দেশের আটটি বিভাগের ৩৯টি জেলায় এক দিনে দেড় শ সেতু উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের সড়ক ভবনে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে নবনির্মিত সেতুগুলোর উদ্বোধন করেন তিনি। এটিই এক দিনে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক সেতু উদ্বোধনের ঘটনা। এর আগে গত বছরের ৭ নভেম্বর ও ২১ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী সারা দেশে ১০০টি সেতু ও ১০০টি সড়ক-মহাসড়ক উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ম্যুরাল উন্মোচন এবং সড়ক পরিবহন চত্বরে একটি গাছের চারাও রোপণ করেন। সেতুগুলোর মধ্যে ময়মনসিংহ বিভাগে ৪০টি, ঢাকায় ৩২টি, চট্টগ্রামে ২৭টি, রাজশাহীতে ২২টি, খুলনায় ১২টি, বরিশাল ও রংপুরে আটটি করে এবং সিলেটে একটি সেতু রয়েছে। একই অনুষ্ঠানে তিনি মহাসড়কের ১৪টি ওভারপাসও উদ্বোধন করেন, যা সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতে সহায়তা করবে। এ ছাড়া তিনি ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর দুটি বড় সেতু, কেওয়াটখালী সেতু এবং রহমতপুর সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
কেওয়াটখালী সেতু নির্মাণে ব্যয় হবে ৩২৬৩.৬৩ কোটি টাকা, যা দেশের বৃহত্তম স্টিল-আর্ক ব্রিজ হতে চলেছে এবং ১৪৭১ মিটার দীর্ঘ রহমতপুর সেতু নির্মাণে ৩৫৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে। আগামী ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে সেতুগুলোর নির্মাণকাজ শেষ হবে।১৪টি ওভারপাসের মধ্যে আটটি রাজশাহী বিভাগে এবং ছয়টি রংপুরে। প্রকল্পগুলো সড়ক ও জনপথ বিভাগের (আরএইচডি) অধীনে বাস্তবায়িত হয়েছে।
এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর মিরপুরে ১০৫.২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে পাঁচ বছরের জন্য স্বয়ংক্রিয় যানবাহন পরিদর্শন কেন্দ্র (ভিআইসি); তেজগাঁওয়ে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের একটি নবনির্মিত ভবন এবং ময়মনসিংহে বিআরটিসির বাস ডিপো ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র উদ্বোধন করেন। সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৬২ জন বা তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৭.০৮ কোটি টাকা প্রদান করে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ক্ষতিপূরণ কর্মসূচিও চালু করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু খাতের উন্নয়ন সমন্বিত ‘উন্নয়ন দর্পণ’ নামে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।
প্রধানমন্ত্রী তেজগাঁওস্থ সড়ক ভবনে পৌঁছলে কিছু শিশু নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে তাঁকে স্বাগত জানায়। অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেগম রওশন আরা মান্নান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
এ ছাড়া সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের (আরএইচডি) সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী এবং এর প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসানও বক্তব্য দেন। ঢাকার মিরপুর বিআরটিএ এবং ময়মনসিংহ সার্কিট হাউস মাঠ থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও সাধারণ মানুষ এই কর্মসূচিতে যুক্ত হন।