Thursday , 9 May 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
ঝিনাইদহে অভিনব কায়দায় চলছে মাদকের বিভিন্ন সিন্ডিকেট
--প্রতীকী ছবি

ঝিনাইদহে অভিনব কায়দায় চলছে মাদকের বিভিন্ন সিন্ডিকেট

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
ঝিনাইদহে হাত বাড়ালেই মিলছে সকল ধরনের মাদক। সংশ্লিষ্টদের মাদক নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ থাকলেও তারা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। যে কারণে মাদক জেলাজুড়ে প্রসার লাভ করছে।
মাদকের এমন প্রসারের কারণে স্কুল-কলেজে পড়ুয়া তরুণেরাও আশঙ্কাজনকভাবে মাদকের দিকে ঝুঁকছে। জেলায় গাঁজা থেকে শুরু করে ভারতীয় মদ, বাংলা মদ, ইয়াবা, ফেনসিডিলসহ নানা রকম মাদক কেনাবেচা হচ্ছে।
জান গেছে,আন্তর্জাতিক মাদক চোরাকারবারিদের সাথে যোগসাজশ করে এ জেলায় মাদক আমদানি করছে প্রভাবশালী ও ধনাঢ্য ব্যক্তিবর্গ।
এই মাদক কারবারিরা ইতিমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা, সরকারি আমলা, নামধারী সাংবাদিক ও প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের  বিভিন্ন সহায়তায় বেশ শক্তিশালী রূপ ধারণ করেছে বলে মনে করা হচ্ছে । এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে জেলায় অবৈধ মাদকের চালান আসছে। ছোট ব্যবসায়ীরা মাঝে মাঝে গ্রেপ্তার হলেও মাদকের শীর্ষ গডফাদাররা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
প্রতিদিন আনুমানিক হারে প্রায় এক হাজার ইয়াবা ও প্রায় ৫০০ বোতল ফেন্সিডিল বিক্রি হয় শুধুমাত্র সদর উপজেলাতেই। ভারতের খুব নিকটবর্তী হওয়ায় অল্প সময়ের ব্যবধানে ভারতীয় আমদানি নিষিদ্ধ ফেনসিডিল, ইয়াবা, গাঁজা জেলার মহেশপুর উপজেলা ও চুয়াডঙ্গা জেলা হয়ে খুব সহজে মাদকসেবীদের হাতে হাতে পৌঁছে দিচ্ছে শীর্ষ এই মাদক ব্যবসায়ীরা। এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের শীর্ষ মাদক গডফাদারদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলে টেকনাফ, কক্সবাজার, উখিয়া থেকে মাদকের চালান সরবরাহ করছে বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে।
ঢাকার একটি মাদক চক্রের সাথে যোগসাজশ করে কক্সবাজার থেকে ঝিনাইদহে মাদকের একটি বড় চালান নিয়ে আসে বিজিবি থেকে চাকরিচ্যুত একজন মাদক কারবারী। পুলিশের খাতায় ছদ্ম নামধারী এই ডেবিটবক্সের বিরুদ্ধে মাদকের চালান সরবরাহের বিষয়টি নজরদারীতে থাকলেও হাতেনাতে চালান ধরতে ব্যর্থ হচ্ছে  বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়।
ভারতীয় আমদানি নিষিদ্ধ ফেন্সিডিল জেলার মহেশপুর উপজেলা ও চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনা উপজেলা হয়ে ঝিনাইদহের গডফাদারদের নিকট এসে পৌঁছায়। এই চক্রের সাথে জেলার বিভিন্ন মাদক কারবারী জড়িত।
বিভিন্ন মাধ্যমে  আরো জানা যায়, একটি চক্র  সবাই দলগতভাবে মাদকের ব্যবসা পরিচালনা করত। মাদক ব্যবসার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে মনোমালিন্য হওয়ায় তারা প্রত্যেকে আলাদাভাবে আলাদা আলাদা স্থানে মাদকের স্পট তৈরি করে রমরমা অবৈধ মাদক ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই চক্রটি একাধিকবার পুলিশের কাছে আটক হলেও কাঙ্খিত মাদকদ্রব্য উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশের অভিযানের কারণে তারা অনেকটাই পর্দার আড়ালে থেকে সতর্কতা অবলম্বন করছে বলে জানা গেছে। যশোরের বেনাপোল থেকেও ঝিনাইদহে ইয়াবা ও গাঁজার চালান প্রবেশ করে বলে  জানা গেছে। এই চালান ঝিনাইদহের বিভিন্ন খুচরা মাদক ব্যবসায়ীদের নিকট সরবরাহ হয়ে  থাকে।
মাদকের এই চক্রগুলোর সাথে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক ও সরকারি আমলাদের যোগসাজশ আছে বলে ধারণা করা হয় । এসব ব্যক্তিদের মাদক সেবনের সাথে সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। তবে মাদক সেবনের পাশাপাশি তারা মাদক ব্যবসায় জড়িত  কিনা তা  স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বেরিয়ে আসবে।
জেলার সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা মাদকের ভয়াল থাবা থেকে নতুন প্রজন্মকে বাঁচাতে স্থানীয় প্রশাসনকে মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়াসহ জনসচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মাদ সোহেল রানা জানান, মাদকের বিরুদ্ধে আমরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছি। মাদকসেবী সন্দেহভাজন তরুণদের কর্মকাণ্ডের উপর তীক্ষ্ম নজর রাখা হচ্ছে। মাদক ব্যবসা ও মাদক সেবনের খবর পেলেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply