Friday , 19 April 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
ইঁদুরের গর্তের ধানে আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন তাদের

ইঁদুরের গর্তের ধানে আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন তাদের

 লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা  উপজেলার ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে ঝরেপড়া ধান কুড়ানো ও ইঁদুরের গর্ত থেকে ধান বের করার কাজে ব্যস্ততায় দিন অতিবাহিত করছেন হতদরিদ্র পরিবারের নানা বয়েসী মানুষ ও শিশুরা। যাদের নিজস্ব জমি নেই কিংবা কোনো জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করেননি তারাই এসব ধান কুড়িয়ে তাদের শখ বা আশা পূরণ করে থাকেন।কারও হাতে খুন্তি-কোদাল, কারও হাতে ব্যাগ। সদ্য ফসল সাফ হওয়া ক্ষেতে অনুসন্ধিৎসু চোখ খুঁজে ফিরছে ইঁদুরের গর্ত। সেখানে ইঁদুরের জমানো ধানে ভাগ বসাচ্ছে তারা। ক্ষেতে পড়ে থাকা ধানের শিষের মালিকানাও তাদের। এ দৃশ্য গ্রামের পর গ্রাম জুড়ে। প্রতিদিনই ধান কুড়ানি শিশুরা দল বেঁধে ছুটে যায় ফসলের মাঠে। এমন এক দলের ব্যস্ত শিশু শরিফ ও সাজু। দূর থেকেই সতর্ক দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে আর ধানের শিষ তুলছে। যেন দম ফেলার ফুসরত নেই। তাদের সাড়া গায়ে লেগে আছে ছোপ ছোপ কাঁদামাটির দাগ, সেদিকে কে তাকায়! এমন চিত্র এখন ডাউয়াবাড়ীর বিস্তীর্ন মাঠ জুড়ে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সকাল হলে ছোট ছোট শিশুরা হাতে থালা, চালুন, খুন্তি, কোদাল ও ব্যাগ নিয়ে নেমে পড়ছে মাঠে।ইঁদুরের গর্ত খুড়ে বের করে আনছে তাদের মজুদ করা ধান। কেউ আবার পরিত্যক্ত ক্ষেতের নাড়ার সঙ্গে থাকা ধান কুড়াচ্ছে। সংগৃহীত এ ধান একসঙ্গে বিক্রি করে কেউ কিনবে নতুন জামা, কেউ নতুন বই। কেউবা আবার ধান বিক্রি করে সঙ্গে সঙ্গে ফেরিওয়ালার কাছ থেকে মিঠাই-মন্ডাসহ বাহারি খাদ্য কিংবা হরেক রকম সামগ্রী কিনছে।ধান কুড়ানি শিশুদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাঠের ধান কেটে নিয়ে যাওয়ার পর অনেক ধানের শিষ এমনিতেই পড়ে থাকে। সেগুলো কুড়ানো হয়। এছাড়া ইঁদুরের গর্ত খুঁড়লে পাওয়া যায় ধান। এক পর্যায় শিশু শরিফ জানায়, স্কুল বন্ধ থাকায় সকাল হলেই ধান কুড়াতে মাঠে চলে যাই। এই ধান কুড়িয়ে আমরা এক জায়গায় জমা করি। যখন পরিমাণে বেশি হবে তখন তা বিক্রি করব।কৃষক মিজান জানান,  সকাল হলেই ছোট ছোট শিশুরা মাঠে চলে আসে। আমাদের ধান কাটার পরে নাড়ার সাথে দুই এক গোছা ধান থাকলে সেগুলো তারা কুড়িয়ে নেয়। এছাড়া গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের বউ-ঝি এবং ছেলেমেয়েরা দল বেঁধে ধান কুড়িয়ে নিচ্ছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশিদ জানান, কৃষকরা ধান কাটার সময় দুই একাটা ধানের ছড়া ক্ষেতে পড়ে থাকে। ওই ধানের ছড়া এলাকার দরিদ্র শ্রেণির শিশুরা কুড়িয়ে নেয়। এছাড়া অনেক শিশুরা ক্ষেতে ইঁদুরের গর্তে হাত দেয়। এটা নিরাপদ নয়। গর্তে সাপ থাকতে পারে। তবে আধুনিক পদ্ধতিতে কৃষকরা ক্ষেতের ধান কাটলে মাঠে ধান পড়ে থাকবে না। এতে কৃষকরাও উপকৃত হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply