Thursday , 9 May 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
গণপরিবহনকে দ্রুত বিদ্যুৎচালিত করা উচিত : প্রতিমন্ত্রী
--সংগৃহীত ছবি

গণপরিবহনকে দ্রুত বিদ্যুৎচালিত করা উচিত : প্রতিমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্কঃ

নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে ‘বাংলার টেসলা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। জাতীয় সংসদে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধের প্রশ্ন তোলেন সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। এর জবাবে বিদ্যুৎচালিত যানবাহনকে সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব উল্লেখ করে রাষ্ট্রীয়ভাবে এটাকে উৎসাহিত করার কথা বলেছেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, সব গণপরিবহনকে দ্রুত বিদ্যুৎচালিত করা উচিত।

শামীম ওসমান তাঁর সম্পূরক প্রশ্নে বলেন, ‘ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলছে। রিকশার মধ্যেও ব্যাটারি লাগানো হচ্ছে।

জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘কত দ্রুত ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমকে ইলেকট্রিকে নিয়ে যাওয়া যায়, তার জন্য সারা বিশ্বে এখন একটা রেভল্যুশন চলছে। তেলচালিত গাড়ির ইঞ্জিনের দক্ষতার মাত্রা হলো ২০ শতাংশ। অপরদিকে ইলেকট্রিক যন্ত্রের দক্ষতার মাত্রা হলো ৮০ শতাংশ। মূলত আমরা উৎসাহিত করি—বাজারে যত দ্রুত পারে ইলেকট্রিক গাড়ি আসুক।’ তিনি জানান, তেলচালিত বাহনে কোনো দূরত্বে যেতে যদি ১০০ টাকা লাগে, বিদ্যুৎচালিত যানে সেই দূরত্বে যেতে লাগবে ২০ টাকা।
বাংলাদেশে ৪০ লাখের ওপর যানবাহন আছে। যারা লেড ব্যাটারি ব্যবহার করে। এগুলো চার্জ করতে সাত-আট ঘণ্টা সময় লাগে। এগুলো যদি লিথিয়াম ব্যাটারি হয়, তাহলে লাগবে মাত্র আধাঘণ্টা।একই প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “বিদ্যুৎ বিভাগ আমরা ইলেকট্রিক গাড়ির ‘চার্জ স্টেশন’ বসানোর নীতিমালা করেছি। এ নীতিমালা করে যে কেউ চাইলে চার্জ স্টেশন করতে পারবেন।” তিনি বলেন, ‘এই ৪০ লাখ থ্রি হুইলারকে আমি বলি বাংলার টেসলা। নিজ হাতে তৈরি করছেন। আমাদের উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে কাজ করছেন। আমরা তাদের কোনো বাধা দিচ্ছি না। যান্ত্রিকভাবে এতে ত্রুটি থাকতে পারে। কিন্তু বিদ্যুৎ যেটা ব্যবহার করছে, তার রিটার্ন কিন্তু অনেক বেশি। এই ৪০ লাখ রিকশাচালক, যারা বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন। তারা অবশ্যই আয় করছেন। এ ক্ষেত্রে আমরা লেড ব্যাটারি থেকে তারা যেন লিথিয়াম ব্যাটারিতে চলে আসেন—এটা নিয়ে আমরা একটা প্রকল্প করছি। আমরা লেড ব্যাটারি নিয়ে তাদের লিথিয়াম ব্যাটারি দেব।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে যত পাবলিক পরিবহন (বাস) আছে, সেগুলো দ্রুততার সঙ্গে বিদ্যুতে নিয়ে আসা উচিত। খরচ কম। পরিবেশবান্ধব। বাংলাদেশের পরিবহন সেক্টর ১৮ শতাংশ কার্বন নিঃসরণ করে। তবে অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহারের বিষয়টি উদ্বেগের। আমরা এটা নিয়ে চিন্তিত। কোথাও অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহার হয় কি না, সে বিষয় কম্পানিগুলো নজরে রাখছে। বেশির ভাগই এখন অবৈধভাবে বিদ্যুৎ না নিয়ে মিটারের মাধ্যমে নিচ্ছে।’

আওয়ামী লীগের সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে গ্রিডভিত্তিক উৎপাদনক্ষমতা ২৬ হাজার ৫০৪ মেগাওয়াট। ক্যাপটিভ ও অফগ্রিড নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ উৎপাদনক্ষমতা ২৯ হাজার ৭২৭ মেগাওয়াট। ক্যাপটিভ ও অফগ্রিড নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ বর্তমানে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৯ হাজার ৭২৭ মেগাওয়াট। আর গ্রিডভিত্তিক উৎপাদনক্ষমতা ২৬ হাজার ৫০৪ মেগাওয়াট। এর মধ্যে প্রাকৃতিক গ্যাসভিত্তিক উৎপাদনক্ষমতা ১১ হাজার ৩৫০ মেগাওয়াট (৪৩ শতাংশ), ফার্নেস অয়েলভিত্তিক ছয় হাজার ৪৯২ মেগাওয়াট (২৪ শতাংশ), ডিজেলভিত্তিক ৮২৬ মেগাওয়াট (৩ শতাংশ), কয়লাভিত্তিক চার হাজার ৪৯১ মেগাওয়াট (১৭ শতাংশ), হাইড্রো ২৩০ মেগাওয়াট (১ শতাংশ), অনগ্রিড সৌরবিদ্যুৎ ৪৫৯ মেগাওয়াট (২ শতাংশ), বিদ্যুৎ আমদানি দুই দুই হাজার ৬৫৬ মেগাওয়াট (১০ শতাংশ)।

একই প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রাপ্যতা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়ে থাকে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে গ্রীষ্মকালে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদার বিপরীতে ১৯ এপ্রিল সর্বোচ্চ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১৫ হাজার ৬৪৮ মেগাওয়াট। শীতকালে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যাওয়ায় এ বছর শীতকালে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ উৎপাদন ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার মেগাওয়াটে নেমে আসে। আগামী গ্রীষ্মকালে বিদ্যুতের সম্ভাব্য চাহিদার পরিমাণ প্রায় ১৭ হাজার ৫০০ মেগাওয়াটে উন্নীত হবে।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply