ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর। তিনি সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কারীদের অত্যন্ত সুকৌশলে পরিচালিত করেছেন। আড়ালে থেকে তিনিই সব কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করেছেন। কোটা আন্দোলনে উসকানি দিয়েছেন- এমন তথ্যের ভিত্তিতে নূরকে আটক করে পুলিশ।
সহিংসতার ঘটনার মামলায় রবিবার (২৮ জুলাই) পুলিশ নুরুল হক নূরকে আদালতে হাজির করলে আদালত আবারও তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। কোটা আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর বাড্ডা এলাকার একটি বাসা থেকে নুরুল হক নূরকে আটক করে ডিবি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, শুরু থেকেই এই কোটা আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলেন নূর। প্রত্যেক দিন রাতে ঢাকার রামপুরার একটি বাসায় কোটা সমন্বয়কারীদের সঙ্গে নূরের বৈঠক হয়েছে। কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ও সারজিস আলমের সঙ্গে নূরের মোবাইল ফোনে কোনো যোগাযোগ হয়নি। তবে অন্যদের সঙ্গে ফোনে তিনি কথা বলেছেন।
নাহিদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ না করার কারণ হিসেবে তিনি জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ এড়াতে দুজনের সঙ্গে তিনি ফোনে কথা বলেননি।
সূত্র জানায়, কোটা আন্দোলন শুধু শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থাকুক- এই জন্য তিনি আড়ালে থেকেই সমন্বয়কারীদের পরিচালনা করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি কোটা আন্দোলনের যে বিভিন্ন কর্মসূচি দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো সমন্বয়কারীরা তার সঙ্গে পরামর্শ করেই দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন। রাজনৈতিক দলগুলোর মতো কোনো কর্মসূচি না দিয়ে ভিন্ন আঙ্গিকে কর্মসূচি দিয়ে সবার নজর কাড়ানোর পরিকল্পনাও তাদের সফল হয়েছে বলে নূর দাবি করেছেন।
সূত্র জানায়, নূর শুরুতে এই আন্দোলনে কোনো দলকে সম্পৃক্ত না করার জন্য কোটা আন্দোলনের সমন্বয়কারীদের পরামর্শ দিয়েছিলেন। তিনি সমন্বয়কারীদের আশ্বাস দিয়েছিলেন যে আন্দোলন যখন সফলতার দ্বারপ্রান্তে যাবে, তখন তার দলসহ অন্যান্য বিরোধী দলকে সম্পৃক্ত করা হবে। এই দায়িত্ব তিনি নিজেই নিয়েছিলেন। এরই অংশ হিসেবে বিরোধী দলের এক ঊর্ধ্বতন নেতার উত্তরার বাসায় নূর গত ১৩ জুলাই রাতে বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকে সাম্প্রতিক সহিংসতায় গ্রেপ্তার হওয়া লক্ষ্মীপুর জেলার এক সাবেক এমপিও উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে মেট্রোরেলে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে তদন্ত শুরু করেছেন। তারা প্রাথমিক তদন্তে মেট্রোরেলে সহিংসতায় একটি স্বার্থান্বেষী মহলের যোগসাজশ পেয়েছেন। প্রয়োজনে তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করবেন তদন্তকারীরা।