Thursday , 2 May 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
আগামী প্রজন্মই ভবিষ্যতে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে-প্রধানমন্ত্রী
--ফাইল ছবি

আগামী প্রজন্মই ভবিষ্যতে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে-প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার ভবিষ্যতে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের একটি কাঠামো করে দিয়ে যাচ্ছে, যা ধরে আগামী প্রজন্ম দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। ২০৪১ সাল পর্যন্ত কী করণীয়, স্বাধীনতার শতবর্ষ উদযাপনকালে ২০৭১ সালে বাংলাদেশ কোথায় যাবে, ২১০০ সালে এই বদ্বীপ অঞ্চলের বাসিন্দারা যেন এক সুন্দর জীবন পেতে পারে তারও একটা পরিকল্পনা করে দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কারণ লক্ষ্য যদি স্থির থাকে তাহলে এগিয়ে চলা সম্ভব। সে জন্য যতটুকু আমরা করে দিয়ে যাচ্ছি, এতে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম যারাই আসবে, তারা যেন উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখতে পারে।’

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘এই কাঠামোটা সময়ের বিবর্তনে পরিবর্তনশীল। কারণ যুগের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়েই সবাইকে চলতে হবে। আধুনিক প্রযুক্তি, বিজ্ঞানের বিকাশ, নব নব উদ্ভাবন আমাদের নতুন করে পথ দেখাবে, যার সঙ্গে তাল মিলিয়েই চলতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২১ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। তিনি ৯ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে দেশের সর্বোচ্চ সম্মান স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২১-এ ভূষিত করেন। জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের মাঝে এই পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

যে আদর্শ নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল, পঁচাত্তরের পর তা হারিয়ে গেলেও তাঁর সরকার সেই আদর্শ আবার ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের নতুন প্রজন্ম এখন ইতিহাস জানতে চায়। শিকড়ের সন্ধান করে বিজয়ের কথাটা চিন্তা করে নিজেদের গর্বিত মনে করে—এই ধারা অব্যাহত থাকলে অবশ্যই বাংলাদেশ সারা বিশ্বে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে এবং জাতির পিতার স্বপ্ন আমরা পূরণ করতে সক্ষম হব।’

সরকার ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতিবছর স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে এই পুরস্কার প্রদান করে এলেও এবার করোনার কারণে বিলম্ব হয়। স্বাধীনতা পুরস্কারের ক্ষেত্রে পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে পাঁচ লাখ টাকা, ১৮ ক্যারেট মানের ৫০ গ্রাম স্বর্ণপদক, পদকের একটি রেপ্লিকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আয়োজিত পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মন্ত্রিপরিষদসচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম; এবং তিনিই পুরস্কার বিজয়ীদের সাইটেশনও পাঠ করেন।

যাঁরা পুরস্কার পেয়েছেন তাঁদের সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি এটাই চাই, আপনাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে, স্ব স্ব কর্মস্থানে মেধা ও মননের মাধ্যমে তারা যোগ্য একটা অবস্থান করে নেবে এবং দেশ ও জাতির জন্য তারা কিছু অবদান রেখে যাবে। আপনাদের কাছ থেকে তারা অন্তত উৎসাহ পাবে দেশের জন্য, জাতির জন্য বা জাতির কল্যাণের জন্য কাজ করতে।’

অদৃশ্য শত্রু করোনাভাইরাসে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে প্রধানমন্ত্রী পুনরায় বলেন, ‘দেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে সেটা যেন এগিয়ে যেতে পারে সে জন্য সবাই দোয়া করবেন এবং কাজও করবেন; এবং প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন এই দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।’

তাঁর দেশের আনাচকানাচে মণি-মুক্তার মতো অনেক প্রতিভা ছড়িয়ে রয়েছে; এবং এর খুব কমসংখ্যক লোককে এখন পর্যন্ত সম্মাননা জানানো সম্ভব হয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, আমাদের দেশটা যেন এগিয়ে যায় এবং দেশের মানুষ যাতে সব সময় মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারে। আর আজকে দেশের ৫০ বছর পূর্তিতে উন্নয়নশীল দেশের যে মর্যাদাটা পেয়েছি, সেটা ধরে রেখেই আমরা আরো সামনে এগিয়ে যেতে চাই।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘গত ৪০ বছরের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অন্তত এটুকু করতে পেরেছি যে বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার ৫০ বছর যখন আমরা উদযাপন করছি, তখনই এই স্বীকৃতিটা আমরা পেলাম।’

তাঁর সরকার যখনই দেশ পরিচালনায় এসেছে, তখনই মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে, যে সম্মান পঁচাত্তরের পর ভূলুণ্ঠিত হয়েছিল—বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘ইতিহাস থেকে জাতির পিতার নাম মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল। জাতির পিতাকে হত্যার পর এমন একটা সময় এসেছিল, কেউ মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দেওয়ার সাহস পেত না। মনে হতো, সেটা যেন বেশ অপরাধের ব্যাপার ছিল, অথচ জাতির পিতার ডাকে মুক্তিযুদ্ধে যাঁরা অংশ নিয়েছিলেন তাঁরা সব কিছু ফেলে চলে গিয়েছিলেন। তাঁদের পরিবার-পরিজনও নানাভাবে কষ্ট পেয়েছে। তাই তাঁরা বংশপরম্পরায় যেন সম্মানটা পান সে জন্য আমার ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায় আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

সূত্র : বাসস।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply