রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ডেইলি স্টার পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক মো. আশফাকুল হক ও তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকারের আটতলা ভবন থেকে পড়ে কিশোরী গৃহকর্মী প্রীতি ওরাং নিহত হয়। এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে মানববন্ধন করেছে সচেতন নাগরিক সমাজ নামের একটি সংগঠন। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে ডেইলি স্টার পত্রিকার সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে সচেতন নাগরিক সমাজের নেতা আবেদ হোসেন নিশাত বলেন, প্রীতি ওরাং-এর হত্যাকারীদের ফাঁসি কার্যকর যতদিন না হবে ততদিন পর্যন্ত আমরা আন্দোলনে রাজপথে থাকব।
সাংবাদিক হিসেবে একজন সচেতন মানুষ মো. আশফাকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকার। অথচ মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে দুইজন শিশু ও কিশোরি গৃহকর্মী তাদের ৮তলা ফ্ল্যাট থেকে পড়ে যাওয়ার ঘটনা আমাদেরকে বিস্মিত করেছে।
আমরা বিভিন্ন সূত্রে জেনেছি প্রীতি ওরাং-এর হত্যাকাণ্ডের বিচার কার্যক্রমকে প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে। এ কারণে বাধ্য হয়ে আমরা ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করেছি।
আমরা সচেতন নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে বলতে চাই- দেশের আপামর জনতা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের উচিত প্রীতির হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য মাঠে নামা। প্রীতি যে বয়সে স্কুলে যাওয়ার কথা, পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে বাধ্য হয়েছে ঢাকায় এসে বাড়িতে কাজের পথ বেছে নিয়েছে। অথচ তার ওপর অমানবিক নির্যাতন ও জোরপূর্বক ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে। সমাজের সাধারণ একজন নাগরিক হিসেবেও আমরা এটা মেনে নিতে পারি না।
সচেতন নাগরিক সমাজের আরেক নেতা ও প্রীতির ভাই নাইমুল ইসলাম নাঈম তার বক্তব্যে বলেন, অবিলম্বে প্রীতির হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে দ্রুততম সময়ের মধ্যে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তাদের ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে। সমাজের প্রভাবশালী ও অর্থকরীর মালিক হওয়ায় আশফাকুল ইসলাম বিচারকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। যে কোনো মূল্যে তাদের বিচার নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হবে। এসময় মানববন্ধনে ‘বিচার চাই বিচার চাই, আশফাকুল দম্পত্তির বিচার চাই’ বলে মুহুরমুহু স্লোগান দিতে দেখা যায়।
বক্তারা আরো বলেন, আমরা আশঙ্কা করছি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক মো. আশফাকুল ইসলাম ও তার স্ত্রীর তানিয়া খন্দকারের বিচার নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়। কারণ তারা সমাজে প্রভাবশালী শ্রেণির সদস্য। এ কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমাদের আবেদন তিনি যেন নিজ উদ্যোগে দায়িত্ব নিয়ে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করেন।
তাছাড়া প্রীতির হত্যাকারীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাবে। হত্যা মামলার আসামি দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এটি যেন আসলে আই ওয়াশ না হয় বলেও উল্লেখ করেন বক্তারা।