Thursday , 2 May 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
গাজীপুরে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় হুমায়ূন আহমেদকে স্মরণ
--প্রেরিত ছবি

গাজীপুরে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় হুমায়ূন আহমেদকে স্মরণ

গাজীপুর প্রতিনিধি :
জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী ছিলো বুধবার। শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় নন্দনকানন নুহাশপল্লীতে লেখককে স্মরণ করলেন পরিবারের স্বজন ও শুভানুধ্যায়ীরা। পরিবারের সদস্য, কবি, লেখক, নাট্যজন ও ভক্তরা হলুদ পাঞ্জাবিতে হিমু সেজে এবং নীল শাড়ি পরে ফুল হাতে শ্রদ্ধা জানাতে ভিড় করেন লেখকের সমাধিস্থল নুহাশপল্লীর লিচুতলায়। সমাধিতে ফুল দিয়ে গভীর শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় স্মরণ করেন তাকে।
বুধবার (১৯ জুলাই) সকাল ১১টায় লেখকের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন, দুই পুত্র নিনিত ও নিষাদ লেখকের কবর জিয়ারত ও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় শুভানুধ্যায়ী ও ভক্তরা উপস্থিত ছিলেন। তার আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া, কোরআনখানি ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
হুমায়ূন আহমদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন বলেন, হুমায়ূন আহমেদ চলে গেছেন ১১ বছর। এখনো তার নাটক যদি ইউটিউব বা চ্যানেলে চলে আমরা শেষ না করে উঠতে পারি না। তবে খুবই দুঃখজনক হলেও সত্য, তার বহু নাটক, সিনেমা বিভিন্ন ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ও ইউটিউব চ্যানেলে কোনো রকম চুক্তিপত্র ছাড়াই চালানো হচ্ছে। তিনি বেঁচে থাকতেও অনুমতি নেয়নি, মৃত্যুর পর তার উত্তরাধিকারী কারো সঙ্গেও চুক্তি বা মৌখিক অনুমতি নেয়নি।
তিনি বলেন, দেশের এসব প্রথম সারির ওটিটি প্ল্যাটফর্ম কতৃপক্ষের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি। উকিল নোটিস পাঠিয়েছি। কিন্তু তারা এটি গ্রহণ করেননি। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। আমরা চাই তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। আপনাদের মাধ্যমে ওনাদের কাছে যেন আমাদের বার্তা পৌঁছে যায়।
মেহের আফরোজ শাওন আরো বলেন, হুমায়ূন আহমেদ যখন মারা যায় তখন আমার বড় ছেলের বয়স সাড়ে পাঁচ বছর এবং ছোট ছেলের বয়স দেড় বছর ছিল। তখন ওরা বাবার অভাব ও প্রয়োজন তেমন বুঝত না। তবে এখন ওরা বড় হয়েছে। বড় ছেলে এখন বুঝে হুমায়ূন আহমেদ নামটির কী ভার। মাঝেমধ্যে ও মন খারাপ করে বসে থাকে। ও বলে যদি বাবাকে পেতাম তাহলে অনেক গল্প করতাম, অনেক কিছু শিখতাম। এ জায়গাটা আমাকে থমকে দেয়। এটাই আমাকে সবচেয়ে বেশি কষ্ট দেয়।
লেখকের স্ত্রী বলেন, হুমায়ূন আহমেদ কতো যে চমৎকার সব গল্প করতেন। সন্ধ্যার পর যখন বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করতেন। সেই আড্ডার ছলে কতশত জ্ঞানের কথা বলতেন এখন তিনি না থাকায় আমাকে ভাবায়। হুমায়ুন আহমেদ তার বাবাকে স্মরণ করে তার এলাকায় শহিদ স্মৃতি বিদ্যাপিঠ প্রতিষ্ঠা করেন। সেই স্বপ্নের স্কুল থেকে এখন ভালো রেজাল্ট আসছে। তার স্বপ্ন ছিল এটি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় করার। সম্প্রতি আমরা স্কুল কতৃপক্ষের সঙ্গে মিটিং করেছি, সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে স্কুলটি কলেজে রুপান্তরের।  ইতোমধ্যে আমরা চারতলা একটি ভবন পেয়েছি খুব হুমায়ুন আহমেদের স্বপ্নের স্কুলটি কলেজে রুপান্তর হবে।
নুহাশপল্লীতে আগত ভক্তরা জানান, হুমায়ুন আহমদ ৫০ বছর ধরে বাঙালি পাঠক সমাজকে আনন্দ দিয়েছেন এবং বাংলাভাষা যতদিন থাকবে ততদিন হুমায়ূন আহমেদ পঠিত হবে। সৃষ্টিশীল কর্মের মাধ্যমে এদেশের সকল ভক্ত ও অনুরাগীদের হৃদয়ে কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদ চিরকাল বেঁচে থাকবেন।
২০১২ সালে ১৯ জুলাই মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তিনি নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে মারা যান। পরে তাকে গাজীপুর সদরে পিরুজালী তার স্বপ্নের নুহাশপল্লীর লিচুতলায় দাফন করা হয়।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply