Sunday , 13 October 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
৭ ডিসেম্বর শেরপুর মুক্ত দিবস

৭ ডিসেম্বর শেরপুর মুক্ত দিবস

শাহরিয়ার শাকির ,শেরপুর:
আজ ৭ডিসেম্বর শেরপুর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনেই শেরপুর অঞ্চলকে শক্রমুক্ত করা হয়। দেশের সীমান্তবর্তী এ জেলার প্রথম শক্র মুক্ত হয় ৪ডিসেম্বর ঝিনাইগাতী, ৬ ডিসেম্বর মুক্ত হয় শ্রীবরদী উপজেলা এলাকা। এর পরদিন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাত থেকে মুক্ত করা হয় শেরপুর অঞ্চলকে।
এইদিন মিত্রবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় সর্বাধিনায়ক প্রয়াত জগজিৎ সিং অরোরা শেরপুর শহীদ দারোগ আলী পৌর পার্ক মাঠে হেলিকপ্টার যোগে এসে নামেন এবং এক স্বতস্ফূর্ত সমাবেশে শেরপুরকে মুক্ত বলে ঘোষণা দেন। এসময় তিনি বাংলাদেশের জাতীয় পাতাকা উত্তোলন করেন।
মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ ৯ মাসে বর্তমান শেরপুর জেলার পাঁচটি উপজেলায় ৩০ থেকে ৪০টি খণ্ডযুদ্ধ হয়। এসব যুদ্ধে ৫৯ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এছাড়াও পাকিস্তান বাহিনীর নির্মমতার শিকার হয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে ১৮৭ জন, শেরপুর সদর উপজেলার সূর্যদী গ্রামে ৩৯ জন এবং ঝিনাইগাতী উপজেলার জগৎপুর গ্রামে ৪১ জন শহীদ হন।

তিনি আরও জানান, ১৯৭১ সালের ২৬ এপ্রিল পাকিস্তান বাহিনী শেরপুর শহরে প্রবেশ করে। বিভিন্নস্থানে পাক বাহিনী গড়ে তুলে ঘাঁটি। শেরপুর জেলা শহরের নয়ানী বাজারে টর্চার সেল ও ঝিনাইগাতী উপজেলার আহম্মদনগর উচ্চবিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ঘাঁটিতে চালায় অমানবিক অত্যাচার ও হত্যাযজ্ঞ।

অন্যদিকে স্বল্প সময়ের প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা আঘাত হানতে থাকে শত্রু শিবিরে। নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই শত্রু বাহিনীর পায়ের তলা থেকে মাটি সরতে থাকে। ১১ নং সেক্টর কমান্ডার কর্নেল তাহের বেশ কয়েকবার কামালপুর দুর্গে আক্রমণ চালান। ১১ দিন অবরোধ থাকার পর ৪ ডিসেম্বর এই ঘাঁটির পতন হয়। মোট ২২০ জন পাকিস্তানি সেনা এবং বিপুল সংখ্যক রেঞ্জার, মিলিশিয়া ও রাজাকার সদস্য বিপুল অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করে।

কামালপুর মুক্ত হওয়ার পর হানাদার বাহিনীর মনোবল ভেঙে পড়ে। অপরদিকে মুক্তিযোদ্ধারা মিত্র বাহিনীর সহায়তায় শেরপুরে হানাদার বাহিনীর বিভিন্ন ক্যাম্পে আক্রমণ চালায়। কামালপুর দুর্গ দখল হওয়ার প্রায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তান বাহিনীর সকল ক্যাম্প ধ্বংস হয়। তারা ৬ ডিসেম্বর রাতের আঁধারে ব্রহ্মপুত্র নদ পাড়ি দিয়ে জামালপুর পিটিআই ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়। এরপর ৭ ডিসেম্বর শত্রু মুক্ত হয়।
এদিকে এসব টর্চার সেলে পাক বাহিনীকে সহায়তা ও নির্দেশনার দায়িত্বে থাকা কূখ্যাত রাজাকার জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের ইতিমধ্যে মৃত্যুদন্ড কার্যকর হয়েছে।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply