Friday , 26 April 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
কুমড়া বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সিরাজগঞ্জের কারিগররা
--প্রেরিত ছবি

কুমড়া বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সিরাজগঞ্জের কারিগররা

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
শীতের খাবারে ভিন্ন স্বাদ আনতে সবজিতে কুমড়া বড়ির প্রচলন দীর্ঘদিনের।
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী শীতের পিঠাপুলি খাবারের মত কুমড়া বড়িরও বেশ কদর
রয়েছে।
আর এই সুস্বাদু খাদ্য অতিযত্নসহকারে শৈল্পিকভাবে তৈরি করে আসছে
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ গ্রামের কুমড়া বড়ি তৈরির কারিগররা।
এই গ্রামের প্রায় ০৮টি পরিবার দীর্ঘ ১২-১৩ বছরে ধরে এই কুমড়া বড়ি তৈরির
কাজ করে আসছেন। শীতের শুরু থেকে চার মাস এই কুমড়া বড়ি তৈরির কাজে বেশ
ব্যস্ত সময় পার করেন তারা। তবে বাজারে ডালের দাম বৃদ্ধি ও করোনার কারণে এখন
বিক্রি কম। তবুও বসে নেই এই কুমড়া বড়ি তৈরির কারিগরেরা। এই কুমড়া বড়ি
স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলাতে।
শীতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বাজারে নানা ধরনের সবজির সমাহার দেখা যায়। গ্রাম
অঞ্চল গুলোতে খালবিল নদীনালার পানি এই সময়ে কমতে শুরু করে। এই সময়ে মাছের
সাথে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের সবজিও বাজারে ওঠে। আর এই সবজি আর
মাছ রান্নাতে ব্যবহার হয় কুমড়া বড়ি।
সময় আর কাজের ব্যস্ততার কারণে অনেকেই ইচ্ছা থাকলেও সুস্বাদু এই কুমড়া বড়ি
তৈরি করতে পারে না। তবে সেই চাহিদার অনেকাংশে পূরণ করছে তাড়াশ উপজেলার
নওগাঁ গ্রামের কুমড়া বড়ি তৈরির কারিগরেরা। বাজারে চাহিদা আর স্বাদের
ভিন্নতার জন্য ডাউল, মসলা আর চালকুমড়া দিয়ে তৈরি হয় এই খাদ্যসামগ্রী।
তবে বাজারে প্রচলিত কয়েক প্রকার ডাল থাকলেও নওগাঁর কারিগররা এ্যাংকার ও
খেসারি ডাল ব্যবহার করে এই কুমরা বড়ি তৈরিতে।
পরিবারের কাজের ফাঁকে কুমড়া বড়ি তৈরি করে বারতি উপর্জনের একটি অন্যতম
মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছেন এই গ্রামের নারীরা। নওগাঁ গ্রামের এই কুমড়া
বড়ি স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। তবে
এই বছরে করোনা আর ডাউলের দাম বৃদ্ধির কারণে খুব একটা লাভ হচ্ছে না তাদের।
তবু ঐতিহ্য আর বারতি লাভের আশায় বর্ষার শেষে অক্টোবর মাস থেকে শুরু করে ও
শীতের শেষে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত চলে এই কুমড়া বড়ি তৈরির কাজ তবে সারা
বছরি তারা কমবেশি করে তৈরি করে থাকে এই বড়ি।

ডাল ভেদে দাম নির্ধারণ হয় এই কুমড়া বড়ির। ৫৫ টাকা কেজি থেকে শুরু করে ৭০
টাকা কেজি পাইকারদের কাছে বিক্রি করে এই কুমড়াবড়ি। শীতের রৌদ্রে দুইদিন
শুকিয়ে বাজারজাতের জন্য প্রস্তত হয় এই খাদ্যপণ্যটি।
আগে পাটায় ডাল পিষতে সময় আর কষ্ট হতো অনেক। আর বর্তমানে মেশিনের
মাধ্যমে ডাল পিষে অতি সহজে এই কাজটি করছেন তারা। ডালের সাথে কুমড়া,
কালোজিরা আর বিভিন্ন প্রকারের মসলা মিশিয়ে শৈল্পিক হাতে তৈরি হচ্ছে এই
কুমড়াবড়ি। প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ কেজি ডাল ব্যবহার করছে কুমড়া বড়ি
তৈরির কাজে।
কুমড়া বড়ির কারিগর ও ব্যবসায়ী আলামিন বলেন, এই বছর ডালের দাম বৃদ্ধি হওয়ার
কারণে লাভের পরিমাণ কমে গেছে। তবু বসে না থেকে প্রতি বছরের মত এবারো
কুমড়া বড়ি তৈরির কাজ করছি। গ্রামের অনেক পরিবারের নারীরা এই কাজ করে
থাকেন। আমরা শুধু মালের যোগান দিই।
ব্যবসায়ী শফিকুল বলেন, আগের চেয়ে ডালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বস্তায় ৮০ থেকে
১০০টাকা। ৫০ কেজির ডালের বস্তার দাম ছিল ১৩৫০ টাকা আর বর্তমান দাম ১৮৫০
টাকা এতে আমাদের টাকার স্বল্পতার কারণে কাচা মাল যোগান দিতে হিমশিম
খেতে হচ্ছে। এদিকে বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্টানের কাছ থেকে বেশি সুদে ঋণ
নিয়েছি সব মিলে এখন ব্যবসার খুবই খারাপ অবস্থা । যদি সরকারী কোন
সুযোগ সুবিধা পাই তাহলে আমরা ব্যবসা ধরে রাখতে পারবো বলে তিনি
জানান।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) সিরাজগঞ্জ অঞ্চলের
মহাব্যবস্থাপক (ভারপ্রাপ্ত) লিটন চন্দ্র ঘোষ বলেন, সুদ মুক্ত ঋণের কোন সুযোগ
নেই । অন্য অন্য সম্প্রসারণের জন্য ১৭/১৮ বিষয় আমরা কাজ করি। এর মধ্যে একটা
ক্যাটাগরিতে স্বল্প সংখ্যক কিছু লোকদের অল্প কিছু টাকা ঋণ দিতে পারি তাও
১০% সুদে । আর চলতি মুলধন নারীদের ক্ষেত্রে ৯% সুদে। এরা আমাদের কাছে এসে
প্রশিক্ষণ নিতে পারে। আমরা উদ্যোক্তার প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। এখানে প্রশিক্ষণের
পরে একটা সার্টিফিকেট দেয়া হয়। এই সার্টিফিকেট শো করলে, আমাদের
কর্মসংস্থান ব্যাংকের সাথে চুক্তি আছে। সেই চুক্তি অনুযায়ী যুব ঋণ পাবে।
সেই ক্ষেত্রে এরা যুব ঋণের আওতাভুক্ত হতে পারবে।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply