঃ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শূচিতা শরমিনের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে আগামী সোমবার থেকে একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিতে সংহতি প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটি অংশ।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করেন আন্দোলনকারীরা।

পরে ছাত্র-শিক্ষক সংহতি সমাবেশের ব্যানারে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক ও ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। এতে অংশগ্রহণ করেন ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহসিন উদ্দীন, কোস্টাল স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজ আশরাফুল হক, লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সিরাজিস সাদিক, বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মহসিনা হুসাইন, সমাজকর্ম বিভাগের মোস্তাকিম মিয়াসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শূচিতা শরমিনকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসেন জানান, ‘স্বৈরাচার উপাচার্যের পদত্যাগ চাই। আমাদের আগামী কর্মসূচি থাকবে উপাচার্য বাদে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন করা ও শনিবার সন্ধ্যায় মশাল মিছিল করা।

কোস্টাল স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির আন্দোলনকে দমানোর জন্য তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা স্বৈরাচারের শামিল। এ ছাড়া উপাচার্য অনেক শিক্ষকের পদোন্নতি ঝুলিয়ে রেখেছেন, যার কারণে শিক্ষকদের মাঝে অসন্তুষ্টি প্রকাশ পেয়েছে।

তিনি বলেন, ‘উপাচার্যের স্বৈরাচারী, অপেশাদার আচরণ, দুর্নীতি ও অদক্ষতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় দিন দিন চরম অধঃপতনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের সব যৌক্তিক দাবির সাথে আমরা একাত্মতা পোষণ করছি।’এর আগে গতকাল প্রশাসনিক ভবনে কলাপসিবল গেইটে তালা মেরে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। একদফা বাস্তবায়ন না হলে একাডেমিকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল দপ্তর শাটডাউনের ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা। উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি নিয়ে টানা পাঁচদিন আন্দোলন করে আসছেন আন্দোলনকারীরা।

শিক্ষার্থীরা জানান, উপাচার্যের পদত্যাগের আন্দোলন দমাতে বিভিন্ন হুমকি ও থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে, যা কখনোই কাম্য নয়। এর আগে যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলন করতে গেলে ১৪ ফেব্রুয়ারি নাম ও অজ্ঞাতসহ ৪২ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আমরা এখন উপাচার্যের পদত্যাগের একদফা আন্দোলন করছি।

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আশিক আহমেদ বলেন, উপাচার্য দায়িত্ব পালনের অধিকার হারিয়েছেন। তিনি দ্রুত পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে চলে যাবেন; তা না করলে কঠোর কর্মসূচি দিয়ে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।

গত ৩০ নভেম্বরও উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেন। তার আগে ২২ দফা আন্দোলন নিয়ে তারা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। পরবর্তীতে উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে এক মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে আন্দোলন থেকে সাময়িক বিরত হন একদল শিক্ষার্থী।

এছাড়া উপাচার্যের বাসভবনে প্রবেশ করে গেট ভাঙচুরের অভিযোগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ৪২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বরিশাল বন্দর থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলায় প্রধান সাক্ষী হিসাবে উপাচার্য ড. শূচিতা শরমিনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এসব ঘটনার পর অধ্যাপক ড. মো. মুহসিন উদ্দীনকে ‘পতিত সরকারের দোসর’ হিসেবে উল্লেখ করে সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য পদ থেকে ১৩ এপ্রিল অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এসব নিয়ে ক্যাম্পাসে উত্তজনা বিরাজ করছে।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply