Tuesday , 30 April 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
চাটখিল উপজেলায় সাপের কামড়ে এক যুবকের মৃত্যু
--প্রতীকী ছবি

চাটখিল উপজেলায় সাপের কামড়ে এক যুবকের মৃত্যু

নোয়াখালী প্রতিনিধি:

নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলায় সাপের কামড়ে নূপুর কর্মকার (৩২) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি সোনাইমুড়ী উপজেলা প্রশাসন কার্যালয়ে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে কর্মরত ছিলেন। মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাত ৩টায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ধারণা করা হচ্ছে কুমিল্লা নেওয়ার পথেই তিনি মারা যান। নিহত নূপুর কর্মকার উপজেলার বদলকোট ইউনিয়নের হরিকৃষ্ণপুর গ্রামের কর্মকার বাড়ির কুন্তল কর্মকারের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে মোবাইলে কথা বলা অবস্থায় নিজ বাড়ির আঙিনায় বিষধর সাপে কামড় দেয় নূপুরকে। তার বড় ভাই আহত অবস্থায় তাকে তাৎক্ষণিক উদ্ধার করে স্থানীয় চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিষাক্ত সাপের কামড়ের অ্যান্টিভেনম না থাকায় তারা জেলা সদর হাসপাতালে যোগাযোগ করে। কিন্তু সেখানেও সাপের কামড়ের এই অ্যান্টিভেনম প্রদানের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায় রোগীকে পার্শ্ববর্তী জেলা কুমিল্লায় নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাত ৩টায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।  নিহতের চাচাতো ভাই সমির কর্মকার সাংবাদিকদের বলেন, আমার ভাইকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়েছি কিন্তু সেখানে অ্যান্টিভেনম পাইনি। আমরা অ্যান্টিভেনম না পাওয়ায় সড়কেই তার মৃত্যু হয়। আমাদের চেষ্টায় কোনো ত্রুটি ছিল না কিন্তু অ্যান্টিভেনমের কাছে আমাদের পরাজিত হতে হলো।

নিহতের সহকর্মী মো. সাইফুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, নূপুর কর্মকার অত্যন্ত বিনয়ী ও কর্মনিষ্ঠ ছিলেন। গতকালও অফিস করেছেন, অথচ আজ দুনিয়াতে নেই! একজন সম্ভাবনাময় টগবগে জীবনের এখানেই পরিসমাপ্তি ঘটলো বিনা চিকিৎসায়! উপকূলীয় জেলা নোয়াখালীর কোথাও অ্যান্টিভেনম নেই। জেলা সদরেও নেই, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স তো বহুদূর! এসব বিষয় দেখার মতো কেউ কি নোয়াখালীতে আছে? নিহতের সহপাঠী মীর হোসাইন বলেন, নোয়াখালীর মতো এতো পুরাতন একটি জেলায় বিষধর সাপের ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। এটা মেনে নেওয়া যায় না। দ্রুততম সময়ে জেলায় এই ভ্যাকসিন প্রদানের ব্যবস্থা করার জন্য দাবি জানাচ্ছি।

চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. খন্দকার মোস্তাক আহমেদ অ্যান্টিভেনম না থাকার কথা স্বীকার করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, রোগীর অবস্থা দেখে দ্রুততম সময়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আমরা তাকে রেফার্ড করে দেই। নোয়াখালী জেলাতে বিষধর সাপের ভ্যাকসিন দেওয়ার যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায় তাকে কুমিল্লায় পাঠানো হয়। রোগী সাপের কামড়ের আকস্মিকতায় এ সময় মানসিক বিপর্যস্ত ছিলেন বলেও তিনি জানান। সোনাইমুড়ী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.  ইসমাইল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, নূপুর কর্মকার ২০২২ সাল থেকে আমার কার্যালয়ে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সাপের কামড়ে মারা যাওয়ার খবর মেনে নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে। নুপুর কর্মকার একজন অসম্ভব মেধাবী, বিনয়ী এবং দক্ষ সহকর্মী ছিলেন।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply