Tuesday , 30 April 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
হরিনাকুন্ডুর দৌলতপুর ইউনিয়নে মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড বাবদ টাকা নিলেন উদ্যোক্তা- জানেন না চেয়ারম্যান
--প্রেরিত ছবি

হরিনাকুন্ডুর দৌলতপুর ইউনিয়নে মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড বাবদ টাকা নিলেন উদ্যোক্তা- জানেন না চেয়ারম্যান

ঝিনাইদহ  প্রতিনিধি:
ঝিনাইদহ জেলার হরিনাকুন্ডু উপজেলার ৪নং দৌলতপুর ইউনিয়নের উদ্যোক্তার  বিরুদ্ধে মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড বাবদ অতিরিক্ত  টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।  এই অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুস্মিতা সাহা গত ২২শে আগস্ট দৌলতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদকে একটি কারণ দর্শনোর নোটিশ দেন। এই নোটিশের প্রেক্ষিতে গত ২৪ শে আগস্ট হরিনাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালযয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়, শুনানি কালে হরিনাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুস্মিতা সাহা ও হরিনাকুন্ডু উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফিরোজা মুন্সি সহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের উপস্থিতিতে এই শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এই শুনানি কালে দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা ইসরাইল হোসেন তার নিজের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে বলেন যে, লিমা ও হীরা নামে দুজনের কাছ থেকে সে যে টাকা  নিয়েছে তার সাথে চেয়ারম্যানের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই এবং চেয়ারম্যান বিষয়টা জানেন না। মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড হয়ে যাওয়ার পর ওই দুইজন খুশি হয়ে তাকে ৫০০ টাকা ও আরেক জন ৪০০টাকা দিয়েছে। তাছাড়া যে কোন ভাতার কার্ডের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হয় সেই অনলাইন আবেদনের একটি খরচ আছে সেই খরচ সাধারণত যারা আবেদন করতে আসে তাদের নিকট থেকে নেওয়া হয়। এই ঘটনায় ইসরাইল হোসেন  জানায় যে সে দেড় বছর যাবত এই ইউনিয়ন পরিষদে উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করছে কিন্তু সরকার থেকে তার কোন বেতন ভাতা দেওয়া হয়  না।
এই প্রসঙ্গে  ভুক্তভোগী  হিঙ্গেরপাড়া গ্রামের প্রবাসী লিটনের স্ত্রী হিরা খাতুন নামে একজনের সাথে কথা বললে তিন বলেন যে আমি মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ডের জন্য  ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ইসরাইল হোসেন আমাকে বলে যে ৫০০ টাকা  আর কাগজপত্র দিয়ে যান এগুলো করতে আমাদের খরচ আছে সেগুলো লাগবে। আমি এই মর্মে ইসরাইলের নিকট ৫০০ টাকা ও কাগজপত্র দিয়ে আসি, এই ব্যাপারে চেয়ারম্যান কিছুই জানেনা বলে আমি জানি। এই প্রসঙ্গে আমি চেয়ারম্যানকে কিছু জানাইনি  । সেক্ষেত্রে আমি মনে করি এই বিষয়ে চেয়ারম্যান অবগত নয়। হীরা খাতুনের সাথে কথা বলার সময় তাদের বাড়ির বেশ কয়েকজন নারী জানায় এই চেয়ারম্যান ভালো চেয়ারম্যান এর আগে মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড করতে গেলে ইউনিয়ন পরিষদে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হতো এখন তা দিতে হয় না।
দৌলতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমার  প্রতিপক্ষের উস্কানিতে একটি  কুচক্রী  মহল আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বীত হয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়ে উঠেছে। যা ২৪ তারিখের শুনানিতে আসল তথ্য  উঠে এসেছে। মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড দেওয়া হবে এই মর্মে আবেদন করার জন্য আমি ইউনিয়নে মাইকিং করে বলে দিয়েছি সবাইকে আবেদন করার জন্য । সেই সাথে এটাও বলেছি কাউকে কোন টাকা দিতে হবে না কিন্তু যারা উদ্যোক্তার কাছে টাকা দিয়েছে তারা আমাকে কিছুই জানায়নি যে উদ্যোক্তা টাকা চাচ্ছে। সরকার অসহায় দুস্থ নারীদের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা চালু করেছে। সেখানে উদ্যোক্তাকে ঘুষ দিয়ে একতলা বাড়ির মালিক প্রবাসীর স্ত্রী হীরা এই ভাতার কার্ড পেয়েছে। যিনি ঘুষ দিয়েছেন এবং যিনি ঘুষ নিয়েছে  দুজনই অপরাধী বলে আমি  মনে করি, তাই তাদের বিচার হওয়া উচিত  বলে আমি মনে করি। আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে উদ্যোক্তার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। আর যিনি ঘুষ দিয়ে এই পন্থা অবলম্বন করেছেন তার কি বিচার হবে তা আমি জানিনা।
এই প্রসঙ্গে হরিনাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুস্মিতা সাহা বলেন,  আমি চেয়ারম্যানকে কোন কারণ-দর্শানোর  নোটিশ দেইনি, আমি তাকে বলেছিলাম যে আপনার উদ্যোক্তা মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড দেওয়ার ব্যাপারে ঘুষ লেনদেনের সাথে জড়িত। গত ২৪ তারিখে সেই শুনানি হয়েছে তার প্রতিবেদন এখনো দেয়া হয়নি। প্রতিবেদন দেয়া হবে। তবে এই প্রসঙ্গে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে যে কথা উঠেছে চেয়ারম্যান এই ঘটনার সাথে জড়িত নয় বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply